করোনা সংক্রমণ ইস্যু নিয়ে সরকারের মধ্যে অস্থিরতা কাজ করছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। সোমবার সংসদের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এই অভিযোগ তুলেন।

এর আগে, সকাল ১১টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। 

লকডাউন-শাটডাউনসহ বার বার প্রজ্ঞাপন পরিবর্তনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি করোনা মোকাবিলায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে সমন্বয়হীনতারও অভিযোগ তোলেন। গত কয়েকদিনের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন ও সরকারের তরফে দেওয়া বক্ততা বা বিবৃতিকে তিনি অতি উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেন। 

ইনু বলেন, সরকারের ভেতরে অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। গত কয়েকদিনে লকডাউন-শাটডাউন নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি এবং ঘন ঘন সংশোধন করা হয়। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অদল-বদল করা হয়। এসব বক্তব্য, বিবৃতির মধ্য দিয়ে অস্থিরতাই প্রকাশ পাচ্ছে।

তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপনে পরস্পরবিরোধী বক্তব্যও রয়েছে। এরকম পরিস্থিতিতে এটা বাঞ্ছনীয় নয়। করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ নয়টি মন্ত্রণালয় সম্পৃক্ত। এই নয়টি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়হীনতাও লক্ষনীয় বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে সাবেক মন্ত্রী ইনু বলেন, করোনায় মৃত্যু আশঙ্কাজনক ভাবে বাড়ছে। শহরেই নয় জেলা, উপজেলা শহরে সংক্রমণ ঘটেছে। ঘরে ঘরে অনেক অসুস্থ। জেলা উপজেলায় রোগীর জন্য বেড পাওয়া যায় না। অক্সিজেনের জন্য হাহাকার চলছে। সরকারও বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত এবং উদ্বিগ্ন।

তিনি বলেন, সংক্রমণ বিস্তাররোধে লকডাউন এবং শাটডাউনের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে দুই/তিনদিনের মধ্যে খাদ্যের জন্য সাধারণ মানুষের হাহাকার শুরু হয়। সঙ্কট দেখা দেয়। অপরদিকে সংক্রমিত ব্যক্তির জন্য বেড, অক্সিজেনের চাহিদা ও আইসিইউর জন্য দৌড়াদৌড়ি..। এক্ষেত্রে জেলা-উপজেলার হাসপাতালে অবিলম্বে কিছু বেড বাড়ানো উচিত। আইসিইউ হয়তো বাড়ানো যাবে না। কিন্তু হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, অক্সিজেন সিলিন্ডার যোগাড় করার সুযোগ রয়েছে।

একটা রোগীও যেন হাসপাতাল থেকে ফিরে না যায় তার চেষ্টা করতে হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। 

ইনু বলেন, কোভিড মোকাবিলায় যেসব চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী কাজ করছে; যারা জান হাতে নিয়ে কাজ করছেন। তাদের গত নয় মাসে নির্ধারিত কোনো দৈনিক ভাতা দেওয়া হয়নি। তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে। তাদের প্রণোদনা দেওয়া দরকার। একইসঙ্গে নীতিমালা পরিবর্তন চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মীদের ঝুঁকিভাতা-প্রণোদনা দেওয়া উচিত।

টিকার কোনো বিকল্প নেই উল্লেখ করে জাসদ সভাপতি বলেন, সর্বোচ্চ টিকা কূটনীতি প্রয়োগ করে টিকা সংগ্রহ করতে হবে। দেশের ভেতরে টিকা উৎপাদনের ব্যবস্থা করতে হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ১৮ বছরের ঊর্ধ্ব সবাইকে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। টিকাই মানুষকে বাঁচাবে।