মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীনদের দেওয়া ঘর নিয়ে দুর্নীতি বা অনিয়মের তদন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন কেন বন্ধ করেছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমার প্রশ্ন দুর্নীতি দমন কমিশন তদন্ত বন্ধ করবে কেন? তাদের তো তদন্ত বন্ধ করার কথা না। তদন্ত চালু রাখতে হবে। তদন্ত করে দেখতে হবে এসব কারা ভাঙলো, তারা কারা ও তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল? তারা কেন ভাঙলো?

বৃহস্পতিবার সংসদের চতুর্দশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। এর আগে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। 

গৃহহীনদের দেওয়া ঘর নিয়ে দুর্নীতি বা অনিয়মের তদন্ত চালু রাখার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩০০টি ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রত্যেকটা তদন্ত তাদের করতে হবে এবং রিপোর্ট দিতে হবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, এক সদস্য প্রশ্ন তুলেছেন আশ্রয়কেন্দ্র নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে। এটা তদন্ত হয়েছে। ৯টি জায়গায় দুর্নীতি পাওয়া গেছে। আর দশ-বারোটি জায়গায় অতিবৃষ্টির কারণে মাটি ধসে ঘর পরে গেছে। আর ৩০০টি জায়গায় দরজা-জানালার উপর হাতুতির আঘাত দেখা গেছে। ফ্লোরগুলো খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তোলা হয়েছে। এসবের ছবি আছে। ইটের ঘাথুনির পিলার ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। এটাতো দুর্নীতির জন্য হয়নি। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা কারা করল? এর মধ্যে কিছু এরেস্ট হয়েছে। অন্যদের এরেস্ট করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা গরীবকে ঘর করে দিব সেখান থেকেও টাকা মেরে খাবে? আমরা এখন কংক্রিট এবং স্টিলের দিয়ে ঘর করে দিচ্ছি। যাতে সহজে কেউ ভাঙতে না পারে।’

সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের একটা বদঅভ্যাসও আছে। কথায় কথায় হতাশা হওয়া। যতই কাজ করি তারপরও বলে এটা হলো না কেন? ওটা হলো না কেন? আমি বলতে চাই, এসব না করে আগে কী ছিলো আর এখন কী হয়েছে সেটা দেখলে তো হয়ে যায়।’

শেখ হাসিনা বলেন,  ‘মিডিয়া কী লিখলো আর টকশোতে কী বললো, সেটা শুনে আমি কখনো দেশ পরিচালনা করি না। দেশ পরিচালনা করি আমার অন্তর থেকে। কারণ, আমার বাবা এই দেশ স্বাধীন করেছেন। দরিদ্র মানুষের জন্য তিনি বছরের পর বছর জেল খেটেছেন। নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন। সেই মানুষগুলির জন্য কী কাজ করতে হবে, সেটা আমি বাবা-মায়ের থেকে শিখেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার দারিদ্র ৪০ ভাগ ছিল ২০ ভাগে নামিয়েছে। করোনায় কিছু মানুষ কাজ পাচ্ছে না। কিন্তু একেবারে না খেয়ে কেউ নেই। দারিদ্রের হার বাড়তে পারে, কিন্তু ২০ ভাগ থেকে ৪০ ভাগ হয়ে গেছে এটা ঠিক না। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও রেমিটেন্স বেড়েছে, মাথাপিছু আয় বেড়েছে। গড় আয়ু বেড়েছে। বিএনপির সময় রিজার্ভ ছিল ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার। আজকে ৪৮ দশমিক ০৪ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ।

সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেন, পদ্মাসেতু নিয়ে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। বিশ্বব্যাংক বা কেউ এখানে দুর্নীতির প্রমাণ করতে পারেনি। এখন পদ্মা সেতু দৃশ্যমান, মেট্রোরেল দৃশ্যমান। সমস্ত ঢাকাজুড়ে মেট্রোরেল ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করা হবে।