- বাংলাদেশ
- সাংবাদিক রোজিনাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চান জাতিসংঘের পাঁচ দূত
সাংবাদিক রোজিনাকে গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চান জাতিসংঘের পাঁচ দূত

সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম। ছবি: ফাইল
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে কেন ও কোন প্রেক্ষাপটে গ্রেফতার করা হয়েছিল তা জানতে চেয়ে সরকারকে চিঠি দিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক পাঁচ জন দূত। সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, গত ২৮ জুন বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দেওয়া পাঁচ জন দূত হচ্ছেন মত প্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষা ও উৎসাহিতকরণবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার আইরিন খান, আরবিট্রারি ডিটেনশনবিষয়ক ওয়ার্কিং গ্রুপের ভাইস চেয়ার মিরিয়াম অ্যাস্ট্রিদা কাসতিল্লো, মানবাধিকারের সুরক্ষা পরিস্থিতি বিষয় স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার মেরি ললর, নির্যাতন এবং অন্যান্য নিষ্ঠুর, অমানবিক ও অবমাননাকর আচরণ বিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার নিলস মেলজার এবং নারীর প্রতি সহিংসতাবিষয়ক স্পেশাল র্যাপোর্টিয়ার ডুবরাভকরা সিমোনাভিচ।
চিঠিতে বলা হয়, কোন প্রেক্ষাপটে ও কী অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে আটক করা হয়, তাঁর অধিকার লংঘিত হয়েছে হয়েছে কিনা, জাতিসংঘের বিশেষ দূত হিসেবে দায়িত্বপালনের অংশ হিসেবেই তা তারা জানতে চান। তারা লিখেছেন, রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ কোভিড-১৯ মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকার বিষয়ে প্রশ্ন তোলার কারণেই করা হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয় এবং এ প্রসঙ্গটি মতপ্রকাশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এ কারণেই রোজিনা ইসলামকে আটক করার বিষয়টি তাদের উদ্বিগ্ন করেছে। এই সঙ্গে পাঁচ বিশেষ দূত ১৯২৩ সালের অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট প্রয়োগের ব্যাপারেও উদ্বিগ্ন। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর এই আইন প্রয়োগের প্রভাব অত্যন্ত বিরূপ বলেও তারা মন্তব্য করেছেন। তারা রোজিনা ইসলামকে সুরক্ষা দেওয়ারও অনুরোধ জানান।
তারা আরও লিখেছেন, রোজিনা ইসলামকে মত প্রকাশ এবং সরকারের সমালোচনা করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে, এমন অভিযোগ সত্য হয়ে থাকলে তা 'ইন্টারন্যাশনাল কোভেন্যান্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস (আইসিসিপিআর)'-এর ৯ ও ১৯ নম্বর অনুচ্ছেদের লংঘন। বাংলাদেশ ২০০০ সালের ৬ সেপ্টেম্বর এই আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুমোদন করেছে। এই চুক্তির অনুচ্ছেদগুলোতে তথ্য চাওয়া, পাওয়া, প্রকাশসহ মত প্রকাশের স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে।
জাতিসংঘের বিশেষ দূতেরা বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯তম অনুচ্ছেদে চিন্তা-বিবেকের, বাকস্বাধীনতা, জনস্বর্থে তথ্য দেওয়ার বাধ্যবাধকতাসহ ২০০৯ সালের তথ্য অধিকার আইন থাকার বিষয়টিও আমলে নিয়েছেন। সরকারকে চিঠি পাওয়ার দুই মাসের মধ্যে জবাব দেওয়ার অনুরোধ জানান তারা। সরকারের জবাব পেলে রোজিনা ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়টি তারা জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদকে অবহিত করবেন। সরকার এ চিঠির জবাব দিয়েছে কিনা বৃহস্পতিবার তা জানার চেষ্টা করা হলে তা নিশ্চিত করতে পারেনি সরকারের কোন দায়িত্বশীল সূত্র।
গত ১৭ মে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে ছয় ঘণ্টা ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্থা করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা।
স্বাস্থ্য সচিব লোকমান হোসেন ওই সময় দপ্তরে উপস্থিত থাকলেও তিনিও একজন সাংবদিককে হেনস্তা থেকে রক্ষায় কোন ধরনের ভূমিকাই নেননি। পরে ১৯২৩ সালের প্রায় পরিত্যক্ত ঔপনিবেশিক আমলের মামলায় রোজিনা ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। পরে তিনি জামিন পান।
মন্তব্য করুন