রাজধানীর মগবাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় বিদ্যুৎ জ্বালানি ও প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের কাছে সংসদে ৩০০ বিধিতে বক্তব্য  দেওয়ার দাবি উঠেছে সংসদে।

সোমবার সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাড়িয়ে জাতীয় পার্টির সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু এ দাবি করেন। পরে বিএনপি দলীয় সদস্য হারুনুর রশীদ একই ইস্যুতে কথা বলেন।

এর আগে সকালে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়।

রোববার সন্ধ্যার পর মগবাজারের বিস্ফোরণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, পত্রিকার ভাষ্য অনুযায়ী সিলিন্ডার বিস্ফোরণে শিশুসহ অন্তত ৭ জন মারা গেছেন। আরো অনেকেই গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলসহ বার্ন ইউনিট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

জ্বালানিও বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সাবেক প্রতিমন্ত্রী চুন্নু বলেন, ঢাকা শহরে হোটেল রেস্তোরাঁয় ব্যবহৃত সিলিন্ডার বা স্টোভগুলো কখনো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ইনস্পেকশন হয় কিনা- এই প্রশ্ন এবার সামনে আসছে। কারণ এর আগেও বিভিন্ন প্রাইভেট গাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হয়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটেছে এবং অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, মগবাজারের ঘটনা যদি গ্যাসের কারণে হয়; তাহলে এর কারণ কি? সেখানে এতবড় একটা স্টোর-এটা কি অবস্থায় ছিল? সারাদেশে যেখানে গ্যাস ব্যবহার হয় বা স্টোর করা হয় তার প্রয়োজনীয় ইন্সপেকশন হয় কিনা। যদি না হয় সেগুলো যাতে যথাযথভাবে করা হয় সেই ব্যবস্থা নিতে হবে।

মগবাজার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় নিহত ও আহতদের ক্ষতিপূরণের দাবি তুলে তিনি বলেন, যেসব হোটেল বা রেস্তোরাঁ কারণে এই বিস্ফোরণ তাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য করা হবে কী-না সেই প্রশ্নও তোলেন জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য। এ বিষয়ে তিনি জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর কাছে ৩০০ বিধিতে একটি বিবৃতি দাবি করেন।

এরপর বিএনপি দলীয় সদস্য অ্যাডভোকেট হারুনুর রশীদ বলেন, কিছুদিন আগে গত বছরে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে নামাজ রত অবস্থায় বিস্ফোরণে অনেক মানুষ মারা গিয়েছিলেন। অনেক মানুষ আহত হয়েছিলেন। তাদেরকে দীর্ঘদিন চিকিৎসা দিতে হয়েছিল। রোববার রাজধানীর মগবাজারের মত ব্যস্ততম জায়গায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে এর দায় সরকারকেই নিতে হবে।

তিনি বলেন, এইখানে বিদ্যুৎ জ্বালানি মন্ত্রী নাই। বিদ্যুৎ জ্বালানি বিভাগের যারা এই গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে আছেন যত্রতত্র যেখানে সেখানে এইভাবে রেস্টুরেন্ট গড়ে উঠছে সেগুলোর সেফটি আছে কিনা। বিভিন্ন দেশে দেখা যায় সেখানে লেখা থাকে সেফটি ফাস্ট। কিন্তু বাংলাদেশে কি অবস্থা এইভাবে আজকে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার বিস্ফোরণে মানুষ মারা যাচ্ছে। তার ছিঁড়ে পড়ে পানির উপর লোক মারা যাচ্ছে। এই কাজগুলো যারা বিদ্যুৎ বিভাগের আজকে এখানে বিদ্যুৎ মন্ত্রী নাই তাদেরকে তো জবাবদিহিতার আওতায় আসতে হবে।

এই সংসদ সদস্য বলেন, রাজধানীর মতো জায়গায় যদি এরকম একটি ঘটনা ঘটে সেখানে কতগুলো বাস ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কি ভয়াবহ অবস্থা হয়েছে। অনেকগুলো বাড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে।  এই যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এটা কার দায়? কে নিবে এর দায়?
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই এই বিভাগকে কঠোরভাবে নির্দেশ দিতে হবে যে ঢাকা শহরে বিভিন্ন জায়গায় বাসাবাড়িতে বিদ্যুৎ বিভাগের যারা লাইন নির্মাণ করেছে এইগুলোর সেফটি নিশ্চিত করতে হবে। এখানে বেআইনি যারা গ্যাস সংযোগ নিচ্ছে যারা বেআইনি বিদ্যুৎ সংযোগ নিচ্ছে এই গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে প্রতিনিয়ত এইভাবে মানুষ মরবে?