- বাংলাদেশ
- অনুপস্থিতিতে সাজা ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না
তাৎক্ষণিক মন্তব্য
অনুপস্থিতিতে সাজা ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না

দেশের ইতিহাসে প্রথম ফৌজদারি মামলায় একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির দোষী প্রমাণিত হওয়া এবং তাকে কারাদণ্ডের আদেশ আমাদের জাতির জন্য নিঃসন্দেহে গৌরবোজ্জ্বল নয়। সমাজে অনেকেই অপরাধ করতে পারেন, কিন্তু বিচারক, বিচারপতি এবং প্রধান বিচারপতিকে আমরা অপরাধের ঊর্ধ্বে ভাবতেই অভ্যস্ত। আমাদের সেই ধারণাটা ভেঙে পড়ল।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মামলার এই রায় এবং ২০১৮ সালে একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর (খালেদা জিয়া) বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগের ফলে অন্তত একটি ব্যাপারে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, প্রধান বিচারপতি বা প্রধানমন্ত্রীর মতো সর্বোচ্চ পদে থেকেও অপরাধ করলে কোনো একদিন এ দেশে তাদের বিচার হয়। তবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিচারের ব্যাপারে আইনের তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বিষয় আমাকে পীড়িত করছে- বহু দশক ধরে গণতান্ত্রিক ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে ফৌজদারি বিচারে একটি অলঙ্ঘনীয় বিধি হলো
যে, দোষী প্রমাণিত হলে কারাদণ্ড হতে পারে এমন আসামিকে কোনো অবস্থাতেই তার অনুপস্থিতিতে বিচার করা যাবে না। আসামিকে বিচারের প্রতিটি স্তরে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, প্রায় সোয়াশ বছর আগে ঔপনিবেশিক শাসকরা যে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রণয়ন করেছিলেন তাতে আসামির অনুপস্থিতিতে বিচারের বিধান ছিল, সেই বিধান অনুযায়ী প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অনুপস্থিতিতে বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের নিরিখে আসামির অনুপস্থিতিতে বিচারের বিধান বাতিল করতে হবে। আমার আশঙ্কা যে, পশ্চিমা বিশ্ব যখন দেখবে যে, একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে তার অনুপস্থিতিতে বিচার করে সাজা দেওয়া হয়েছে, তখন আমাদের আইন ও বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের কাছে উজ্জ্বল হবে না। যদিও একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিচার হয়েছে, তথাপি আমি নিশ্চিত যে, আমাদের বিচারক ও বিচারপতিরা সবাই অত্যন্ত সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ। ফলে ভবিষ্যতে কারও ক্ষেত্রে এ রকম ফৌজদারি বিচারের প্রয়োজন দেখা দেবে বলে আমি মনে করি না।
- বিশিষ্ট আইনজীবী
সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মামলার এই রায় এবং ২০১৮ সালে একজন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর (খালেদা জিয়া) বিচারে দোষী সাব্যস্ত হয়ে কারাভোগের ফলে অন্তত একটি ব্যাপারে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি যে, প্রধান বিচারপতি বা প্রধানমন্ত্রীর মতো সর্বোচ্চ পদে থেকেও অপরাধ করলে কোনো একদিন এ দেশে তাদের বিচার হয়। তবে প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিচারের ব্যাপারে আইনের তাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি বিষয় আমাকে পীড়িত করছে- বহু দশক ধরে গণতান্ত্রিক ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে ফৌজদারি বিচারে একটি অলঙ্ঘনীয় বিধি হলো
যে, দোষী প্রমাণিত হলে কারাদণ্ড হতে পারে এমন আসামিকে কোনো অবস্থাতেই তার অনুপস্থিতিতে বিচার করা যাবে না। আসামিকে বিচারের প্রতিটি স্তরে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে, প্রায় সোয়াশ বছর আগে ঔপনিবেশিক শাসকরা যে ফৌজদারি কার্যবিধি প্রণয়ন করেছিলেন তাতে আসামির অনুপস্থিতিতে বিচারের বিধান ছিল, সেই বিধান অনুযায়ী প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার অনুপস্থিতিতে বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।
আমাদের সংবিধানের মৌলিক অধিকারের নিরিখে আসামির অনুপস্থিতিতে বিচারের বিধান বাতিল করতে হবে। আমার আশঙ্কা যে, পশ্চিমা বিশ্ব যখন দেখবে যে, একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিকে তার অনুপস্থিতিতে বিচার করে সাজা দেওয়া হয়েছে, তখন আমাদের আইন ও বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি দুর্ভাগ্যক্রমে তাদের কাছে উজ্জ্বল হবে না। যদিও একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতির বিচার হয়েছে, তথাপি আমি নিশ্চিত যে, আমাদের বিচারক ও বিচারপতিরা সবাই অত্যন্ত সৎ ও ন্যায়নিষ্ঠ। ফলে ভবিষ্যতে কারও ক্ষেত্রে এ রকম ফৌজদারি বিচারের প্রয়োজন দেখা দেবে বলে আমি মনে করি না।
- বিশিষ্ট আইনজীবী
মন্তব্য করুন