- বাংলাদেশ
- রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের ছক ছিল হেফাজতের
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ
রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের ছক ছিল হেফাজতের
দুই নারীর সঙ্গে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক জাকারিয়া নোমানের

হেফাজতে ইসলাম অচিরেই একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরিকল্পনা করছিল। সংগঠনের বিতর্কিত নেতা মামুনুল হক অনেক স্বপ্ন দেখতেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একাধিক রাজনৈতিক দল তাদের সঙ্গে জোট করতে আগ্রহ দেখাবে। শক্তি ও প্রভাবে হেফাজত এমন পর্যায়ে পৌঁছাবে যে, অন্য দলগুলো নিজ থেকেই তাদের সঙ্গে জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করতে আগ্রহী হবে। এতে আসন ভাগাভাগিতে হেফাজত বড় ছাড় পাবে। মামুনুলসহ একাধিক নেতাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য বেরিয়ে এসেছে।
পুলিশের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা গতকাল সমকালকে জানান, হেফাজত তাদের অরাজনৈতিক চরিত্র থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো তৃণমূল পর্যায়েও কমিটি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। থানা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি তৈরি করে দেশব্যাপী অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের আদলে একটি 'চেইন অব কমান্ড' প্রতিষ্ঠা করাও ছিল তাদের লক্ষ্য। যাতে কোনো কর্মসূচির ডাক দেওয়া হলে মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জড়ো করা সম্ভব হয়।
হেফাজত নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, হেফাজতের কোনো কোনো নেতার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল। আবার অন্য রাজনৈতিক দলও হেফাজতকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। হেফাজতের কোনো কোনো কমিটিতেও তারা ঢুকে গেছে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ব্যর্থ হওয়ার পরও হেফাজতের ভেতরের একটি অংশের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে তারা একটি 'বিরোধী শক্তি' হিসেবে নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে চেয়েছিল।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, কয়েক মাস আগে একটি দলের দায়িত্বশীল নেতা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে শয়তানের সঙ্গেও জোট করবেন তারা। ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, হেফাজতের 'দুষ্টচক্রের' দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন ওই নেতা।
জানা গেছে, আহমদ শফি অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে হেফাজতের কয়েক নেতার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ শুরু হয়। যে কোনো উপায়ে জুনায়েদ বাবুনগরীকে সংগঠনের প্রধান হিসেবে আনতে করণীয় ব্যাপারে তারা শলাপরামর্শ করেন। হেফাজতের একাধিক নেতার সঙ্গে ওই রাজনৈতিক দলটির একজন কেন্দ্রীয় নেতার ফোনালাপ গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে।
শাহ আহমদ শফীপন্থি হিসেবে পরিচিত হেফাজতের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দিন রুহি সমকালকে বলেন, গঠনতন্ত্রে বলা আছে হেফাজত হবে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। হেফাজতের সব প্যাডেও লেখা থাকে যে এটি অরাজনৈতিক আধ্যাত্মিক সংগঠন। তবে মামুনুলসহ কেউ কেউ অরাজনৈতিক এই সংগঠনকে ছিনতাই করতে চেয়েছিলেন। তারা এর রাজনৈতিক রূপান্তর চেয়েছিলেন। ক্ষমতায় যাওয়ার বাসনা থেকেই হেফাজতকে বিতর্কের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।
মাইনুদ্দিন আরও বলেন, আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতের যে কমিটি ছিল তারা নোংরা রাজনীতি করতেন না। সম্প্রতি হেফাজত যে জায়গায় এসে ঠেকেছে এটা এক অর্থে সংগঠনের জন্য মঙ্গলজনক। একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে আহমদ শফীর প্রতিষ্ঠিত হেফাজতের আপাতত টিকে থাকার একটি পথ তৈরি হলো। হেফাজত যাদের খপ্পরে পড়েছিল, তাতে এ সংগঠনটি ঘিরে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল, এটা স্পষ্ট। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংগঠনটির কারও কারও গোপন যোগাযোগ ছিল।
একাধিক নারীর সঙ্গে ফয়জীর সম্পর্ক :চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জীর একাধিক নারীর সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এর জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, 'মানুষ মাত্রই ভুল করে।' এ ছাড়া তিনি দেশজুড়ে হেফাজতের তাণ্ডবের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বলেও দাবি পুলিশের।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের ২ নম্বর গেটে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক এসব তথ্য জানান। ফয়জীর কাছ থেকে উদ্ধার করা একটি মোবাইলে এ-সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার দাবি করেন তিনি।
গত বুধবার বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে ফয়জীকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, 'জাকারিয়া নোমান বিবাহিত। কিন্তু তার কাছ থেকে পাওয়া মোবাইল সেটে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে জানতে পারি, একাধিক নারীর সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।' এর আগে মামুনুল হকও দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন, যাদের তিনি স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
ফয়জীর মোবাইল মেসেঞ্জারে একাধিক নারীর সঙ্গে 'অনৈতিক' কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, 'বেশকিছু চ্যাটিং পেয়েছি, যাদের সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। আমাদের হাতে সেগুলো আছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা সেগুলো এখন প্রকাশ করব না। এই নারীদের সঙ্গে যে তার যোগাযোগ ছিল এবং অনৈতিক সম্পর্ক ছিল, সেগুলো এই চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে পরিস্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি নিজেও আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। পরবর্তী সময়ে তদন্তের মাধ্যমে আরও তথ্য আমরা বের করব এবং মামলার তদন্তের সঙ্গে এগুলো সংযুক্ত করব।'
পুলিশ সুপার বলেন, 'আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বলেছি যে, আপনাদের (হেফাজতে ইসলাম) যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বা আপনি যে বেশভুষা নিয়ে চলেন, সেটার সঙ্গে আপনার এই চরিত্র সাংঘর্ষিক কিনা? সেটার সঙ্গে মিলে কিনা? তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কও একটা ফৌজদারি অপরাধ।'
দেশজুড়ে তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড :চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় অন্তত ১০ জন 'মাস্টারমাইন্ড' ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ফয়জী একজন। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির উদ্দেশ্যে হেফাজত এই তাণ্ডব চালিয়েছে বলে দাবি তাদের।
পুলিশ সুপার রশিদুল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হাটহাজারীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ, থানা ভাঙচুর, ডাকবাংলো ভাঙচুর, ভূমি অফিসে আগুন দেওয়াসহ ফৌজদারি অপরাধের প্রতিটিতেই তার সম্পৃক্ততার কথা প্রাথমিকভাবে তিনি স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় যারা মাস্টারমাইন্ড ছিল, তাদের মধ্যে একজন ফয়জী। তাদের ইন্ধনে, নির্দেশে ও অর্থ জোগানের ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে।
পুলিশের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তা গতকাল সমকালকে জানান, হেফাজত তাদের অরাজনৈতিক চরিত্র থেকে পুরোপুরি বেরিয়ে আসার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছিল। আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির মতো তৃণমূল পর্যায়েও কমিটি দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাদের। থানা এবং ওয়ার্ডভিত্তিক কমিটি তৈরি করে দেশব্যাপী অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠনের আদলে একটি 'চেইন অব কমান্ড' প্রতিষ্ঠা করাও ছিল তাদের লক্ষ্য। যাতে কোনো কর্মসূচির ডাক দেওয়া হলে মুহূর্তের মধ্যে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে জড়ো করা সম্ভব হয়।
হেফাজত নেতাকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদের সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, হেফাজতের কোনো কোনো নেতার রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল। আবার অন্য রাজনৈতিক দলও হেফাজতকে ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করতে চেয়েছিল। হেফাজতের কোনো কোনো কমিটিতেও তারা ঢুকে গেছে। ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে ব্যর্থ হওয়ার পরও হেফাজতের ভেতরের একটি অংশের রাজনৈতিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ছিল। বিভিন্ন কর্মসূচিতে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে তারা একটি 'বিরোধী শক্তি' হিসেবে নিজেদের ক্ষমতা দেখাতে চেয়েছিল।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, কয়েক মাস আগে একটি দলের দায়িত্বশীল নেতা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে শয়তানের সঙ্গেও জোট করবেন তারা। ওই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, হেফাজতের 'দুষ্টচক্রের' দিকে ইঙ্গিত করেছিলেন ওই নেতা।
জানা গেছে, আহমদ শফি অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই একটি রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে হেফাজতের কয়েক নেতার সঙ্গে গোপন যোগাযোগ শুরু হয়। যে কোনো উপায়ে জুনায়েদ বাবুনগরীকে সংগঠনের প্রধান হিসেবে আনতে করণীয় ব্যাপারে তারা শলাপরামর্শ করেন। হেফাজতের একাধিক নেতার সঙ্গে ওই রাজনৈতিক দলটির একজন কেন্দ্রীয় নেতার ফোনালাপ গোয়েন্দাদের হাতে রয়েছে।
শাহ আহমদ শফীপন্থি হিসেবে পরিচিত হেফাজতের প্রতিষ্ঠাকালীন কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দিন রুহি সমকালকে বলেন, গঠনতন্ত্রে বলা আছে হেফাজত হবে একটি অরাজনৈতিক সংগঠন। হেফাজতের সব প্যাডেও লেখা থাকে যে এটি অরাজনৈতিক আধ্যাত্মিক সংগঠন। তবে মামুনুলসহ কেউ কেউ অরাজনৈতিক এই সংগঠনকে ছিনতাই করতে চেয়েছিলেন। তারা এর রাজনৈতিক রূপান্তর চেয়েছিলেন। ক্ষমতায় যাওয়ার বাসনা থেকেই হেফাজতকে বিতর্কের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল।
মাইনুদ্দিন আরও বলেন, আহমদ শফীর নেতৃত্বে হেফাজতের যে কমিটি ছিল তারা নোংরা রাজনীতি করতেন না। সম্প্রতি হেফাজত যে জায়গায় এসে ঠেকেছে এটা এক অর্থে সংগঠনের জন্য মঙ্গলজনক। একটি ঘটনার মধ্য দিয়ে আহমদ শফীর প্রতিষ্ঠিত হেফাজতের আপাতত টিকে থাকার একটি পথ তৈরি হলো। হেফাজত যাদের খপ্পরে পড়েছিল, তাতে এ সংগঠনটি ঘিরে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, হেফাজতের রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ ছিল, এটা স্পষ্ট। অনেক রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে সংগঠনটির কারও কারও গোপন যোগাযোগ ছিল।
একাধিক নারীর সঙ্গে ফয়জীর সম্পর্ক :চট্টগ্রাম ব্যুরো জানায়, হেফাজতে ইসলামের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়জীর একাধিক নারীর সঙ্গে বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কের প্রমাণ পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি একাধিক নারীর সঙ্গে অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কথা স্বীকার করে এর জন্য দুঃখও প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, 'মানুষ মাত্রই ভুল করে।' এ ছাড়া তিনি দেশজুড়ে হেফাজতের তাণ্ডবের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড ছিলেন বলেও দাবি পুলিশের।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের ২ নম্বর গেটে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক এসব তথ্য জানান। ফয়জীর কাছ থেকে উদ্ধার করা একটি মোবাইলে এ-সংক্রান্ত তথ্যপ্রমাণ পাওয়ার দাবি করেন তিনি।
গত বুধবার বিকেলে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে ফয়জীকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, 'জাকারিয়া নোমান বিবাহিত। কিন্তু তার কাছ থেকে পাওয়া মোবাইল সেটে পাওয়া তথ্যের সূত্র ধরে জানতে পারি, একাধিক নারীর সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।' এর আগে মামুনুল হকও দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা স্বীকার করেন, যাদের তিনি স্ত্রী হিসেবে দাবি করলেও কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
ফয়জীর মোবাইল মেসেঞ্জারে একাধিক নারীর সঙ্গে 'অনৈতিক' কথোপকথনের তথ্য পাওয়া গেছে জানিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, 'বেশকিছু চ্যাটিং পেয়েছি, যাদের সঙ্গে তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। আমাদের হাতে সেগুলো আছে। তদন্তের স্বার্থে আমরা সেগুলো এখন প্রকাশ করব না। এই নারীদের সঙ্গে যে তার যোগাযোগ ছিল এবং অনৈতিক সম্পর্ক ছিল, সেগুলো এই চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে পরিস্কারভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি নিজেও আমাদের কাছে স্বীকার করেছেন। পরবর্তী সময়ে তদন্তের মাধ্যমে আরও তথ্য আমরা বের করব এবং মামলার তদন্তের সঙ্গে এগুলো সংযুক্ত করব।'
পুলিশ সুপার বলেন, 'আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। বলেছি যে, আপনাদের (হেফাজতে ইসলাম) যে লক্ষ্য-উদ্দেশ্য বা আপনি যে বেশভুষা নিয়ে চলেন, সেটার সঙ্গে আপনার এই চরিত্র সাংঘর্ষিক কিনা? সেটার সঙ্গে মিলে কিনা? তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং বলেছেন যে, মানুষ মাত্রেরই ভুল হয়। তার বিয়েবহির্ভূত সম্পর্কও একটা ফৌজদারি অপরাধ।'
দেশজুড়ে তাণ্ডবের মাস্টারমাইন্ড :চট্টগ্রামসহ দেশজুড়ে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডবের ঘটনায় অন্তত ১০ জন 'মাস্টারমাইন্ড' ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ। তাদের মধ্যে ফয়জী একজন। দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির উদ্দেশ্যে হেফাজত এই তাণ্ডব চালিয়েছে বলে দাবি তাদের।
পুলিশ সুপার রশিদুল বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে হাটহাজারীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড, বিশেষ করে পুলিশ সদস্যদের ওপর আক্রমণ, থানা ভাঙচুর, ডাকবাংলো ভাঙচুর, ভূমি অফিসে আগুন দেওয়াসহ ফৌজদারি অপরাধের প্রতিটিতেই তার সম্পৃক্ততার কথা প্রাথমিকভাবে তিনি স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, এসব ঘটনায় যারা মাস্টারমাইন্ড ছিল, তাদের মধ্যে একজন ফয়জী। তাদের ইন্ধনে, নির্দেশে ও অর্থ জোগানের ঘটনাগুলো সংঘটিত হয়েছে।
মন্তব্য করুন