দেশের অন্যতম শীর্ষ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালযয়ের বোর্ড অব ট্রাস্টির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ততাসহ নানা অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের মহাপরিচালক (বিশেষ তদন্ত) সাঈদ মাহমুদ খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ জানিয়েছিল আইন ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশন।

সংগঠনের উপদেষ্টা ড. সুফী সাগর সামস সমকালকে বলেন, ‘অভিযোগ দাখিলের চার মাসেও আমরা তদন্তে কোনো অগ্রগতি দেখতে পাইনি। এরপর গেল ২৬ অক্টোবর মানববন্ধন করেছি। অবশেষে দুদক অনুসন্ধান শুরু করেছে। দেরিতে হলেও এ প্রক্রিয়া শুরু হওয়াকে আমরা নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় রক্ষার লড়াইয়ে আইন ও মানবাধিকার সুরক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক বিজয় বলে মনে করছি। এখন অনুসন্ধান শেষে দোষীদের দ্রুত শাস্তি দাবি করছি।’

ড. সুফী সাগর সামস জানান, দুদকের বিশেষ তদন্ত শাখার পরিচালক সৈয়দ ইকবালের অধীনে উপ-পরিচালক ফয়সাল অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা হিসেবে অভিযোগের তদন্ত করবেন।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়টি সম্পর্কে একাধিক অভিযোগ জমা পড়ে দুদকে। 

অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য 'আজিম উদ্দিন ও এম এ কাসেম সিন্ডিকেট' দীর্ঘদিন যাবত প্রতিষ্ঠানটি লুটেপুটে খাচ্ছেন। মূলত এই সিন্ডিকেটের কারণে নর্থ সাউথে অনিয়ম পরিণত হয়েছে নিয়মে। কম মূল্যের জমি বেশি দামে ক্রয়, ডেভেলপার কোম্পানির কাছ থেকে কমিশন নেওয়া, শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে অবৈধভাবে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যের জন্য বিলাসবহুল গাড়ি ক্রয়, লাখ টাকা করে সিটিং এলাউন্স গ্রহণ, অনলাইনে মিটিং করেও সমপরিমাণ অ্যালাউন্স গ্রহণ, নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ডের ৪০৮ কোটি টাকা নিজেদের মালিকানাধীন ব্যাংকে এফডিআর, মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা অমান্য করে কয়েকগুণ শিক্ষার্থী ভর্তি ইত্যাদি। তাছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে জঙ্গিবাদে মদদ দেওয়ারও সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জমা পড়েছে।

দুদকে দাখিল অভিযোগে বলা হয়েছে, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য আজিম উদ্দিন আহমেদ ও এম এ কাসেম সিন্ডিকেটের হাতে গোটা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জিম্মি হয়ে আছে।