দেশে ই-কমার্স খাতের অর্থ পাচারের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের পদক্ষেপসহ কয়েকটি বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবেদন না দেওয়ায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে সরকারের পদক্ষেপ জানাতেও পুনরায় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

এর আগে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগের বিষয়ে বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের পদক্ষেপসহ তিনটি বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স আদায়ে এনবিআরের পলিসি কি এবং ই-কমার্স খাতের স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের করা ১৬ সদস্যের কারিগরি কমিটির কার্যপরিধি কী তাও জানতে বলা হয়েছিল। মঙ্গলবার ওই প্রতিবেদন সংশ্লিষ্টদের দাখিল করার জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু তারা প্রতিবেদন দেননি।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী  মো. আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ শিশির মনির ও হুমায়ন কবির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশ্যে হাইকোর্ট  বলেন, ‘নোটিশ জারির পরেও তারা রেস্পন্স করবে না? বিষয়টি আমরা কিন্তু সিরিয়াসলি নেব'।

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট  বলেন,' আপনি অ্যাটর্নি জেনারেলের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি তাকে জানান। এসব কিন্তু আমরা টলারেট করব না।’

এরপর আদালত আগামী ২৩ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়ে ওইদিন পরবর্তী আদেশের দিন ধার্য করেন।

প্রসঙ্গত, গত ২০ সেপ্টেম্বর ই-কমার্সের গ্রাহকদের স্বার্থ ও অধিকার রক্ষায় জাতীয় ডিজিটাল কমার্স পলিসির ম্যান্ডেট অনুসারে একটি স্বাধীন ই-কমার্স নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠার নির্দেশনা চেয়ে রিট দায়ের করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আনোয়ারুল ইসলাম এ রিট দায়ের করেন।

পরে গত ২২ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশন, ইভ্যালি ও ই-ওরেঞ্জের দুজন গ্রাহকের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির একটি রিট দায়ের করেন।

পরদিন  ২৩ সেপ্টেম্বর ই-অরেঞ্জে আটকে থাকা কোটি কোটি টাকা উদ্ধারে ৩৩ জন গ্রাহক ডিজিটাল বা ই–প্রতিষ্ঠানের গ্রাহকদের অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষায় সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব তৈরির জন্য অর্থনীতিবিদ, তথ্য-প্রযুক্তিবিদ, ব্যবসায়ী ও অন্য অংশীজনদের নিয়ে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে আরও একটি রিট দায়ের করা হয়।

 ওই তিনটি রিটের শুনানি নিয়ে ২৮ সেপ্টেম্বর আদেশ দেন হাইকোর্ট।