- বাংলাদেশ
- বাংলাদেশের ৮ শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক দিল জাতিসংঘ
বাংলাদেশের ৮ শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড’ পদক দিল জাতিসংঘ

জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইটে’ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ- সংগৃহীত
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের আটজন শান্তিরক্ষীকে ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ পদক দিয়েছে জাতিসংঘ।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশের আটজনসহ বিশ্বের ৪৪ দেশের ১২৯ জন শান্তিরক্ষীকে এই পদক দেওয়া হয়।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে আয়োজিত ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ৪৪ দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে এই পদক তুলে দেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ।
একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সর্বোচ্চসংখ্যক এই সম্মাননা পেল। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এই মেডেল গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা।
কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের আট শান্তিরক্ষী হলেন: মালিতে নিয়োজিত মিনুস্মা মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার আবদুল মো. হালিম; কঙ্গোতে নিয়োজিত মনুস্কো মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইমাম ভূঁইয়া, সার্জেন্ট মো. জিয়াউর রহমান, সার্জেন্ট এমডি মোবারক হোসেন ও ল্যান্স কর্পোরাল মো. সাইফুল ইসলাম; সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুস্কা মিশনের ল্যান্স কর্পোরাল মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও সার্জেন্ট মো. ইব্রাহীম এবং দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস্ মিশনের ওয়াসারম্যান নুরুল আমিন।
অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন মিশনের ডিফেন্স অ্যাডভাইজর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ছাদেকুজ্জামান। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
পদক প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে এক বার্তায় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ তার অনেক বীর সেনানীকে হারিয়েছে। কিন্তু এই ত্যাগ জাতিসংঘে দায়িত্ব পালনের কোনো আহবানে সাড়া দিতে কখনই আমাদের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। শান্তির লক্ষ্যে নিজেদেরকে উৎসর্গ করার দৃঢ় সঙ্কল্পকে আরও জোরদার করেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে উদ্দেশ্য করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, বুভুক্ষা ও দূর্দশা মুক্ত বিশ্ব প্রতিষ্ঠা করে শান্তির অনুসন্ধান করলেই কেবল কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী এই শান্তিরক্ষীদের প্রতি প্রকৃত সম্মান প্রদর্শন করা হবে।
আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘স্থায়ী শান্তির পথে: শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য যুব-শক্তিকে বৃদ্ধি করা’। দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে মহাসচির গুতেরেজ বিগত সাত দশক ব্যাপী জাতিসংঘের পতাকাতলে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষীগণের বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত ‘শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট’-এ পুস্পস্তবক অর্পন করেন।
উল্লেখ্য, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। জাতিসংঘের ৯টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের প্রায় ৭ হাজার শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৫৯ জন শান্তিরক্ষী মৃত্যুবরণ করেছেন। প্রতিবছরই যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা দিবস উদযাপন করা হয়। কোভিড-১৯ অতিমারিজনিত কারণে এবারের অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালি আয়োজন করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন