কন্যা সন্তানের জন্মনিবন্ধন সনদে পিতৃপরিচয় বদলের ঘটনায় এক মা ও সৎ বাবাকে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড করেছেন আদালত। 

ঢাকার মহানগর হাকিম তামান্না ফারাহ সোমবার আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। দণ্ডিতরা হলেন-চকবাজার হোসনী দালানের বাসিন্দা অনামিকা ওমর ও তার দ্বিতীয় স্বামী বকশিবাজার লেনের বাসিন্দা আরশাদ হোসেন।

পরে তারা দণ্ড হিসেবে ১০ হাজার টাকা আদালতে জমা দেন বলে মঙ্গলবার আদালতের বিশেষ পিপি আজাদ রহমান জানান।

নিজ সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদে বাবার নাম জালিয়াতির অভিযোগে অনামিকার প্রথম স্বামী একই এলাকার মাকসুদুর রহমান ২০১৭ সালে অনামিকা ও তার দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে জন্ম ও মৃত্যুর নিবন্ধন আইনে আদালতে মামলা করেন। 

আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তের পর গত বছর চকবাজার মডেল থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন দুজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৩ জানুয়ারি মাকসুদুর রহমানের সঙ্গে অনামিকা ওমরের বিয়ে হয়। ২০১০ সালের ১৬ এপ্রিল তাদের একটি কন্যা সন্তান হয়। এর মধ্যেই আরশাদের সঙ্গে ‘পরকীয়া প্রেমে’ জড়িয়ে পড়েন অনামিকা। পরে মাকসুদুরকে তালাক দিয়ে আরশাদকে বিয়ে করেন অনামিকা। তখন কন্যার নাম, জন্ম তারিখ ও পিতার নাম পরিবর্তন করে তারা (অনামিকা ও আরশাদ) নতুন জন্ম নিবন্ধন করেন।

এদিকে মাকসুদুর নিয়মিত তার সন্তানের ভরণপোষণ দিয়ে আসছিলেন। তারপরও আসামিরা মাকসুদকে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিতেন না। তিনি বাধ্য হয়ে আদালতে গেলে মেয়ের সঙ্গে তাকে মাসে একবার দেখা করতে দেওয়ার আদেশ আসে। তবু আসামিরা তাকে বাধা দিতেন।

২০১৬ সালের ১৩ নভেম্বর মাকসুদুর আদালতের আদেশ নিয়ে পুরান ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডে সেন্টার পয়েন্ট স্কুলে তার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে যান। কিন্তু তিনি যে নামে মেয়ের সাথে দেখা করতে যান, সেই নামে কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে নেই বলে তাকে চলে যেতে বলে স্কুল কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে অনামিকা ও আরশাদ স্কুলের গেইটে মাকসুদুরকে ভয়ভীতি দেখান ও হুমকি দেন। আরশাদ মাকসুদুরকে কিলঘুষিও মারেন।

সন্তানের পিতৃপরিচয়ের জন্য বাধ্য হয়ে অনামিকা ও তার দ্বিতীয় স্বামীর বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন মাকসুদুর।