- বাংলাদেশ
- শিল্পে গ্যাস সংকট চরমে
শিল্পে গ্যাস সংকট চরমে
দ্রুত সমস্যা সমাধানের দাবি পোশাক কারখানা মালিকদের

ঢাকার উত্তর অংশসহ আশুলিয়া, সাভার, জয়দেবপুর, সফিপুর, কাশিমপুর, কোনাবাড়ী, টাঙ্গাইল, এলেঙ্গা, নরসিংদী ও এর আশপাশ এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে। হঠাৎ করেই গত রোববার থেকে এসব অঞ্চলের পোশাক কারখানাগুলোতে গ্যাসের চাপ প্রতি বর্গইঞ্চিতে ২-৩ পাউন্ডে (পিএসআই) নেমে এসেছে।
উল্লেখ্য, সাধারণত জেনারেটর বা বয়লার চালানোর জন্য পোশাক কারখানাগুলোয় ১৫ পিএসআই চাপের গ্যাস প্রয়োজন। এ চাপ ২-৩ পিএসআইয়ে নেমে আসায় ধুঁকে ধুঁকে চলছে গ্যাসচালিত মেশিনের কারখানাগুলো। এতে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এসব এলাকায় রান্নার চুলাও জ্বলেনি। তবে গতকাল সোমবার রাতে পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানি তিতাস।
তিতাস যা বলছে :তিতাস জানিয়েছে, বিবিয়ানা আর জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের সংস্কারকাজের জন্য গ্যাস উৎপাদন কমেছে। এতে লাইনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে গাজীপুর ও সাভার-আশুলিয়ার শিল্প এলাকায় গ্যাসের চাপ কমেছে। তবে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তিতাসের তথ্যমতে, সারাদেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ২২০ কোটি ঘনফুট। ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পায় সংস্থাটি। গতকাল তা নেমে এসেছে আরও নিচে, ১২০ কোটি ঘনফুটে। এ কারণে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা জানান, সকাল থেকেই গ্যাস কম থাকায় বয়লার চালু করা যায়নি। ফলে শ্রমিকরা কাজে এলেও বসে আছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে গতকাল সকালে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ জানান, দুটি গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন কম হওয়ায় গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি জানান, জালালাবাদ থেকে গ্যাস পাইপলাইনে দেওয়া শুরু হয়েছে। রাতেই সরবরাহ বাড়বে।
গাজীপুরের সফিপুর এলাকার যমুনা স্পিনিং ডিভিশন লিমিটেডের কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, কয়েক দিন আগে গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়, লাইনে সংস্কারকাজের কারণে ২৬ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই এ দু'দিন গ্যাস সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন হতে পারে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে গ্যাসের সংকট। ফলে উৎপাদন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তিতাস গ্যাসের গাজীপুর জোনাল বিক্রয়কেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক মির্জা শাহনেওয়াজ লতিফ সমকালকে বলেন, গ্যাসের স্বাভাবিক গতি সর্বোচ্চ থাকে ১৫০ পিএসআইজি। কোনো কোনো এলাকায় এটা কমে ২-১-এ চলে এসেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, জরুরি রপ্তানি কাজের জন্য লকডাউনের মধ্যেও বিশেষ বিবেচনায় পোশাক কারখানা খোলা হয়েছে। এখন গ্যাসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হলে পোশাক রপ্তানিও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দিতে না পারলে কোটি কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যাবে। কারখানা মালিকরা তাই দ্রুত গ্যাস সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
গ্যাস সংকটের নেপথ্যে :গ্যাস সংকটের কারণ হলো শেভরনের মালিকানাধীন দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন কমে যাওয়া। এর মধ্যে জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন পুরো বন্ধ ছিল; আর বিবিয়ানার উৎপাদন কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন জারি করে। তবে ঈদুল আজহার কারণে সপ্তাহখানেকের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে কঠোরতম লকডাউন শুরু হয়, যা চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ঈদের ছুটি ও লকডাউনে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাহিদা অনেক কমে যায়।
ঈদের আগে ২১ জুলাই সারাদেশে গ্যাসের সরবরাহ ছিল ২৫৪ কোটি ঘনফুট। ঈদের দিন সরবরাহ কমে হয় ২২১ কোটি ঘনফুট।
ফলে শেভরন তাদের গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। গত ২৪ জুলাই জালালাবাদের উৎপাদন বন্ধ করে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। বন্ধের আগের দিন ২৩ জুলাইও জালালাবাদ থেকে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়। ছুটির মধ্যে বিবিয়ানা থেকে উত্তোলন কমিয়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুটে নামিয়ে আনা হয়। বিবিয়ানা থেকে দিনে সচরাচর ১২০ কোটি ঘনফুটের ওপর গ্যাস তোলা হয়।
সংশ্নিষ্টদের ধারণা ছিল, ৫ আগস্টের পর কারখানা খুলতে পারে। তারা সেই সময়সূচি ধরে সংস্কারকাজ চালিয়েছে। কিন্তু রপ্তানিমুখী শিল্পমালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৩০ জুলাই ঘোষণা দেয় ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী কারখানা চালু হবে। হুট করে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত আসায় বিপাকে পড়ে গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিগুলো। গত রোববার কারখানা চালু হওয়ার পর গ্যাসের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। উৎপাদন কম থাকায় সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। ফলে ঢাকার উত্তর অংশ সাভার, আশুলিয়া, জয়দেবপুর ও গাজীপুর এলাকার শিল্প কারখানাগুলোতে ব্যাপক গ্যাস সংকট দেখা দেয়।
এসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংকট নিরসনে তারা অন্যান্য খাত থেকে গ্যাস বেশি আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। আশুগঞ্জ কমপ্রেসর চালু করা হয়েছে, যাতে বেশি গ্যাস টেনে আনা যায়। এ ছাড়া শেভরন গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে আংশিক উৎপাদন শুরু করেছে। তবে এই গ্যাস জিটিসিএলের ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইন পেরিয়ে নরসিংদীর মনোহরদীতে তিতাসের পয়েন্ট পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা। তিতাস আশা করছে, রাতেই গ্যাসের সরবরাহ অনেকটা বাড়বে। সংকটের তীব্রতা কমবে।
উল্লেখ্য, সাধারণত জেনারেটর বা বয়লার চালানোর জন্য পোশাক কারখানাগুলোয় ১৫ পিএসআই চাপের গ্যাস প্রয়োজন। এ চাপ ২-৩ পিএসআইয়ে নেমে আসায় ধুঁকে ধুঁকে চলছে গ্যাসচালিত মেশিনের কারখানাগুলো। এতে শিল্পকারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে ব্যাপকভাবে। এসব এলাকায় রান্নার চুলাও জ্বলেনি। তবে গতকাল সোমবার রাতে পরিস্থিতির একটু উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেছে গ্যাস সরবরাহকারী কোম্পানি তিতাস।
তিতাস যা বলছে :তিতাস জানিয়েছে, বিবিয়ানা আর জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের সংস্কারকাজের জন্য গ্যাস উৎপাদন কমেছে। এতে লাইনে পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে গাজীপুর ও সাভার-আশুলিয়ার শিল্প এলাকায় গ্যাসের চাপ কমেছে। তবে এই সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা চলছে।
তিতাসের তথ্যমতে, সারাদেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ২২০ কোটি ঘনফুট। ১৭০ কোটি ঘনফুট গ্যাস পায় সংস্থাটি। গতকাল তা নেমে এসেছে আরও নিচে, ১২০ কোটি ঘনফুটে। এ কারণে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় তীব্র গ্যাস সংকট দেখা দিয়েছে।
আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার কর্মকর্তা জানান, সকাল থেকেই গ্যাস কম থাকায় বয়লার চালু করা যায়নি। ফলে শ্রমিকরা কাজে এলেও বসে আছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে গতকাল সকালে তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী ইকবাল মো. নুরুল্লাহ জানান, দুটি গ্যাসক্ষেত্রে উৎপাদন কম হওয়ায় গ্যাসের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় তিনি জানান, জালালাবাদ থেকে গ্যাস পাইপলাইনে দেওয়া শুরু হয়েছে। রাতেই সরবরাহ বাড়বে।
গাজীপুরের সফিপুর এলাকার যমুনা স্পিনিং ডিভিশন লিমিটেডের কর্মকর্তা লিয়াকত আলী জানান, কয়েক দিন আগে গ্যাস কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ দিয়েছিল। সেখানে বলা হয়, লাইনে সংস্কারকাজের কারণে ২৬ জুলাই থেকে ২৮ জুলাই এ দু'দিন গ্যাস সরবরাহে কিছুটা বিঘ্ন হতে পারে। কিন্তু গত এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে চলছে গ্যাসের সংকট। ফলে উৎপাদন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তিতাস গ্যাসের গাজীপুর জোনাল বিক্রয়কেন্দ্রের উপব্যবস্থাপক মির্জা শাহনেওয়াজ লতিফ সমকালকে বলেন, গ্যাসের স্বাভাবিক গতি সর্বোচ্চ থাকে ১৫০ পিএসআইজি। কোনো কোনো এলাকায় এটা কমে ২-১-এ চলে এসেছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, জরুরি রপ্তানি কাজের জন্য লকডাউনের মধ্যেও বিশেষ বিবেচনায় পোশাক কারখানা খোলা হয়েছে। এখন গ্যাসের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হলে পোশাক রপ্তানিও ব্যাপকভাবে ব্যাহত হবে। সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দিতে না পারলে কোটি কোটি ডলারের রপ্তানি আদেশ বাতিল হয়ে যাবে। কারখানা মালিকরা তাই দ্রুত গ্যাস সমস্যার সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।
গ্যাস সংকটের নেপথ্যে :গ্যাস সংকটের কারণ হলো শেভরনের মালিকানাধীন দুটি গ্যাসক্ষেত্র থেকে উৎপাদন কমে যাওয়া। এর মধ্যে জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের উৎপাদন পুরো বন্ধ ছিল; আর বিবিয়ানার উৎপাদন কমিয়ে প্রায় অর্ধেকে নামিয়ে আনা হয়েছিল।
প্রসঙ্গত, দেশে চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার দেশব্যাপী কঠোর লকডাউন জারি করে। তবে ঈদুল আজহার কারণে সপ্তাহখানেকের জন্য বিধিনিষেধ শিথিল হয়। ঈদের পর ২৩ জুলাই থেকে কঠোরতম লকডাউন শুরু হয়, যা চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। ঈদের ছুটি ও লকডাউনে শিল্পকারখানা বন্ধ থাকায় গ্যাসের চাহিদা অনেক কমে যায়।
ঈদের আগে ২১ জুলাই সারাদেশে গ্যাসের সরবরাহ ছিল ২৫৪ কোটি ঘনফুট। ঈদের দিন সরবরাহ কমে হয় ২২১ কোটি ঘনফুট।
ফলে শেভরন তাদের গ্যাসক্ষেত্র সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। গত ২৪ জুলাই জালালাবাদের উৎপাদন বন্ধ করে সংস্কারকাজ শুরু করা হয়। বন্ধের আগের দিন ২৩ জুলাইও জালালাবাদ থেকে ১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস তোলা হয়। ছুটির মধ্যে বিবিয়ানা থেকে উত্তোলন কমিয়ে ৭০ থেকে ৮০ কোটি ঘনফুটে নামিয়ে আনা হয়। বিবিয়ানা থেকে দিনে সচরাচর ১২০ কোটি ঘনফুটের ওপর গ্যাস তোলা হয়।
সংশ্নিষ্টদের ধারণা ছিল, ৫ আগস্টের পর কারখানা খুলতে পারে। তারা সেই সময়সূচি ধরে সংস্কারকাজ চালিয়েছে। কিন্তু রপ্তানিমুখী শিল্পমালিকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার ৩০ জুলাই ঘোষণা দেয় ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী কারখানা চালু হবে। হুট করে কারখানা খোলার সিদ্ধান্ত আসায় বিপাকে পড়ে গ্যাস উৎপাদন, সঞ্চালন ও বিতরণের দায়িত্বে থাকা কোম্পানিগুলো। গত রোববার কারখানা চালু হওয়ার পর গ্যাসের চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে যায়। উৎপাদন কম থাকায় সরবরাহ বিঘ্নিত হয়। ফলে ঢাকার উত্তর অংশ সাভার, আশুলিয়া, জয়দেবপুর ও গাজীপুর এলাকার শিল্প কারখানাগুলোতে ব্যাপক গ্যাস সংকট দেখা দেয়।
এসব এলাকায় গ্যাস সরবরাহের দায়িত্বে থাকা তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সংকট নিরসনে তারা অন্যান্য খাত থেকে গ্যাস বেশি আনার চেষ্টা চালাচ্ছে। আশুগঞ্জ কমপ্রেসর চালু করা হয়েছে, যাতে বেশি গ্যাস টেনে আনা যায়। এ ছাড়া শেভরন গতকাল সোমবার বিকেল ৪টায় জালালাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে আংশিক উৎপাদন শুরু করেছে। তবে এই গ্যাস জিটিসিএলের ২০০ কিলোমিটার পাইপলাইন পেরিয়ে নরসিংদীর মনোহরদীতে তিতাসের পয়েন্ট পর্যন্ত আসতে সময় লাগবে চার থেকে সাড়ে চার ঘণ্টা। তিতাস আশা করছে, রাতেই গ্যাসের সরবরাহ অনেকটা বাড়বে। সংকটের তীব্রতা কমবে।
মন্তব্য করুন