- বাংলাদেশ
- বিডিএফএর নামে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ
বিডিএফএর নামে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ
খামারিদের ক্ষোভ

বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশন
বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিএফএ) নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। কিছু ব্যক্তি সংগঠনের নতুন কমিটি গঠনের প্রচারণা চালাচ্ছেন। এতে খামারিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাদের অভিযোগ, বিভেদ সৃষ্টি ও বিভ্রান্তি তৈরি করে সংগঠনকে দুর্বল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে ভুয়া কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংগঠনের নামে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার অভিযোগে ৩ সেপ্টেম্বর বিডিএফএর সভাপতি ইমরান হোসেন রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন।
জানা গেছে, সারাদেশে দুগ্ধ ও পশু খামারিদের সবচেয়ে বড় সংগঠন বিডিএফএ। ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ সংগঠনের সদস্য সংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। সংগঠনের প্রধান কার্যালয় মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধের লোহার গেট এলাকায়। খামারিদের পক্ষে দাবি-দাওয়া নিয়ে সংগঠনটি দীর্ঘদিন ধরে সরকারের সঙ্গে দেনদরবারের পাশাপাশি অনিয়মসহ নানা অসংগতিও তুলে ধরে। কিন্তু সম্প্রতি এ সংগঠনের নামে একটি গোষ্ঠী বিভ্রান্তি ও বিভেদ সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধিত বৃহৎ এ সংগঠনের নাম দিয়ে নতুন একটি কমিটি করা হয়েছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে প্রচারণা চালানো হচ্ছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সংগঠনের কমিটি গঠন হলেও হঠাৎ গত ৩১ আগস্ট বিভিন্ন দপ্তরে আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে একটি চিঠি দেওয়া হয়। ওই চিঠির সঙ্গে কমিটির সদস্যদের তালিকাও সংযুক্ত করা হয়। সে তালিকায় চট্টগ্রামের ইকবাল হোসাইনকে সভাপতি ও সিলেটের ফখরুদ্দিন রাজীকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। তালিকায় ১২৩ জন সদস্যের মধ্যে অধিকাংশই ঢাকার বাইরের।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, বিডিএফএর কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। সংগঠনের মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা পরিবর্তন করে উত্তর বাড্ডায় নেওয়া হয়েছে। কিন্তু বুধবার বেড়িবাঁধ এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে এখনও বিডিএফএর কার্যালয় আছে এবং সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো ওই চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বিডিএফএর বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শাহ ইমরান খামারিদের স্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং সুপরিকল্পিতভাবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করায় আগের কমিটি বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই কমিটিকে ভুয়া আখ্যা দিয়ে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেছেন বিডিএফএ সভাপতি ইমরান হোসেন। প্রতারণা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, বিডিএফএর নাম ব্যবহার করে একটি গোষ্ঠী নতুন কমিটি করেছে, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। ওই কমিটির কেউই আমাদের কার্যকরী কমিটির সদস্য নন। তারা চাইলে নতুন সংগঠন করতে পারেন। আমাদের সংগঠনের নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও প্রতারণা সহ্য করা হবে না। ইতোমধ্যে ভুয়া এ কমিটির নেতারা খামারিদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করছেন বলে অভিযোগ আসছে। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরেও তারা প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছেন। এতে আমাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিডিএফএর লোগো-প্যাড ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের বিভ্রান্তিমূলক লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করে খামারিদের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বিভেদ তৈরি করা হচ্ছে, যা আইনত দণ্ডনীয় ও ফৌজদারি অপরাধ। যে কেউ ইচ্ছা করলেই গঠনতন্ত্রকে পাশ কাটিয়ে কমিটি বিলুপ্ত করার এখতিয়ার রাখে না। যে কোনো খামারি অথবা কমিটির অভিযোগ বিচার-বিশ্নেষণ করে দোষী সাব্যস্ত করার একমাত্র এখতিয়ার রাখেন লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ও আদালত। বিডিএফএ গঠনতন্ত্র মোতাবেক ২০২২ সালের নভেম্বরে নির্বাচনের মাধ্যমে পরবর্তী কমিটি গঠন করবে। অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য-খামারিদের মধ্যে যে কেউ নির্বাচনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় কমিটিতে আসতে পারবেন।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার ওসি (অপারেশন) দুলাল হোসেন সমকালকে বলেন, অভিযুক্তদের বিষয়ে এখনও তদন্ত চলামন রয়েছে। তদন্ত শেষে চার্জশিট দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন