- বাংলাদেশ
- আরও ১৪ দিনের রিমান্ডে হেলেনা
আরও ১৪ দিনের রিমান্ডে হেলেনা

হেলেনা জাহাঙ্গীর। ছবি: ফাইল
বিতর্কের জেরে আওয়ামী লীগের পদ হারানো হেলেনা জাহাঙ্গীরের দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তারা হলেন- হাজেরা খাতুন ও সানাউল্লাহ নূরী। মঙ্গলবার রাজধানীর গাবতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছেন, হেলেনার মালিকানাধীন জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি নিয়োগের জন্য ১০ হাজার থেকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হতো। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। এদিকে, চার মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেলেনাকে আরও ১৪ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে র ্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-৪ যৌথভাবে অভিযান চালায়। এ সময় গ্রেপ্তার দু'জনের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ ও দুটি মোবাইল ফোনসেট জব্দ করা হয়েছে। হাজেরা খাতুন ২০১৬ সালে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনের ডিজিএম হিসেবে নিয়োগ পান। পরে জয়যাত্রা টিভির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে তিনি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে জিএম (অ্যাডমিন) পদে নিযুক্ত হন। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, জয়যাত্রা টিভি ২০১৮ সাল থেকে হংকংয়ের একটি ডাউনলিংক চ্যানেল হিসেবে সম্প্রচার হয়ে আসছিল। এর ফ্রিকোয়েন্সির জন্য হংকংকে প্রতি মাসে প্রায় ছয় লাখ টাকা দিতে হয়। তবে হংকং থেকে বরাদ্দ ফ্রিকোয়েন্সির মাধ্যমে বাংলাদেশে সম্প্রচারের কোনো অনুমোদন নেই।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, জয়যাত্রা টিভি দেশের ৫০টি জেলায় সম্প্রচার হয়। এই টিভির জেলা প্রতিনিধি হতে ৩০ থেকে ৫০ হাজার এবং উপজেলা প্রতিনিধি হতে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা এককালীন দিতে হয়। এ ছাড়া প্রতিনিধিদের কাছ থেকে প্রতি মাসে দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা নেওয়া হতো। এই টিভি প্রায় ৩৪টি দেশে সম্প্রচারিত হয়। এক থেকে পাঁচ লাখ টাকায় বৈদেশিক প্রতিনিধিরা নিয়োগ পান। তারা প্রতি মাসে ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিতেন।
র্যাব জানায়, জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনে ডোনার, জেনারেল মেম্বার, লাইফ টাইম মেম্বার ইত্যাদি ক্যাটাগরিতে অর্থ সংগ্রহ করা হয়। সংগঠনটির ২০০ সদস্যের কাছ থেকে সদস্যপদ বাবদ ২০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে। এর সামান্য অংশ মানবিক কাজে ব্যবহার করা হয়।
গ্রেপ্তার সানাউল্লাহ নুরী জয়যাত্রা টিভির প্রতিনিধি সমন্বয়ক ছিলেন। প্রতিনিধিদের কেউ মাসিক টাকা দিতে ব্যর্থ হলে বা গড়িমসি করলে তিনি ভয় দেখাতেন। তিনি গাজীপুরে গার্মেন্ট খাতে ব্যাপক চাঁদাবাজি করে একটি অংশ জয়যাত্রা টিভিতেও দিতেন বলে জানান।
জয়যাত্রা টিভির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রীর সম্পর্ক আছে কিনা- এ প্রশ্নের উত্তরে খন্দকার আল মঈন বলেন, হেলেনা বিভিন্ন ব্যক্তির সঙ্গে ছবি তুলতেন। এসব ছবি তিনি প্রতারণার জন্য ব্যবহার করতেন।
অননুমোদিত আইপির বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ও তথ্য মন্ত্রণালয় দেখছে। তারা যদি মনে করে এসব বন্ধ করতে আমাদের সহায়তা নেবে, তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব।
চার মামলায় রিমান্ড : চারটি মামলায় হেলেনা জাহাঙ্গীরের মোট ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। মঙ্গলবার ঢাকার দুই আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।
পল্লবী থানার প্রতারণা ও টেলিযোগাযোগ আইনের দুই মামলায় চার দিন করে মোট আট দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান। গুলশান থানার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় তার ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি।
মন্তব্য করুন