ইভ্যালির চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিন ও তার স্বামী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেলকে  ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে। 

গত বুধবার রাতে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেন রূপগঞ্জ উপজেলার একজন গ্রাহক। পরদিন বিকেলে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসা থেকে র‌্যাব তাদের দুজনকে গ্রেপ্তার করে।

শুক্রবার মো. রাসেল ও তার স্ত্রী শামীমার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুল ইসলাম। সোমবার ওই রিমান্ডের মেয়াদ শেষ হয়েছে।  রিমান্ড শেষে মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।

গুলশান থানা সমকালকে জানিয়েছে, গুলশান থানার দায়ের করা মামলায় রাসেল-শামীমা দম্পতিকে আপাতত আর রিমান্ড চাওয়ার পরিকল্পনা নেই। 

শুক্রবার ইভ্যালির কাছে পণ্য সরবরাহকারী কামরুল ইসলাম চকদার ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন। এজাহারে তিনি ৩৫ লাখ ৮৫ হাজার ৫৪২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেন। ওই মামলায় মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এদিকে আদালতের ধানমন্ডি থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে জানা গেছে, সে মামলায় তাদের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে রাখা হয়েছে।

পুলিশের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানান, এক পর্যায়ে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে- তা ধরেই রেখেছিলেন ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল। 

তবে তার ধারণা ছিল, কিছুটা ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হলেও শেষ পর্যন্ত তার কিছুই হবে না। এ ধরনের মামলায় তেমন কোনো সাজা হওয়ার কথা নয়। তা ছাড়া তিনি কৌশলে সব দিক ম্যানেজ করে আইনের ফাঁক গলে ঠিক বেরিয়ে আসবেন। আর আর্থিক দায় এড়াতে প্রতিষ্ঠানকে দেউলিয়া ঘোষণাসহ কয়েকটি বিকল্প পথও ভেবে রেখেছিলেন।

পুলিশ জানায়, ব্যবসায় 'কৌশলগত ভুল' ছিল দাবি করলেও রাসেলের অসৎ উদ্দেশ্যের কারণেই প্রতিষ্ঠানটি এ পরিস্থিতিতে এসে দাঁড়ায়। পণ্য দিতে না পারলেও তিনি নতুন গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া বন্ধ করেননি। উল্টো যতটা সম্ভব টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। 

তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, গুলশান থানার মামলায় রাসেল ও শামীমাকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে দু'জনের জন্য প্রশ্নগুলো ছিল একই। উত্তরে দুজন একই রকম তথ্য দিয়েছেন। 

তাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গ্রাহকরা ইভ্যালির কাছে পাবেন ৭০০ কোটি টাকার বেশি। আর পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো পাবে আরও প্রায় ২৫০ কোটি টাকা।