- বাংলাদেশ
- পাহারা দিয়ে সহিংসতা ঠেকানো যায় না: সিইসি
পাহারা দিয়ে সহিংসতা ঠেকানো যায় না: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা - ফাইল ছবি
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সহিংসতা ও প্রাণহানির বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা বলেছেন, এ জাতীয় ঘটনা পাহারা দিয়ে ঠেকানো যায় না। ঘরে-ঘরে, মহল্লায়-মহল্লায় পুলিশ দিয়ে, পাহারা দিয়ে এ জাতীয় অপ্রীতিকর ঘটনা থামানো সম্ভব নয়।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় ইউপি ভোটের চতুর্থ ধাপের তফসিল ঘোষণা করা হয়। আগামী ২৩ ডিসেম্বর এ ধাপে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৮৪০টি ইউপিতে ভোট হবে। এসব ইউনিয়নে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই ৩০ নভেম্বর থেকে ২ ডিসেম্বর ও প্রত্যাহারের শেষ সময় ৬ ডিসেম্বর।
এদিকে, আগামীকাল বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে দ্বিতীয় ধাপে ৮৩৬টি ইউপিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া তৃতীয় ধাপে দেশের এক হাজার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ২৮ নভেম্বর। প্রথম ধাপে ৩৬৪টি ইউপির নির্বাচন ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
বৈঠক শেষে সিইসি আরও বলেন, সহিংসতা ঠেকানোর একমাত্র উপায় নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহনশীলতা। সংঘাতের দায়-দায়িত্ব প্রশাসন, পুলিশ বা নির্বাচন কমিশনকে দিলে হবে না। তারাই যে দায়ী, এটা বলার সুযোগ নেই। সংঘাতে প্রাণহানির দায় কার- এমন প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, 'দায়-দায়িত্ব কাকে দেব, আমার মনে হয়, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন তাদের যদি সহনশীল ভূমিকা থাকে; তাহলে এত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দরকার হয় না। আমাদেরও তৎপরতার দরকার হয় না।'
ইসি কি দায় এড়াচ্ছে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'দায় এড়ানোর বিষয় না। ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সামনে হয় না।'
নিজের বক্তব্যের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে সিইসি বলেন, 'নরসিংদীতে রাত ৩টার সময় গোলগুলি হয়েছে, এতে মানুষ মারা গেছে। রাত ৩টায় কে কোথায় যাবে?'
সিইসি বলেন, প্রচারের সময় হঠাৎ করে অঘটন ঘটে যায়, এগুলোর জন্য কেউ প্রস্তুত থাকে না। এই ঘটনাগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অজান্তে, তাদের অনুপস্থিতিতে ঘটে। এগুলো ফৌজদারি অপরাধ। এ জন্য ফৌজদারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসন এসব দেখছে।
তিনি বলেন, অনেকগুলো ঘটনা ঘটে এলাকাভিত্তিক, দলীয় কোন্দল, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পুরোনো শত্রুতার জের থেকে। স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, সেটা ঠিকই। কিন্তু তার কারণে সহিংস ঘটনা কাম্য নয়। অনেকগুলো জীবন চলে গেছে, এটা কারও কাম্য হতে পারে না। যারা নির্বাচন পরিচালনা করেন, প্রতিদ্বন্দ্বী, সমর্থক এবং ভোটার- তাদের মধ্যে সহনশীলতা থাকতে হবে।
সিইসি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনাররা পরিদর্শন করেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রতিটি কেন্দ্রে প্রয়োজনীয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ইসি তদন্ত করে নির্বাচন স্থগিত করেছে। এ ধরনের তদন্ত প্রতিবেদন আসতে থাকবে, তার ভিত্তিতে ইসি ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, নির্বাচনী সহিংসতার সুযোগ নিয়ে গুপ্তহত্যাও হয়েছে। ইসি যে ফোর্স মোতায়েন করে তা দিয়ে এটা থামানো বেশ কষ্টকর। তারপরও যথাযথ শাস্তির ব্যবস্থা করতে ইসি পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিনিয়ত তারা পর্যবেক্ষণও করছে।
অনেক জায়গায় স্থানীয় এমপিরা প্রভাব বিস্তার করছেন, প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন- এসব ক্ষেত্রে ইসি কি কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে- এমন প্রশ্নে সিইসি বলেন, তারা অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিতে পারেন না। ঘটনা তদন্ত করতে হয়। তদন্ত করে সত্য-মিথ্যা যাচাই করতে হয়, তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া যায় না।
মন্তব্য করুন