- বাংলাদেশ
- উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন রাবি শিক্ষক
যৌন হয়রানির অভিযোগে অব্যাহতি
উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হলেন রাবি শিক্ষক

নিজ বিভাগের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অব্যাহতি পাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক বিষ্ণু কুমার অধিকারী এবার বিচার চেয়ে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। এই অভিযোগে তাকে ২০১৯ সালের ১ জুলাই বিভাগের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট তাকে ৬ বছর নিষিদ্ধের সুপারিশ করেছে।
এদিকে বিভাগে ফিরতে এবং অব্যাহতিকে অবৈধ দাবি করে উচ্চ আদালতে রিট করেছেন বিষ্ণু কুমার। সোমবার রিটের শুনানিতে তাকে 'অব্যাহতি দেওয়া কেন অবৈধ নয়' জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেছেন বলে জানান ওই শিক্ষকের আইনজীবী ব্যারিস্টার হাফিজুর রহমান খান।
হাফিজুর রহমান খান বলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে প্রমাণ ছাড়া এতদিন কেন বিভাগের কার্যক্রমের বাইরে রাখা হয়েছে, সেটি জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। একইসঙ্গে ওই শিক্ষকের কক্ষের (বিভাগের ব্যক্তিগত চেম্বার) মালপত্র ও চাবি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভাগ কর্তৃপক্ষের কেড়ে নেওয়া কেন অবৈধ নয় সেটিও আদালত জানতে চেয়েছেন। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ইনস্টিটিউট প্রধান, সিন্ডিকেট সদস্যসহ সংশ্নিষ্ট সবাইকে রিটের জবাব দিতে বলা হয়েছে। বিচারক ইনায়েতুর রহিমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রুল জারি করেন বলে জানান এই আইনজীবী। হাইকোর্টের রুলের বিষয়টি চিঠি আকারে দুই-একদিনের মধ্যে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন তিনি।
বিষয়টি বিচারাধীন থাকায় এ নিয়ে গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি অভিযুক্ত শিক্ষক বিষ্ণু কুমার।
২০১৯ সালের ২৫ জুন শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের চতুর্থ বর্ষের এক ছাত্রী পরিচালক এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে বিষ্ণু কুমার অধিকারীর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি এবং মানসিকভাবে উত্ত্যক্ত করার লিখিত অভিযোগ করেন। পরে ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের আরেক ছাত্রী পরিচালকের কাছে একই অভিযোগ করেন। এ ঘটনার পরদিন ইনস্টিটিউটের এক জরুরি সভায় শিক্ষককে ওই দুই বর্ষের একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ২৮ জুন অভিযোগপত্র প্রত্যাহারের জন্য অভিযুক্ত শিক্ষক চাপ দিচ্ছেন উল্লেখ করে ওই দুই শিক্ষার্থী নিরাপত্তা চেয়ে মতিহার থানায় জিডি করেন। পরে তাকে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২১ জুলাই ওই বিভাগের অনুসন্ধান কমিটি এ ঘটনার সত্যতা পাওয়ার কথা জানায়। পরে অভিযোগটি ইনস্টিটিউট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলে পাঠানো হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০৪তম সিন্ডিকেট সভায় অভিযুক্ত বিষ্ণু কুমারকে ৬ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার সুপারিশ করা হয়। তবে এর আগে ওই শিক্ষককে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়ার কথাও জানায় সিন্ডিকেট। তবে এখনও এটির সমাধান দেয়নি প্রশাসন।
মন্তব্য করুন