
মিসর থেকে ভাড়ায় আনা দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের লিজ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওই সময়ের কর্মকর্তাদের তলব করছে সংসদীয় কমিটি। বুধবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিটির আগামী বৈঠকে তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, তানভীর ইমাম, আশেক উল্লাহ রফিক, আনোয়ার হোসেন খান, শেখ তন্ময়, সৈয়দা রুবিনা আক্তার এবং কানিজ ফাতেমা আহমেদ অংশ নেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১১ মার্চ ইজিপ্ট এয়ার থেকে দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার চুক্তি হয়। ওই দুটি উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার সঙ্গে জড়িত ওই সময়ের মন্ত্রী, সচিব, বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি), পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও ক্যাপ্টেন ইশরাতকে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। বৈঠকে সংশ্নিষ্ট দু'জন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে কিছু আলোচনা হলেও আগামী বৈঠকে আরও আলোচনা হবে। উড়োজাহাজ লিজ নেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের সংসদীয় কমিটির আগামী বৈঠকে উপস্থিত থাকতে এবং মন্ত্রণালয়কে ব্যবস্থা নিতে বলেছে সংসদীয় কমিটি।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছরের চুক্তিতে ইজিপ্ট এয়ার থেকে বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআরই উড়োজাহাজ দুটি লিজ নেয় বিমান। এর একটি বিমানের বহরে যুক্ত হয় ২০১৪ সালের মার্চে এবং অন্যটি একই বছরের মে মাসে। এক বছরের কম সময় ফ্লাইট পরিচালনার পর একটির ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। উড়োজাহাজটি সচল রাখতে ইজিপ্ট এয়ার থেকেই ভাড়ায় আনা হয় আরেকটি ইঞ্জিন। দেড় বছরের মাথায় নষ্ট হয় বাকি ইঞ্জিনটিও। পরে ইঞ্জিন মেরামত করতে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানো হয়। তবে কোনো সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। সে কারণে লিজ নেওয়া প্রতিষ্ঠান ও মেরামতকারী প্রতিষ্ঠান উভয়কেই অর্থ দিতে হয় বিমানকে।
গত বছরের অক্টোবর মাসে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দুটি বোয়িং ৭৭৭-২০০ উড়োজাহাজের পেছনে পাঁচ বছরে বাংলাদেশ বিমানের নিট ক্ষতি হয়েছে এক হাজার ১০০ কোটি টাকা। ওই বৈঠকে জানানো হয়, এই উড়োজাহাজ দুটি চালিয়ে রাজস্ব আদায় হয়েছিল দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে ওই দুটির পেছনে খরচ হয়েছিল তিন হাজার ৩০০ কোটি টাকা। ওই দুটি উড়োজাহাজের জন্য প্রতিমাসে বিমান ১১ কোটি টাকা করে ভর্তুকি দিয়ে আসছিল। সেই দায় থেকে ওই বছরের মার্চ মাস থেকে বিমান মুক্ত হতে পেরেছে। গত দশম সংসদের বিমান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি এই বিমান দুটি লিজ নেওয়া নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল।
মন্তব্য করুন