- বাংলাদেশ
- টিকার জন্য দীর্ঘ লাইন, হুড়োহুড়ি, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত
টিকার জন্য দীর্ঘ লাইন, হুড়োহুড়ি, স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষিত

টিকাকেন্দ্রে ভিড় (ফাইল ছবি)
সকাল থেকেই গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। এরমধ্যেই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের নূরজাহান রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় টিকা কেন্দ্রের সামনে দীর্ঘ লাইন। ওই এলাকার বাসিন্দা মর্জিনা বেগম লাইনে দাঁড়িয়েছেন সকাল ৭টায়। টিকা না পেয়ে সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি ফিরে যান।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, এখানে প্রচুর অব্যবস্থাপনা। তারা যে সাড়ে তিনশ' মানুষকে টিকা দেবে, মাথা গুনে লোক ঢুকিয়ে ফটকটা বন্ধ করে দিলে অন্তত কিছুটা বিশৃঙ্খলা এড়ানো যেত। অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে দিন শেষে অনেক মানুষকেই টিকা ছাড়া ফিরতে হচ্ছে।
রাজধানীর মিরপুর পল্লবীর ২ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটি সেন্টার কেন্দ্রে টিকা নেওয়ার জন্য বাইরে কয়েকশ' লোক দাঁড়িয়ে আছেন। ফজরের নামাজের পর এসে লাইনে দাঁড়িয়েও টিকা পাননি বলে অনেকেই অভিযোগ করেন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের শেওড়াপাড়ায় টিকাকেন্দ্রে রোববার ভোর থেকেই মানুষের ঢল নামে। যত সময় গড়াচ্ছে ততই লাইন দীর্ঘ হচ্ছিল।
টিকাদান সংশ্লিষ্টরা জানান, নির্দিষ্ট সংখ্যক টিকাকেন্দ্রে টিকা দেওয়া হয়। সকাল ১০টায় টিকা দেওয়া শুরু হয়। যাদের কাছে টোকেন আছে তারাই ঢুকতে পারছে। তবে অনেকে অযথাই লাইনে দাঁড়িয়ে বিশৃঙ্খলা করছেন।
টিকাকেন্দ্রের এক কর্মকর্তা বলেন, মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিবন্ধী এবং বয়স্কদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা দেওয়া হচ্ছে। এই কার্যক্রম বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে।
এদিকে প্রচণ্ড ভিড়ের কারণে টিকাকেন্দ্রগুলোতে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ছিল ভিড়, হুড়োহুড়ি ও বিশৃঙ্খলা। লাইন ভেঙে টিকা নেওয়া, ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা, কোনো কোনো কেন্দ্রে লাইনও ছিল না। কার আগে কে টিকার বুথে প্রবেশ করবে সেই প্রতিযোগিতায় শক্তিমানদেরই জয়ী হতে দেখা গেছে অনেক কেন্দ্রে।
রাজধানীর প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রের চিত্র একই। অনেক কেন্দ্রে দেখা গেছে নারী-পুরুষের দীর্ঘ লাইন। স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী, কাউন্সিলর ও তার অনুসারীরা কেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করছেন। তবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের চিত্র কোথাও পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রগুলোতে নারী-পুরুষরা জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে হাজির হন। দায়িত্বরতরা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, বয়স, নামসহ কয়েকটি তথ্য টিকা কার্ডে উল্লেখ করে একটি কার্ড দিয়ে দিচ্ছেন। সেটা দেখালে টিকা দেওয়া হচ্ছে।
ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তারা জানান, প্রতি ওয়ার্ডে দিনে ৩৫০ জনকে দেওয়ার মত টিকা বরাদ্দ থাকায় অনেক মানুষকে টিকা না নিয়েই ফিরে যেতে হচ্ছে। আগামী ১২ অগাস্ট পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জোবায়দুর রহমান বলেন, যারা টিকা পাচ্ছেন না, আমরা তাদের আশ্বস্ত করছি। তারাও টিকা পাবেন। ছয়দিন এই কার্যক্রম চলবে। তারপর আগামী সপ্তাহেও হবে।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ আহমেদ বলেন, আমরা ছয়দিনের প্রতিদিন ৭৫টি ওয়ার্ডের প্রতিটি ওয়ার্ডে সর্বোচ্চ ৩৫০ জনকে টিকা দিতে পারব।
মন্তব্য করুন