চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরের আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাস দেখিয়ে কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় জড়িতদের ছাড় নেই বলে জানিয়েছে বেবিচক নিয়ন্ত্রণাধীন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় এরই মধ্যে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও আনসার সদর দপ্তর থেকে এ কমিটি করা হয়। তদন্তে মাঠে নেমেছেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।

বেসরকারি বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাস দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় মাঠে নেমেছে সংশ্নিষ্ট তদন্ত কমিটির সদস্যরা। 

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় জব্দ করা হয় আনসার কর্মীদের বেতনের তালিকাসহ অন্যান্য ফাইল।

জানা গেছে, বিভিন্ন বিমানবন্দরে কর্মরত আনসার কর্মীদের বেতন-বোনাসের নামে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে এ ধরনের দুর্নীতির ঘটনা ধরা পড়ে। ২০১৮ সাল থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিমানবন্দরের আনসার কর্মীদের বেতন ও বোনাস দেখিয়ে কোটি টাকার বেশি আত্মসাৎ করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে বিমানবন্দর নিরাপত্তা শাখার এক কর্মকর্তা, থানা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা, প্রশিক্ষক (টিআই), প্লাটুন কমান্ডার (পিসি), আনসার ক্যাম্প মনিটরিং সদস্য, রাইটারসহ অন্তত ১০ জন জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে শাহ আমানত বিমানবন্দরের ম্যানেজার (এয়ারপোর্ট) উইং কমান্ডার ফরহাদ হোসেন সমকালকে বলেন, এ বিষয়ে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এরই মধ্যে জব্দ করা হয়েছে অনসার কর্মীদের ২০১৮ থেকে '২১ সালের এপ্রিল পর্যন্ত বেতন-বোনাসের তালিকাসহ অন্যান্য কাগজপত্র। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এ বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত আছে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর আনসার ক্যাম্পের দায়িত্বে থাকা পতেঙ্গা থানা আনসার ভিডিপি কর্মকর্তা ফরিদুল আলম সমকালকে বলেন, এ ঘটনায় আনসার সদর দপ্তর এবং বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি তদন্ত গঠন করা হয়েছে। তদন্ত অব্যাহত আছে।

সংশ্লিষ্ট তদন্ত সূত্র জানায়, বেবিচক নিয়ন্ত্রণাধীন ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে নিজস্ব জনবলের পাশাপাশি এক হাজার ৭২৬ আনসার কর্মী আছেন। বেবিচক থেকে তাদের বেতন-বোনাস দেওয়া হয়। এর মধ্যে ঢাকায় এক হাজার ২২৮, শাহ আমানত বিমানবন্দরে ২০০ এবং অন্যরা সিলেট ওসমানীসহ অন্যান্য বিমানবন্দরে নিয়োজিত। প্রতি মাসে নানা কারণে ২০-২৫ জন কর্মীর পদ শূন্য থাকে। চাকরিচ্যুতি অথবা চাকরির মেয়াদ শেষসহ নানা ঘটনায় ক্যাম্পগুলোতে এসব পদ খালি থাকে। কিন্তু তাদের নামেও বেতন নেওয়া হয়।

বেবিচকের ঢাকা সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, আনসার কর্মীদের বেতন-বোনাসের নামে কোটি টাকা আত্মসাতে জড়িতদের ছাড় নেই। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।