বুধবার থেকে কঠোর বিধিনিষেধ শিথিল করে যে প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে, তাতে সড়কপথে আসনসংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলার সুযোগ থাকলেও প্রতিদিন মোট পরিবহনসংখ্যার অর্ধেক চালু রাখার কথা বলা হয়েছে। আগে এ নিষেধ কখনও দেওয়া হয়নি; ছিল অর্ধেক আসন ফাঁকা রেখে যান গণপরিবহন চালানোর নির্দেশনা।

নতুন এ নির্দেশনার পেছনে যুক্তি কী? এ নিয়ে আলোচনা চলছে। প্রায় সবকিছু খুলে দেওয়ার পর সড়কপথে অর্ধেক গণপরিবহন তথা বাস চললে মানুষের চাপ বাড়ার আশঙ্কা আছে, যা সংক্রমণ বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই।

অবশ্য এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে একটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন কর্মকর্তা। জানানো হয়, এর যুক্তি হিসেবে আন্তমন্ত্রণালয় সভায় (৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত) আলোচনা হয়েছিল, সব বাস চললে অনেক বাস পর্যাপ্ত যাত্রী পায় না। এক্ষেত্রে একসঙ্গে সব বাস চললে অকারণেই যানবাহনের চাপ বাড়ে। আবার সব বাসে পর্যাপ্ত যাত্রী না পাওয়ায় সব শ্রমিক আর্থিকভাবে সুবিধা কম পান। অর্ধেক বাস নিয়ে চললে একদিকে যানবাহনের চাপ কমবে, আবার সবাই যাত্রী পাবে। ফলে শ্রমিকেরা আর্থিকভাবে সুবিধা পাবেন। মূলত এ আলোচনা হয়েছিল।

তবে পরিবহন মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, প্রথমত অর্ধেক বাস চললে যাত্রী চাপ বাড়বে। এর কী যুক্তি থাকতে পারে, সেটি আমরাও বুঝতে পারছি না। শতভাগ বাস চললে আগের মতোই ভাড়ায় চলতে পারবেন। কিন্তু অর্ধেক গাড়ি চালানো হবে কীভাবে? এমনিতেই শ্রমিকরা কর্মহীন অবস্থায় আছেন। এখন অর্ধেক বাস চললে শ্রমিকরাও অসুবিধায় পড়বেন। এ জন্য এ সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা দরকার।

রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়েছে, সড়ক, রেল ও নৌপথে আসনসংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন বা যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দপ্তর বা সংস্থা, মালিক ও শ্রমিকসংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহনসংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।