পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের বিনা বিচারে হত্যার অভিযোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। এই শাস্তি নিশ্চিত করতে তারা উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিও জানিয়েছেন । 

‘মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবস’ উপলক্ষে রোববার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক আলোচনা সভার আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ।

সংগঠনের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং মো. আল মামুনের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। 

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য-সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল এবং ভাস্কর রাশা।

জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মাধ্যমে আলোচনা সভা শুরু করা হয়।  

আলোচনা সভায় প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসান বলেন, ‘বাহাত্তরের সংবিধান প্রতিষ্ঠিত না হলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। অবৈধ সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদ লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাহাত্তরের সংবিধান ধ্বংস করে দিয়েছিল। খুনি জিয়া হাজার হাজার মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদেরকে বিনা বিচারে হত্যা করেছিল যা পৃথিবীর ইতিহাসে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। একটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিশন গঠন করে অবৈধ সামরিক শাসক জিয়ার মুখোশ জাতির সামনে উন্মোচন করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর বাহাত্তরের সংবিধান পুনর্বহালের দাবি জাতীয় সংসদে আমি অবশ্যই উত্থাপন করবো।’ 

রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে জিয়াউর রহমানের কবর অপসারণে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘খুনি জিয়ার ভুয়া কবর পবিত্র জাতীয় সংসদ এলাকায় অবস্থিত চন্দ্রিমা উদ্যান থেকে সরিয়ে ফেলতে হবে। আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বীরের সন্তান। একাত্তরের পরাজিত সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সামনে মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা কখনও মাথা নত করবে না। ধর্ম ব্যবসায়ীরা ইসলামের প্রকৃত শত্রু। বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সকল সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রাজপথে মোকাবিলা করার জন্য প্রয়োজনে জীবন দিতেও আমরা প্রস্তুত আছি।’

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলেন, ‘জিয়া ছিলেন ঠাণ্ডা মাথার খুনি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশ পরিচালনার জন্য জাতীয় চার নেতাকেও কারাগারে বিনা বিচারে জিয়ার নির্দেশে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। পঁচাত্তর পরবর্তী খুনি জিয়া মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের হত্যা করে নিজের ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করেছিল। পৃথিবীর সবচেয়ে ঘৃণ্য ব্যক্তি ছিল জিয়া। খুনি জিয়াকে কখনও মানুষ বলা যায় না। অমানুষের মতো সে ঘৃণ্যতম অপরাধ করেছে। মুক্তিযোদ্ধা সামরিক সদস্যদের হত্যা করে তাদের লাশগুলো পর্যন্ত গুম করা হয়েছিল।’