- বাংলাদেশ
- গ্রেপ্তারের ১০ দিনের মধ্যেই জামিনে মুক্ত করোনা কিট জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা
গ্রেপ্তারের ১০ দিনের মধ্যেই জামিনে মুক্ত করোনা কিট জালিয়াতি চক্রের সদস্যরা

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তিরা -ফাইল ছবি
অনুমোদনহীন মেডিকেল ডিভাইস আমদানি, মেয়াদহীন টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট জালিয়তির সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। তাদের বিরুদ্ধে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে ও জনস্বাস্থ্য বিরোধী কার্যক্রমের অভিযোগে মামলাও হয়েছিল। পুলিশ তাদের তিন দিন করে রিমান্ডও নেয়। তবে গ্রেপ্তারের ১০ দিনের মধ্যেই ওই ৯ জন জামিনে বেরিয়ে গেছেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় এতো দ্রুত ভার্চুয়াল আদালত থেকে এমন জামিনে অবাক হয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরাও।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ মামলাটি তদন্ত করলেও র্যাব সেই মামলার তদন্তের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানিয়েছে। গত ২ মে এ আবেদন জানানো হয়। পুলিশ, র্যাব ও আদালত সূত্রে এসব তথ্য মিলেছে।
গত ১৬ এপ্রিল র্যাব-২ এর একটি দল অনুমোদনহীন মেডিকেল ডিভাইস আমদানি, মেয়াদহীন টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট জালিয়তির সঙ্গে জড়িত অভিযোগে রাজধানীর বনানী, হাজারীবাগ ও বসিলা এলাকায় তিনটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন, বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী শামীম মোল্লা, ম্যানেজার শহিদুল আলম, প্রতিষ্ঠানটির ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল্লাহ আল বাকী সাব্বির, জিয়াউর রহমান, মো. সুমন, জাহিদুল আমিন পুলক, সোহেল রানা, এক্সন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেসের এমডি মাহমুদুল হাসান এবং হাইটেক হেলথকেয়ারের এমডি এস এম মোস্তফা কামাল।
একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাবের ওই অভিযানে ওই সময়ে ওষুধ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ছিলেন। গত ১৭ এপ্রিল মোহাম্মদপুর থানায় র্যাবের দায়ের মামলায় উল্লেখ করা হয়েছিল, চক্রটি অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস আমদানি করে ভেজাল ও মেয়াদউত্তীর্ণ মেডিকেল টেস্টিং কিট এবং রি-এজেন্টে জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন করে মেয়াদ বসিয়ে বিক্রয় ও বাজারজাত করে আসছিল। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মহামারির প্রাদুর্ভাবকে পুঁজি করে অবৈধ লাভবান হওয়ার জন্য বেআইনিভাবে বিভিন্ন নামে কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করে। তারা এসব প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে যথাযথ অনুমতি ও কাগজপত্র ছাড়া ভেজাল এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী খাঁটি হিসাবে বিক্রয় ও বিক্রয়ের জন্য বিতরণ এবং বাজারজাত করছিল।
ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক দেবাশীষ জানান, মামলার পর আসামিদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠানো হয়েছিল। আদালত তাদের প্রত্যেককে তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। জিজ্ঞাসাবাদে এসব মেয়াদহীন মেডিকেল সরাঞ্জমের বিষয়ে বেশকিছু তথ্যও পাওয়া যায়। সে অনুযায়ী মামলার তদন্ত চলছে। তবে আদালত আসামিদের জামিন দিলে পুলিশের তো কিছু করার নেই।
আদালত সূত্র জানায়, ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে ৯ আসামির মধ্যে ২৬ এপ্রিল দুইজন এবং ৩ মে অপর আসামিরা জামিন পান। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ভার্চুয়াল আদালতে জামিনের বিরোধীতা করেছিলেন।
ঢাকা মেট্রোপিলটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু বলেন, তিনি জামিনের বিষয়টি পরে শুনেছেন। ভার্চুয়াল কোর্টে ওই আদালতের পিপি অংশ নিয়েছিলেন। আদালত কোন প্রাউন্ডে, কেন তাদের জামিন দিলো, তা দেখতে হবে।
পিপি বলেন, এসব মামলা আরও সতর্কভাবে দেখা উচিত। বিশেষ ক্ষমতা আইনে দায়ের করা এই মামলায় তাদের সিএমএম থেকে জামিন পাওয়ার কথা না। কারণ তারা জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি। লকডাউন থাকায় জামিন বাতিলের জন্য আবেদন করার সুযোগ নেই। তবে লকডাউন শেষ হলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
মন্তব্য করুন