- বাংলাদেশ
- কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবি টিআইবির
কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধের দাবি টিআইবির

কয়লাভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার বন্ধসহ নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার এবং প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে পরিকল্পিত আটটি কয়লা প্রকল্প থেকে দূষণের ফলে ৩০ বছরে ৩০ হাজার মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া জাপান সরকারের অর্থায়নে কক্সবাজারের মাতারবাড়ীতে স্থাপিত কয়লা প্রকল্পের দূষণে মৃত্যুঝুঁকিতে রয়েছে আরও ১৪ হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে যুক্তরাজ্যের গ্লাসগোতে আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলন নিয়ে অবস্থান ও সুপারিশপত্র প্রকাশ উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানায় টিআইবি। এ সময় আসন্ন কপ-২৬ জলবায়ু সম্মেলনে কয়লাভিত্তিক জ্বালানি ব্যবহার বন্ধ, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসার, প্রতিশ্রুত জলবায়ু অর্থায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিতের জন্য ১৪টি দাবি তুলে ধরে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান টিআইবির ক্লাইমেট ফাইন্যান্স পলিসি ইন্টিগ্রিটির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. মাহফুজুল হক। এ সময় সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, নির্বাহী ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সুমাইয়া খায়ের, উপদেষ্টা পরিচালক (গবেষণা ও পলিসি) মোহাম্মদ রফিকুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
টিআইবি জানিয়েছে, রামপাল, মাতারবাড়ী, বাঁশখালীসহ বাংলাদেশে মোট ১৯টি বড় কয়লা ও এলএনজিভিত্তিক প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এতে উপকূলীয় জেলাগুলোতে পরিবেশ ও দেড় লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা আরও হুমকির মুখে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আগামী রোববার থেকে যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে শুরু হতে যাওয়া কপ-২৬ সম্মেলনকে প্যারিস চুক্তি-পরবর্তী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জলবায়ু সম্মেলন হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছয় বছর আগে সম্পাদিত প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী শিল্পোন্নত দেশগুলোর প্রতিবছর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১০০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার কথা। তারা তা না দেওয়ায় জলবায়ু পরিবর্তনের বড় শিকার বাংলাদেশও ক্ষতিপূরণ পাচ্ছে না। টিআইবি বলছে, এ বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছানোর ক্ষেত্রে এই সম্মেলনই শেষ সুযোগ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসে যাওয়ার লক্ষ্যে শিল্পোন্নত দেশগুলোর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা থাকলেও এ ক্ষেত্রে অনেকেই ব্যর্থ হচ্ছে। অন্যদিকে, ক্ষতিপূরণ বাবদ তারা প্রতি বছর নির্ধারিত ১০০ বিলিয়ন ডলারও দিচ্ছে না। এ অর্থ যথাযথভাবে ছাড় করার উদ্যোগ নিতে হবে। তিনি মনে করেন, এ সম্মেলনে বাংলাদেশ আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে।
টিআইবি জানিয়েছে, কপ-২৬ সম্মেলনে অংশ নিয়ে বাংলাদেশ তার প্রস্তাবে আটটি দাবি তুলে ধরতে পারে। যেমন-জলবায়ুবিষয়ক নীতিনির্ধারণে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারকারী কোম্পানিগুলোর অনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে; ২০৫০ সালের মধ্যে 'নেট জিরো' লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইনটেনডেড ন্যাশনালি ডিটারমাইন্ড কন্ট্রিবিউশনসহ (আইএনডিসি) প্রশমনবিষয়ক সব কার্যক্রমে উন্নত দেশগুলোর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে; ২০৫০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে শতভাগ জ্বালানি উৎপাদনে উন্নত দেশগুলোকে পর্যাপ্ত জলবায়ু তহবিল, প্রযুক্তি হস্তান্তর ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের (সিভিএফ) পক্ষ থেকে সমন্বিত দাবি জানাতে হবে ইত্যাদি।
মন্তব্য করুন