ঈদের আগে যাত্রীবাহী বাস কীভাবে চলবে- তা স্পষ্ট করে শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার। তিনি সমকালকে বলেছেন, প্রজ্ঞাপন জারির পরই বলা যাবে কোন কোন রুটে, কীভাবে গণপরিবহন চলবে।

সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে চলমান লকডাউন ১৬ মে পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, ৬ মে থেকে শহরের ভেতরে বাস বা গণপরিবহন চলাচল করবে। কিন্তু এক জেলা থেকে আরেক জেলায় গণপরিবহন বন্ধ থাকবে। দুরপাল্লার বাস আগের মতোই বন্ধ থাকবে। বন্ধ থাকবে ট্রেন ও যাত্রীবাহী নৌযান।

করোনা সংক্রমণ রোধে গত ৫ এপ্রিল লকডাউন শুরুর দিন থেকেই গণপরিবহন বন্ধ রয়েছে। মাঝে কয়েকদিন মহানগর এলাকায় অর্ধেক আসন খালি রেখে বাস চলাচল করে। পরে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া 'সর্বাত্মক' লকডাউনে দূরপাল্লার সঙ্গে সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। এতে কর্মহীন হয়ে পড়া শ্রমিকরা গণপরিবহন চালুর দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। মঙ্গলবার তারা সারাদেশে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থানের ঘোষণা দিয়েছেন।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেছেন, সব খোলা রেখে শুধু গণপরিবহন বন্ধ রাখার অর্থ কী! আগেও সরকার আশ্বাস দিয়েছিল ২৯ এপ্রিলের পর গণপরিবহন চালু হবে। বাসে অর্ধেক সিট খালি রেখে স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী পরিবহন করায় করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি কম। বরং বাস বন্ধ থাকায় যাত্রীরা গাদাগাদি করে অটোরিকশা, পিকআপ, মাইক্রোবাসে যাতায়াত করায় ঝুঁকি আরো বেড়েছে।

৬ মে থেকে গণপরিবহন চালুর অনুমতি দেওয়ার ঘোষণা এলেও মালিকরা এখনো সরকারের কাছ থেকে নির্দেশনা পাননি কীভাবে বাস চলবে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তটিও তাদের কাছে পরিষ্কার নয়। তবে সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেছেন, সরকার যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সেভাবেই বাস চালাবেন মালিকরা।

কিন্তু একাধিক সাধারণ মালিক সমকালকে বলেছেন, ঢাকার অভ্যন্তরীণ রুটের অধিকাংশ বাস পার্শ্ববর্তী গাজীপুর, মুন্সিগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ পর্যন্ত চলাচল করে। এক জেলা থেকে অন্য জেলায় গণপরিবহন বন্ধ থাকলে, এসব রুটের বাস কীভাবে চলবে! ফার্মগেট-জয়দেবপুর রুটের বাস কী ঢাকা গাজীপুর জেলার সীমানা টঙ্গী সেতু পর্যন্ত চলবে! সেখানে যাত্রী নেমে সেতু পার হয়ে আরেক বাস ধরবে? এভাবে ঈদে ঘরমুখো মানুষের ঢল থামানো যাবে না। বরং বিশৃঙ্খলা ও ভোগান্তি আরো বাড়বে। মালিকদের দাবি, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে দুরপাল্লার বাস চলার অনুমতি দেওয়া হোক।