- বাংলাদেশ
- পারিবারিক আদালতে 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' চলবে না
হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চের রায়
পারিবারিক আদালতে 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' চলবে না

ফাইল ছবি
পারিবারিক আদালতে মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' (অন্যকে মামলা পরিচালনার ক্ষমতা অর্পণ) করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ে আরও বলা হয়েছে, পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করার ক্ষেত্রে দেওয়ানি কার্যবিধির ১১৫ ধারা প্রয়োগ বাধা হবে না। যদিও পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশে দেওয়ানি কার্যবিধির ধারা ১০ ও ১১ ছাড়া অন্য ধারার প্রয়োগকে বাতিল করা আছে। এ ক্ষেত্রে ১১৫ ধারা প্রয়োগে বাধা নেই।
বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ মঙ্গলবার এ-সংক্রান্ত রুল খারিজ করে এ রায় ঘোষণা করেন।
আইনজ্ঞরা বলছেন, হাইকোর্টের এ রায় একটি যুগান্তকারী রায়। এ নির্দেশনা এখন অধস্তন আদালতের ক্ষেত্রে প্রয়োগ হবে। যদি না এর বিরুদ্ধে আপিল করা হয় বা আপিলে ভিন্নতর কোনো রায় আসে।
আদালতে বাদীপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সাইদুল আলম খান। বিবাদীপক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মামলার বাদী এক নারী তার আমেরিকাপ্রবাসী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও সন্তানের ভরণপোষণের দাবিতে মামলা করেন। ওই মামলায় বিবাদী তার পক্ষে মামলা লড়তে এক আত্মীয়কে 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' করেন। কিন্তু 'ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫' অনুযায়ী পারিবারিক মামলায় 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' নেওয়ার বিধান নেই বলে সিলেটের পারিবারিক আদালত এই মামলার বিবাদীর 'পাওয়ার অব অ্যাটর্নি' গ্রহণ না করে আদেশ দেন। পরে ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবাদী আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত আপিলটি খারিজ করেন। তবে বিচারিক আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একপর্যায়ে হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করে আমেরিকাপ্রবাসী ওই বিবাদী। পরবর্তীকালে হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে ওই রিভিশন আবেদনের শুনানি শুরু হয়।
শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানি কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোনো ধারা প্রযোজ্য হবে কিনা, সে বিষয়ে হাইকোর্টের নজরে আসে ভিন্ন ভিন্ন রায়। তখন হাইকোর্ট রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করতে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে নথি পাঠিয়ে দেন। পরে প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করে দেন।
পরে ওই বৃহত্তর বেঞ্চে মামলার শুনানিতে চারজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস
কিউরি (মতামত প্রদানকারী আদালতের বন্ধু) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। তারা হলেন-
জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, এ এফ হাসান আরিফ, কামালুল আলম ও প্রবীর
নিয়োগী। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার হাইকোর্টের ওই বৃহত্তর বেঞ্চ শুনানি শেষে
রায় দেন।
মন্তব্য করুন