জীবনমান টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে যুব সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে আদিবাসী যুব উন্নয়ন নীতিমালা প্রণয়নসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে আদিবাসী যুব ফোরাম। আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে শনিবার সম্প্রীতির এক ভার্চুয়াল যুব সংলাপে ফোরামের নেতৃবৃন্দরা এসব দাবি জানান। 

অনুষ্ঠানটি আয়োজক সংগঠনের ফেসবুক পেজ থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থাপিত উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হচ্ছে- আদিবাসী তরুণ ও যুব ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য উচ্চশিক্ষা বৃত্তির ব্যবস্থা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোটা নিশ্চিত করতে হবে; যুবদের জন্য কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ ও কর্মক্ষেত্রে কোটা ব্যবস্থা ও তাদের প্রতি বৈষম্য দূর করতে হবে; আদিবাসী কন্যা শিশু ও যুব নারীর প্রতি সকল ধরনের সহিংসতা বন্ধ করতে হবে ও সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ঘটে যাওয়া সহিংসতাগুলোর ন্যায়বিচার করতে হবে; যুবদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার মিথ্যা মামলা-হয়রানি বন্ধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে; আদিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে ও অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংগঠনের সভাপতি অনন্ত বিকাশ ধামাই এর সভাপতিত্বে ও চন্দ্রা ত্রিপুরার সঞ্চালনায় সংলাপে বক্তব্য দেন যুব মৈত্রীর সহ সভাপতি তৌহিদুর রহমান, আদিবাসী যুব পরিষদের সভাপতি হরেন্দ্রনাথ সিং, আদিবাসী ফোরামের ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক রিপন চন্দ্র বানাই ছাত্র, শিক্ষক ও সংস্কৃতিকর্মী মুকুল কান্তি ত্রিপুরা, তুহিন কান্তি দাস, লামিয়া মহসীন, দৈনিক প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার ড্রিঞ্জা চাম্বুগং, উদ্যোক্তা খাইথেম সিথি সিনহা, ইঙেলৈ প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে অনন্ত ধামাই বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পঞ্চাশ বছর পরও এদেশের আদিবাসীরা প্রতিনিয়ত নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। আদিবাসীদেরকে ভূমি থেকে উচ্ছেদের ষড়যন্ত্র প্রতিনিয়ত চলছে।

সমতলে পৃথক ভূমি কমিশন না থাকার কারণে সমতলের আদিবাসীরা প্রতিনিয়ত ভূমি হারাচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন তৌহিদুর রহমান। তিনি বলেন, পাবর্ত্য চট্টগ্রামের ভূমি কমিশনের আইন বাস্তবায়ন না হাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন মহল ভিন্ন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সৎ ইচ্ছা থাকতে হবে এবং আদিবাসীদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। 

তুহিন কান্তি দাস বলেন, দেশের উন্নয়ন হলেও আদিবাসীদের এখনো উন্নয়ন হয়নি। আদিবাসীদেরকে এখনো এই রাষ্ট্র সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

তিনি আরও বলেন, অবকাঠামো নির্ভর উন্নয়নের ফলে সংস্কৃতি পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই রাজনৈতিক সচেনতা বৃদ্ধি করতে হবে। পাবর্ত্য চুক্তিকে তিনি মুক্তির সনদ বলে আখ্যায়িত করেছেন। কিন্তু এই চুক্তি বাস্তবায়নে সরকার প্রতিশ্রুতি রাখেনি।

মুকুল কান্তি ত্রিপুরা বলেন, একজন মানুষকে তখনই প্রতিষ্ঠিত বলা হয়, যখন তিনি সামাজিক, রাজনেতিক ও অর্থনৈতিকভাবে সুযোগ সুবিধা ভোগ করেন। ঠিক তেমনি আদিবাসীদেরকে রাষ্ট্রের সকল সুযোগ সুবিধা প্রদান করে এসডিজি বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে হবে।