সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার মামলার রায়ের মধ্য দিয়ে একটি বিষয় প্রমাণিত হয়েছে, কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নন। এর আগে একজন সাবেক রাষ্ট্র্রপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে বিচারের সম্মুখীন হতে দেখেছি। তারা কারাভোগও করেছিলেন। এ থেকে সকল ব্যক্তি, বিশেষ করে যারা নিজেদের প্রভাবশালী বলে মনে করেন, তাদের স্মরণে রাখা উচিত, আগামীকাল যে তিনি এমন বিচারের সম্মুখীন হবেন না বা কারাভোগ করবেন না, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। কারণ আইনের চোখে অপরাধী যে তাকে শাস্তি পেতেই হবে।
অবশ্য বিচাপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার বিচার এখানেই শেষ নয়। বিষয়টি উচ্চতর আদালতে আসবে এবং সেখানেই এর পুঙ্খানুপুঙ্খ শুনানি ও পর্যালোচনা হবে। তারপরে শাস্তি বহাল হবে নাকি খালাস হবে তা নির্ধারিত হবে। কিন্তু প্রাথমিকভাবে এটা নিশ্চিত, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। এই রায় দেশের রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, আমলাসহ সব
পেশাজীবীর প্রতি একটি সতর্কবার্তা। তাদের কাছে এ বার্তা পৌঁছে যাবে যে, আইনের হাত কত শক্তিশালী। অতীতের মতো আমি একটি জায়গায় আশান্বিত যে, এই সব বিচারকাজ সম্পাদিত হচ্ছে প্রচলিত আদালতে এবং প্রচলিত আইন অনুযায়ী। এখানে অস্বাভাবিক কিংবা অতিরিক্ত কোনো আইন বা অনুশাসন প্রণয়নের প্রয়োজন পড়েনি। এ থেকে প্রমাণিত হয়, প্রচলিত বিচার ব্যবস্থায় সদিচ্ছা থাকলে বিচার ত্বরান্বিত করা যায় এবং বিচারকার্য সম্পন্ন করা সম্ভব।
আমি আশা করব, সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করে আদালতে আত্মসমর্পণের পর আইনত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
অনেকেই মনে করতে পারেন, এটি বিচার বিভাগের জন্য হয়তো একটি কালো অধ্যায়। আমার মতে, সেটা নয়। কারণ বিচার বিভাগ সাবেক প্রধান বিচারপতির বিচার করতে পেরেছে। তারা বিন্দুমাত্র অনুকম্পা দেখাননি। এই রায়ে বরং বিচার বিভাগের স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পাবে।
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী