- বাংলাদেশ
- নানা ঘটনার পর এস কে সিনহা গেছেন কানাডায়
নানা ঘটনার পর এস কে সিনহা গেছেন কানাডায়

দুর্নীতির মামলায় দেশের আদালতে ১১ বছরের সাজা হওয়ার পর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা এখন কোথায় তা নিয়ে কৌতূহল দেখা দিয়েছে। কয়েকটি সূত্রের তথ্যমতে, তিনি এখন কানাডায় অবস্থান করছেন। সেখানে তিনি এবং তার স্ত্রী সুষমা সিনহা রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তারা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু আবেদনটি দীর্ঘদিন ঝুলে থাকায় তারা কানাডায় চলে যান।
কানাডার দ্য স্টার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি সিনহা জানিয়েছেন, কানাডার আইন অনুযায়ী কোনো দেশে একবার রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পর অন্য কোনো দেশে একই আবেদন করার সুযোগ নেই। তবে কানাডা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে তার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এস কে সিনহা কানাডায় প্রায়ই বাঙালিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মাঝেমধ্যে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেন। তাকে নিয়ে বেশকিছু অনুষ্ঠান বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার হচ্ছে।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বাংলাদেশ ছেড়ে যান। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দুই দফায় ছুটির মেয়ার বাড়ানোর পর ১০ নভেম্বর কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্র্রে যান। বছর খানেক তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি এলাকায় তার ভাই অনন্তু কুমার সিনহার নামে কেনা বাড়িতে ছিলেন। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় গিয়ে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছিলেন দেশের প্রথম অমুসলিম প্রধান বিচারপতি। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৮২ দিন আগেই পদত্যাগ করতে হয় তাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ঘটনা এটিই প্রথম। এরই মধ্যে গতকাল দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ আদালত। এটিও দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ছিলেন। তবে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর বিভিন্ন মহল থেকে আলোচনা-সমালোচনা জোরদার হয়। রায়ে প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, সংসদসহ বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করেন। পরে ওই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবটি পাসের আগে সংসদে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিসহ ১৮ জন বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে আনা সংবিধান সংশোধন বাতিলের এই রায় দিয়েছেন। 'সংসদ ও গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে' এই রায় দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান।
ষোড়শ সংশোধন বাতিলের ওই রায় 'ভ্রমাত্মক' বলে প্রতিক্রিয়া জানান আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আশা প্রকাশ করেন, এতে তারা 'কামিয়াব' হবেন।
রায় নিয়ে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের টানাপোড়েনের মধ্যে ওই বছরের ২ অক্টোবর অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। পরে ১৩ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি অসুস্থ নই। পালিয়েও যাচ্ছি না। সাময়িকভাবে যাচ্ছি। আবার ফিরে আসব। বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষার জন্য যাচ্ছি। সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।'
পরদিন এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি অসদাচরণসহ ১১টি সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ওঠায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আপিল বিভাগের অপর পাঁচজন বিচারপতি বসতে চাননি। এমন বাস্তবতায় বিচারপতি ফের আদালতে বসতে চাইলে বা নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল। তখন থেকেই প্রধান বিচারপতির দেশে ফিরে দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরই মধ্যে দেশের আদালতে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার বিচার শুরু হয়।
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় দেশের গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি। তবে ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে 'আ ব্রোকেন ড্রিম :রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি' নামে তার একটি গ্রন্থ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনীমূলক ওই গ্রন্থে সাবেক প্রধান বিচারপতি দাবি করেন, তিনি দেশ ছেড়েছেন 'হুমকির মুখে'; একই কারণে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ৬১০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের ভূমিকায় বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশের বিচারাঙ্গনে যুক্ত থাকার সুবাদে এর রূপান্তর এবং বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাগুলো দেখার সুযোগ তিনি পেয়েছেন।
দেশ ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, দেশে তাকে তার বাসভবনে আটকে থাকতে হচ্ছিল। আইনজীবী ও বিচারপতিদের তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সংবাদমাধ্যমকে বলা হচ্ছিল, তিনি অসুস্থ, ছুটির আবেদন করেছেন। তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করছিলাম, আদালতে আমার অনুপস্থিতি আর আদালতের নিয়মিত অবকাশের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা থিতিয়ে আসার সুযোগ পাবে এবং সুবিবেচনার উদয় হবে, সরকার হয়তো ওই রায়ের মর্ম বুঝতে পারবে, তারা বুঝবে যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রাষ্ট্র ও দেশের জন্যই দরকার।'
২০১৯ সালে জুলাইয়ে কানাডায় করা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে বিচারপতি সিনহা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম দি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, 'আমাকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ বিচারক হিসেবে আমি ছিলাম একজন অ্যাক্টিভিস্ট। আমি যেসব রায় দিয়েছি তাতে আমলাতন্ত্র, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, এমনকি সন্ত্রাসীরাও ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমি এখন নিজের দেশেই অবাঞ্ছিত।'
কানাডার দ্য স্টার পত্রিকায় দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি সিনহা জানিয়েছেন, কানাডার আইন অনুযায়ী কোনো দেশে একবার রাজনৈতিক আশ্রয় চাওয়ার পর অন্য কোনো দেশে একই আবেদন করার সুযোগ নেই। তবে কানাডা বিশেষ পরিস্থিতির কারণে তার বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এস কে সিনহা কানাডায় প্রায়ই বাঙালিদের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। মাঝেমধ্যে অনলাইনভিত্তিক বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেন। তাকে নিয়ে বেশকিছু অনুষ্ঠান বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে প্রচার হচ্ছে।
২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর নানা নাটকীয়তার মধ্য দিয়ে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বাংলাদেশ ছেড়ে যান। দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর দুই দফায় ছুটির মেয়ার বাড়ানোর পর ১০ নভেম্বর কানাডা যাওয়ার পথে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশনে তিনি রাষ্ট্রপতি বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। পরে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা হয়ে যুক্তরাষ্ট্র্রে যান। বছর খানেক তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি এলাকায় তার ভাই অনন্তু কুমার সিনহার নামে কেনা বাড়িতে ছিলেন। ২০১৯ সালের ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায় গিয়ে তিনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়ে আবেদন করেন।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা ছিলেন দেশের প্রথম অমুসলিম প্রধান বিচারপতি। মেয়াদ শেষ হওয়ার ৮২ দিন আগেই পদত্যাগ করতে হয় তাকে। বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো প্রধান বিচারপতির পদত্যাগের ঘটনা এটিই প্রথম। এরই মধ্যে গতকাল দুর্নীতির মামলায় তাকে কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ আদালত। এটিও দেশের বিচার বিভাগের ইতিহাসে প্রথম ঘটনা।
সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায়সহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে ছিলেন। তবে ২০১৭ সালের ১ আগস্ট সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের দেওয়া পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর বিভিন্ন মহল থেকে আলোচনা-সমালোচনা জোরদার হয়। রায়ে প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র, সংসদসহ বিভিন্ন বিষয়ে মন্তব্য করেন। পরে ওই রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করার জন্য আইনি পদক্ষেপ নিতে ওই বছর ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবটি পাসের আগে সংসদে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, এমপিসহ ১৮ জন বক্তব্য দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আদালত তার এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সংসদে আনা সংবিধান সংশোধন বাতিলের এই রায় দিয়েছেন। 'সংসদ ও গণতন্ত্রকে প্রশ্নবিদ্ধ করে' এই রায় দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সরকারপ্রধান।
ষোড়শ সংশোধন বাতিলের ওই রায় 'ভ্রমাত্মক' বলে প্রতিক্রিয়া জানান আইন কমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করবেন জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আশা প্রকাশ করেন, এতে তারা 'কামিয়াব' হবেন।
রায় নিয়ে বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের টানাপোড়েনের মধ্যে ওই বছরের ২ অক্টোবর অসুস্থতাজনিত কারণে ছুটিতে যান প্রধান বিচারপতি। পরে ১৩ অক্টোবর তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়েন। যাওয়ার আগে প্রধান বিচারপতি লিখিত বক্তব্যে সাংবাদিকদের বলেন, 'আমি অসুস্থ নই। পালিয়েও যাচ্ছি না। সাময়িকভাবে যাচ্ছি। আবার ফিরে আসব। বিচার বিভাগের মর্যাদা রক্ষার জন্য যাচ্ছি। সরকারকে ভুল বোঝানো হয়েছে।'
পরদিন এ ঘটনায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন এক বিবৃতিতে জানায়, প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে ১১টি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে তার কাছ থেকে কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। নৈতিক স্খলন, দুর্নীতি অসদাচরণসহ ১১টি সুর্নিদিষ্ট অভিযোগ ওঠায় প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আপিল বিভাগের অপর পাঁচজন বিচারপতি বসতে চাননি। এমন বাস্তবতায় বিচারপতি ফের আদালতে বসতে চাইলে বা নতুন করে দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করলে তা হবে আদালত অবমাননার শামিল। তখন থেকেই প্রধান বিচারপতির দেশে ফিরে দায়িত্ব গ্রহণ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এরই মধ্যে দেশের আদালতে বিচারপতি সিনহার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলার বিচার শুরু হয়।
বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় দেশের গণমাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো বক্তব্য বা বিবৃতি দেননি। তবে ২০১৮ সালে সেপ্টেম্বরে 'আ ব্রোকেন ড্রিম :রুল অব ল, হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি' নামে তার একটি গ্রন্থ যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত হয়। আত্মজীবনীমূলক ওই গ্রন্থে সাবেক প্রধান বিচারপতি দাবি করেন, তিনি দেশ ছেড়েছেন 'হুমকির মুখে'; একই কারণে বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। ৬১০ পৃষ্ঠার এই গ্রন্থের ভূমিকায় বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, ১৯৭৪ সাল থেকে বাংলাদেশের বিচারাঙ্গনে যুক্ত থাকার সুবাদে এর রূপান্তর এবং বাধাগ্রস্ত হওয়ার ঘটনাগুলো দেখার সুযোগ তিনি পেয়েছেন।
দেশ ছাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বিচারপতি সিনহা লিখেছেন, দেশে তাকে তার বাসভবনে আটকে থাকতে হচ্ছিল। আইনজীবী ও বিচারপতিদের তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না। সংবাদমাধ্যমকে বলা হচ্ছিল, তিনি অসুস্থ, ছুটির আবেদন করেছেন। তিনি আরও বলেন, 'আমি আশা করছিলাম, আদালতে আমার অনুপস্থিতি আর আদালতের নিয়মিত অবকাশের মধ্যে পরিস্থিতি কিছুটা থিতিয়ে আসার সুযোগ পাবে এবং সুবিবেচনার উদয় হবে, সরকার হয়তো ওই রায়ের মর্ম বুঝতে পারবে, তারা বুঝবে যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রাষ্ট্র ও দেশের জন্যই দরকার।'
২০১৯ সালে জুলাইয়ে কানাডায় করা রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদনে বিচারপতি সিনহা সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর রায় নিয়ে সরকারের সঙ্গে টানাপোড়েনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। এ বিষয়ে স্থানীয় গণমাধ্যম দি স্টারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিচারপতি এস কে সিনহা বলেন, 'আমাকে টার্গেট করা হয়েছে কারণ বিচারক হিসেবে আমি ছিলাম একজন অ্যাক্টিভিস্ট। আমি যেসব রায় দিয়েছি তাতে আমলাতন্ত্র, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ, এমনকি সন্ত্রাসীরাও ক্ষিপ্ত হয়েছে। আমি এখন নিজের দেশেই অবাঞ্ছিত।'
মন্তব্য করুন