- বাংলাদেশ
- এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশনের 'সবার জন্য বই' ইভেন্টে ৫ হাজার বই সংগ্রহ
এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশনের 'সবার জন্য বই' ইভেন্টে ৫ হাজার বই সংগ্রহ

এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশন চলতি বছরে তৃতীয়বারের মতো দেড় মাস (১ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ মার্চ) ধরে চলতে থাকা অনলাইন ইভেন্ট 'সবার জন্য বই' সফলভাবে শেষ করেছে। এর মাধ্যমে বিশ্বের সব প্রান্ত (বাংলাদেশ, কানাডা, ইউএসএ, ইউকে ইত্যাদি) থেকে ডোনেশনের মাধ্যমে নতুন পুরাতন মিলিয়ে ৫ হাজার বই সংগ্রহ করা হয়েছে।
জানা গেছে, ইভেন্টটির মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের ৫টি ভিন্ন ভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত স্কুলে ৫টি লাইব্রেরি তৈরি করা। চলতি বছরের জুন মাসের শেষের দিকে বইগুলো অবহেলিত শিশুদের জন্য ৫টি সুবিধাবঞ্চিত স্কুলের লাইব্রেরিতে সমানভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে৷ প্রতিটি স্কুলের লাইব্রেরিতে ১০০০টি বই থাকবে। বইগুলোর বিষয়বস্তু হবে উপন্যাস, তথ্যভিত্তিক, গল্প, কবিতা ইত্যাদি যা ১ম থেকে ১০ম শ্রেনির শিশুদের জন্য প্রযোজ্য।
জেসিআই ঢাকা ইউনাইটেড এই ক্যাম্পেইনের অধীনে ৫টি স্কুলের লাইব্রেরি তৈরিতে স্পন্সর করেছে। ইয়ুথ এঙ্গেইজমেন্ট পার্টনার হিসেবে ভলান্টিয়ার অপার্চুনিটিস বাংলাদেশ, এসেনশন ফাউন্ডেশন, এক্সিলেন্স বাংলাদেশ, ইভল্যুশন৩৬০, আরোহন ফাউন্ডেশন, পথচক্র ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি, অনসিম কন্সাল্টেন্সি, হুইলচেয়ার ক্রিকেট বাংলাদেশ, স্বপ্ন ইয়ুথ ডেভেলপমেন্ট অরগানাইজেশান, ইয়ুথ ফ্লেম্ব্যু, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিক্স ফোরাম, জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি ডিবেট অরগানাইজেশান এবং জাহাঙ্গীরনগর সাইন্স ক্লাব নিজেদের উদ্যোগে এই ইভেন্টে সাহায্য ও সোশ্যাল মিডিয়ার নেটওয়ার্কিংয়ের মাধ্যমে বই সংগ্রহে অবদান রেখেছে।
এছাড়াও রকমারি বইবন্ধু যথেষ্ট পরিমাণ বই দিয়ে ইভেন্টের লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করেছে। শিখা প্রকাশনী ও দাঁড়িকমা প্রকাশনী নামের আরো দু'টি প্রকাশনী তাদের বই দিয়ে ইভেন্টটির সাংগঠনিক বইদাতা হিসেবে ভূমিকা পালন করে। হারউইল নামক একটি সংগঠন প্রিমিয়াম প্রমোশনাল পার্টনার হিসেবে, প্রচারনার মাধ্যমের বইদাতাদের কাছে এই ইভেন্টটি পৌঁছে দিতে সাহায্য করেছে।
একইভাবে ইয়ুথ স্কুল অফ সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজ (ওয়াইএসএসই) ইএমকে সেন্টার তাদের উদ্যোগ, সহায়তা ও প্রচারণার মাধ্যমের ইভেন্টে সর্বোচ্চ বই সংগ্রহে সহায়তা করেছে। নলেজ পার্টনারশিপের মাধ্যমে টিচ ফর বাংলাদেশ তরুণদের সঙ্গে নেটওয়ার্কিং কমিউনিটির সহায়তায় বই সংগ্রহ করেছে। ইয়ুথ কন্টেন্ট পার্টনার হিসেবে তরুণ এবং মিডিয়া পার্টনার হিসেবে সমকাল ও নিউ এইজ ইয়ুথ এই ক্যাম্পেইনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সফল অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা ছাড়াও বিশিষ্ট মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ও খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে রায়েফ আল হাসান রাফা(মিউজিশিয়ান), ডা. আব্দুর নূর তুষার(মিডিয়া ব্যক্তিত্ব), সাদমান সাদিক(কন্টেন্ট ক্রিয়েটর), শাকিব চৌধুরী(মিউজিশিয়ান), কিঙ্কর হাসান(লেখক), কামরুন নাহার ডানা(কন্টেন্ট ক্রিয়েটর) এবং ইশমামুল ফারহাদ (মিউজিশিয়ান) সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীদের জন্য নিজেদের বই দিয়ে 'সবার জন্য বই' ক্যাম্পেইনে অংশ নিতে সবস্তরের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, ক্যাম্পেইনটি এখন দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছে যেখানে সংগঠনটি বইদাতাদের কাছ থেকে বই সংগ্রহ করা হচ্ছে, যেগুলো পরবর্তীতে 'এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশন' লাইব্রেরি ৫টি ভিন্ন ভিন্ন সুবিধাবঞ্চিত স্কুলে দান করবে। এই ক্যাম্পেইনটি মূলত সাংগঠনিক পরিষদের তত্ত্বাবধানে ক্যাম্পাস অ্যাম্বাসেডর ও ভলান্টিয়ারদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের মাধ্যমে চালিত হয়েছে।
এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশন ফাউন্ডার ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইদ বলেন, এই ক্যাম্পেইনটির প্রভাব অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কেননা এর মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত সমাজে বই পৌঁছে দেওয়া এবং বাংলাদেশের প্রতিটি শিশুর জন্য বইয়ের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করা সম্ভব হবে।
তিনি বলেন, এইম ইনিশিয়েটিভ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের একটি রেজিস্টার্ড (সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন এক্ট ২১,১৮৬০ এর অধীন), আয়হীন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য সুবিধাবঞ্চিত সমাজকে শিক্ষার, দক্ষতা অর্জনের ও স্বাস্থ্য সুযোগ-সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে দেশ থেকে দারিদ্রতা দূর করা। শিক্ষাদান (প্রজেক্ট এইম স্কুল) ও দক্ষতা অর্জনের (প্রজেক্ট লার্ন ট্যু বি) কার্যক্রমের অধীনে ঢাকার মেরাদিয়াতে আমাদের একটি নিজস্ব স্কুল রয়েছে। যেখানে আমরা ১২৬ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুকে (কেজি থেকে ৫ম শ্রেণি) এনসিটিবি পাঠ্যক্রম অনুসারে ইংরেজি মাধ্যমে মানসম্পন্ন শিক্ষা (এসডিজি ৪) দিয়ে থাকি। এছাড়াও এই শিশুদেরকে আমরা কিছু প্রাথমিক দক্ষতা অর্জনের সুযোগ দিয়ে থাকি, যেমন চিত্রাঙ্কন (প্রাথমিক ও ক্যানভাস অঙ্কন), চারু ও কারু শিল্প(অরিগ্যামি অনুশীলন), কম্পিউটার শিক্ষা, শারীরিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি।
মন্তব্য করুন