- বাংলাদেশ
- বেসরকারি খাতে উন্নয়নের ভিত্তি গড়েছেন বঙ্গবন্ধু
বিসিআইর আলোচনা সভায় বক্তারা
বেসরকারি খাতে উন্নয়নের ভিত্তি গড়েছেন বঙ্গবন্ধু

অর্থনীতি বেসরকারি খাতনির্ভর। ব্যক্তি খাতের সাফল্যে ভর করে একের পর এক উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। বেসরকারি খাতের এই শক্তির ভিত্তি গড়ে দিয়ে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ৫০ বছর আগেই বেসরকারি খাতের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরেছিলেন তিনি। সেই উন্নয়ন দর্শন অনুসরণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বেসরকারি খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছেন। সহায়ক শক্তি হিসেবে উদ্যোক্তারাও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেন।
'বঙ্গবন্ধুর শিল্পায়ন দর্শন :আজকের বাংলাদেশ' শীর্ষক ভার্চুয়াল এক সেমিনারে এমন মতামত দিয়েছেন রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী নেতারা। তারা বলেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া বিভিন্ন নীতি সহায়তার মাধ্যমে বেসরকারি খাত এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনও যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার এ আলোচনার আয়োজন করে বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর ২০ বছর তাকে নিয়ে আলোচনা করা যায়নি। তার আদর্শ জানা এবং জাতীয় জীবনে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ২০টি বছর কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ওই সময়ে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন দর্শন পৌঁছে দিতে হবে। তার ত্যাগের শিক্ষা অনুসরণ এবং উৎপাদন কর্মকাণ্ডে মনোযোগ দেওয়াই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি যথাযথ সম্মান।
বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি বেসরকারি খাতনির্ভর। বিশেষ করে একই সঙ্গে শিল্প এবং কৃষি খাতের উন্নয়ন এবং তা টেকসই থাকা পৃথিবীর আর কোনো দেশে হয়েছে বলে জানা যায় না। এই উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু। বাজার অর্থনীতির বিকাশের পক্ষে ছিলেন তিনি। তবে বঙ্গবন্ধু একচেটিয়া পুঁজিবাদ চাননি। ১৯৭২ সালেই রপ্তানিতে পণ্যবৈচিত্র্যের ধারণা দিয়ে গেছেন বঙ্গবন্ধু।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, বেসরকারি শিল্পের জন্য পর্যাপ্ত ঋণ জোগানে বঙ্গবন্ধু শিল্পঋণ সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। সেই প্রতিষ্ঠান এখন নেই। এখন শিল্পের ঋণ দেওয়া হয় ৫ বছরের জন্য। অথচ আবাসনের জন্য ২৫ বছর মেয়াদি ঋণ দেওয়া হয়। স্বল্প মেয়াদের ঋণে শিল্পায়ন হওয়া সহজ নয়। এ বিষয়ে নতুন করে ভাবতে হবে। পুঁজির সংকটে থাকা অতিক্ষুদ্র এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ঋণদানে ব্যাংকগুলোকে বাধ্য করতে হবে।
সাংসদ সেলিমা আহমাদ বলেন, ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাদের জন্য জামানতবিহীন ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন হবে না। এ প্রসঙ্গে শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জামানতবিহীন ঋণ দেওয়ার বিষয়ে একটি নীতিমালা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত তা আর আলোর মুখ দেখেনি। ওই নীতিমালা আবার ফিরিয়ে আনা যায় কিনা দেখা দরকার।
ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ব্যাংক ঋণ পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো পর্যায়ে নিবন্ধনের ব্যবস্থা করা যায় কিনা ভেবে দেখার পরামর্শ দেন বিসিআইর সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। তিনি বলেন, শিল্প মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিতে পারে।
ঢাকা চেম্বারের সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধুর ৭ কোটি জনতাকে দাবিয়ে রাখা যায়নি। তার কন্যার ১৭ কোটি জনতাকেও দাবিয়ে রাখা যাবে না। ইউএনডিপি বাংলাদেশ অফিসের লিড ইকোনমিস্ট নাজনীন আহমেদ বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য আরও বেশি কর্মসংস্থান কর্মসূচি নিতে পারে সরকার। এতে গ্রামীণ পর্যায়ের সাধারণ নারীও উদ্যোক্তা হিসেবে কর্মসংস্থানে অবদান রাখতে পারবেন।
মন্তব্য করুন