ই-কমার্স সাইট ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মোহাম্মদ রাসেল ও চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-র‌্যাব। বৃহস্পতিবার বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে র‌্যাবের এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন। এর আগে বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে র‌্যাব-২ ইউনিটের সদস্যরা রাসেল ও শামীমার মোহাম্মদপুরের বাড়ি ঘিরে ফেলে।  

র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক লে. কর্নেল খায়রুল ইসলাম জানান, ইভ্যালির বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের র‌্যাব সদর দফতরে নেওয়া হচ্ছে।

ইভ্যালির মালিকের বাসায় র‌্যাবের অভিযান

প্রতারণার অভিযোগে বুধবার রাতে শামীমা নাসরিন ও মোহাম্মদ রাসেলের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা দায়ের করেন মো. আরিফ বাকের নামে একজন গ্রাহক, যিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার পূর্বগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। 

ইভ্যালির রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা

মামলায় ইভ্যালির সিইও মোহাম্মদ রাসেলকে এক নম্বর আসামি ও চেয়ারম্যান শামীমাকে দুই নম্বর আসামি করা হয়। এই মামলায় আরও কয়েকজনকে 'অজ্ঞাতনামা' দেখিয়ে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে আরিফ বাকের উল্লেখ করেছেন, ইভ্যালির অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ৩ লাখ ১০ হাজার ৫৯৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তা পাননি তিনি। নিরূপায় হয়ে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন তিনি।  

ইভ্যালির বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ মে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট হয়ে আরিফ বাকের ও তার বন্ধুরা চলতি বছরের মে ও জুন মাসে কিছু পণ্য অর্ডার করেন। পণ্যের অর্ডার বাবদ সব মূল্য বিকাশ, নগদ ও সিটি ব্যাংকের কার্ডের মাধ্যমে সম্পূর্ণ পরিশোধ করেন তারা। পণ্যগুলো ৭ থেকে ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে ডেলিভারি ও নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পণ্য সরবরাহে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠান সমপরিমাণ টাকা ফেরত দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিল। কিন্তু ওই সময়সীমার মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি না পাওয়ায় বহুবার ইভ্যালির কাস্টমার কেয়ার প্রতিনিধিকে ফোন করা হয়। সর্বশেষ গত ৫ সেপ্টেম্বর যোগাযোগ করে অর্ডার করা পণ্যগুলো পাওয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন আরিফ ও তার বন্ধুরা। একপর্যায়ে ইভ্যালি পণ্য প্রদান ও টাকা ফেরত দিতে ব্যর্থ হওয়ার পর ৯ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির ধানমন্ডির অফিসে যান আরিফ ও তার বন্ধুরা।  

ইভ্যালির কাছে মার্চেন্টদের পাওনা ২০৬ কোটি টাকা

মামলার এজাহারে আরিফ উল্লেখ করেন, মোহাম্মদ রাসেলের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তারা উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি করেন। একপর্যায়ে অফিসের অভ্যন্তরে থাকা রাসেল উত্তেজিত হয়ে তার রুম থেকে বেরিয়ে এসে তাকে (আরিফ) ভয়-ভীতি প্রদর্শন করেন এবং তাদের পণ্য অথবা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদানের পাশাপাশি তাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করেন। এতে তারা আতঙ্কে দিনাতিপাত করছেন জানিয়ে আরিফ এজাহারে আরও উল্লেখ করেছেন, পণ্যগুলো বুঝে না পাওয়ায় তিনি আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।