সমকামী অধিকারকর্মী জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু মাহবুব তনয় হত্যা মামলার রায় ঘোষণার জন্য মঙ্গলবার দিন ধার্য করেছেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে গত ২৩ আগস্ট ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমান আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন ঠিক করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম ছারোয়ার খান জাকির সমকালকে বলেন, এ মামলার সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছি। আদালত তাদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড দেবেন বলে আশা করেন তিনি।

গত বছরের ১৯ নভেম্বর এই হত্যা মামলায় আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর জিয়া (চাকরিচ্যুত মেজর), মোজাম্মেল হুসাইন ওরফে সায়মন, আরাফাত রহমান, শেখ আব্দুল্লাহ, আসাদুল্লাহ, আকরাম হোসেন আবির, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ও জুনাইদ আহমদ ওরফে মাওলানা জুনায়েদ। সবাই নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আল ইসলামের বিভিন্ন পর্যায়ের সক্রিয় সদস্য। সংগঠনের নেতা সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হকের নির্দেশে সংগঠনের সামরিক শাখার সদস্যরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটান।

এই আটজনের মধ্যে মোজাম্মেল, আরাফাত, আব্দুল্লাহ ও আসাদুল্লাহ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। আর জিয়া, আকরাম, সাব্বিরুল ও জুনাইদ পলাতক। এছাড়া চাকরিচ্যুত মেজর জিয়াকে ধরিয়ে দিলে ২০ লাখ টাকা পুরস্কারের ঘোষণা রয়েছে।

২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল রাজধানীর কলাবাগানের লেক সার্কাস রোডের বাড়িতে ঢুকে ইউএসএইড কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নান ও তার বন্ধু থিয়েটারকর্মী মাহবুব তনয়কে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। ওই ঘটনায় কলাবাগান থানায় জুলহাজের বড় ভাই মিনহাজ মান্নান ইমন হত্যা মামলা এবং সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মোহাম্মদ শামীম অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা করেন।

নিহত জুলহাজ বাংলাদেশে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজিনার প্রটোকল অফিসার ছিলেন। নিহত তনয় নাট্য সংগঠন লোক নাট্যদলের শিশু সংগঠন পিপলস থিয়েটারে জড়িত ছিলেন।

আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের তিন বছর পর ২০১৯ সালের ১২ মে সেনাবাহিনী থেকে বহিষ্কৃত মেজর জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের শীর্ষ নেতা জিয়াসহ আটজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলায় আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক মুহম্মদ মনিরুল। পরবর্তীকালে ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারের জন্য মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হয়।