- বাংলাদেশ
- যে কারণে গ্যাস সংকট চরমে
যে কারণে গ্যাস সংকট চরমে

ফাইল ছবি
সোমবার সকাল থেকে ঢাকার উত্তর অংশসহ আশুলিয়া, গাজীপুর, শফিপুর, কাশিমপুর, কোনাবাড়ি, সাভার ও এর আশেপাশের এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দেয়। কারখানা চালুর মতো গ্যাসের সরবরাহ ছিল না। ফলে বিপাকে পড়েন শিল্পমালিকরা।
তবে সোমবার সন্ধ্যার পর থেকে সরবরাহ পরিস্থিতির খানিকটা উন্নতি হয়। গ্যাস সংকটের কারণ হলো শেভরনের মালিকানাধীন দুটো গ্যাস ক্ষেত্র থেকে গ্যাসের উৎপাদন কমে গিয়েছিল। এর মধ্যে জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন পুরো বন্ধ ছিল। আর বিবিয়ানার উৎপাদন কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছিল। এই দুটি গ্যাসক্ষেত্রই যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি শেভরনের মালিকানায় পরিচালিত হয়।
জানা গেছে, দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন জারি করে। তবে ঈদের কারণে সপ্তাহখানেকের জন্য বিধি নিষেধ শিথিল করে সরকার। কিন্তু ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত কঠোরতম লকডাউন শুরু হয়। ঈদের ছুটি ও লকডাউনে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাহিদা অনেক কমে যায়। ফলে শেভরন তাদের গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। গত ২৪ জুলাই জালালাবাদের উৎপাদন বন্ধ করে সংস্কার কাজ শুরু করা হয়। বন্ধের আগের দিন ২৩ জুলাইও জালালাবাদ থেকে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়। সংশ্নিষ্টদের ধারনা ছিল ৫ আগস্টের পর কারখানা খুলতে পারে। তারা সেই সময়সূচি ধরে সংস্কার কাজ চালিয়ে যায়। কিন্তু রফতানিমুখী শিল্পমালিকদের দাবির প্রেক্ষিতে সরকার ৩০ জুলাই ঘোষণা দেয় ১ আগস্ট থেকে রফতানিমুখী কারখানা চালু হবে। হুট করে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত আসায় বিপাকে পড়ে গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিগুলো। রোববার থেকেই কারখানা চালু হওয়ায় গ্যাসের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। উৎপাদন কম থাকায় সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। ফলে ঢাকার উত্তর অংশ, সাভার, আশুলিয়া, জয়দেবপুর ও গাজীপুর এলাকার শিল্প কারখানাগুলোতে ব্যাপক গাস সঙ্কট দেখা দেয়।
এসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংকট নিরসনে তারা অন্যান্য খাত থেকে গ্যাস বেশি আনার চেষ্টা করছেন। আশুগঞ্জ কমপ্রেসর চালু করা হয়েছে যাতে বেশি গ্যাস টেনে আনা যায়। এছাড়া শেভরন বিকেল চারটায় জালালাবাদ ক্ষেত্রে আংশিক উৎপাদন শুরু করে। তবে এই গ্যাস জিটিসিএলের ২০০ কিলোমিটার পাইপ লাইন পেরিয়ে নরসিংদীর মনোহরদীতে তিতাসের পয়ন্ট পর্যন্ত আসতে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা লাগবে। তিতাস আশা করছে আজ রাতেই গ্যাসের সরবরাহ অনেকটাই বাড়বে। সংকটের তীব্রতা কমবে।
মন্তব্য করুন