বিএনপি থেকে নির্বাচিত সাংসদ হারুনুর রশীদ বলেছেন, সংসদে বিরোধী দলের অবস্থান 'কাগজে কলমে', বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। বিরোধী দলের সদস্যরাই সেটা বলছেন।

মঙ্গলবার সংসদে 'বিরোধী দলের নেতা এবং উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিল-২০২১' পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এই মন্তব্য করেন এমপি হারুন। অন্যদিকে সংসদে প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য এ আলোচনায় অংশ নিয়ে বলেন, বিরোধী দলকে শক্তিশালী করতে হবে। তারা বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের পদটিকে সরকারি দলের হুইপের পদের মর্যাদা দেওয়ার দাবি করেন।

এ সময় হারুন জানান, সংসদ কার্যকর করতে হলে সংকট কোথায় তা দেখতে হবে। গত ৯ অক্টোবর তার এলাকায় পৌরসভা নির্বাচন হওয়ার তপশিল ছিল। কিন্তু অদৃশ্য কারণে ভোট স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকারের সদস্য নির্বাচনও সঠিকভাবে করা হচ্ছে না। তিনি প্রশ্ন তোলেন, সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শপথ নেওয়ার পর কেউ শপথ ভঙ্গ করলে দায়িত্বে থাকার অধিকার থাকে কিনা, পুলিশের মহাপরিদর্শক বোট ক্লাবের সভাপতি থাকতে পারেন কিনা। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ার পরও তা পাইনি।

পরে আরেকটি বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্য প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের রাষ্ট্রধর্ম প্রসঙ্গে দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেন এমপি হারুন। মোবাইলে তথ্যপ্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য বাজিয়ে সংসদে শুনিয়ে বলেন, শপথ ভঙ্গ করলে তাদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? সাংবিধানিক দায়িত্বে থাকা অবস্থায় কখনোই এটি হতে পারে না। এটা রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কেউ সংবিধানের মৌলিক অনুচ্ছেদগুলো পরিবর্তন করার উদ্যোগ নিলে তাকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। পরিকল্পনামন্ত্রীও বলেছেন তিনি বাকশালে বিশ্বাস করেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম একটি বিষফোড়া।

বিরোধী দলের নেতা এবং উপনেতা (পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার) বিলের আলোচনায় জাতীয় পার্টির সাংসদ ফখরুল ইমাম বলেন, শক্তিশালী বিরোধী দল চাইলে বিরোধী দলকে 'এমপাওয়ার্ড' করতে হবে। তিনি বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার, সরকারি দলের হুইপদের মতো বিরোধী দলের হুইপদের মর্যাদা দেওয়া ও বেশি সংখ্যক সংসদীয় কমিটিতে সভাপতি করার দাবি জানান।

জাতীয় পার্টির আরেক সাংসদ রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ পদটি কাগজে কলমে। এই পদের কোনো প্রটোকল নেই। গণফোরামের সাংসদ মোকাব্বির খান বলেন, বিরোধী দল যথাযথ ভূমিকা রাখার সুযোগ পায় না। সবাই যাতে সমান সুযোগ পান সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা ও উপনেতার পারিতোষিক ও বিশেষাধিকার সংক্রান্ত সামরিক আমলের আইন বাতিল করে নতুন আইন করতে ওই বিলটি আনা হয়। পরে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।

এ বিলে বলা হয়েছে, বিরোধী দলের নেতা সরকারের একজন মন্ত্রীর জন্য ধার্য বেতন, ভাতা, অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন। আর বিরোধীদলীয় উপনেতা একজন প্রতিমন্ত্রীর সমান বেতন, ভাতা ও অন্যান্য বিশেষাধিকার পাবেন।