- বাংলাদেশ
- এক হাজার ব্যক্তি নিলেন সিসিএবি’র প্রশিক্ষণ
এক হাজার ব্যক্তি নিলেন সিসিএবি’র প্রশিক্ষণ

বাংলাদেশের সাংবাদিকদের জন্য সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (সিসিএবি) যৌথভাবে ফেসবুক, বিগস্প্রিং, সিআইআর-এর সঙ্গে মোবাইলভিত্তিক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে এক হাজার জন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। গত আগস্টে শুরু হওয়া প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটি শেষ হয় মঙ্গলবার।
‘ফেসবুক ফান্ডামেন্টালস্ ফর নিউজ’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির অংশীদার হিসেবে ছিল কলম্বোভিত্তিক ‘সেন্টার ফর ইনভেস্টিগেটিভ রিপোর্টিং’ (সিআইআর)। মোবাইল ভিত্তিক প্রশিক্ষণটি করানো হবে ‘বিগস্প্রিং’ অ্যাপের মাধ্যমে। সংবাদকর্মী, ফ্রিল্যান্সার, কনটেন্ট রাইটার, গবেষক, সাংবাদিকতা শিক্ষার্থীসহ চার হাজারের বেশি মানুষ রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। এর থেকে যাচাই-বাছাই শেষ ১৭৯১ জন মনোনীত হন। এর মধ্যে কোর্সটি সম্পন্ন করেছেন ১০২৫ জন।
নাগরিক টিভির প্রধান প্রতিবেদন শাহানাজ শারমীন বলে, ‘ অনলাইনে আরও কী করে ভালোভাবে সংবাদ সংগ্রহ ও পরিবেশন করা যায় এবং নিজেরা নিরাপদ থাকা যায় এই কোর্সের মাধ্যমে তাই আমরা শিখলাম। হ্যাকিং ও হ্যারাসমেন্ট থেকে বাঁচা সাংবাদিকদের জন্য খুবই জরুরি এবং বিশেষ করে নারী সাংবাদিকদের জন্য এটা আরও বিশেষ প্রয়োজন।’
সময় টিভির স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ওমর ফারুক বলেন, ‘ফেসবুক ফান্ডামেন্টালস্ ফর নিউজ কোর্সের মাধ্যমে নতুন কিছু জানতে পেরেছি। একইসঙ্গে কোর্সটি সাংবাদিকদের জন্য খুবই উপকারী।’
তিনি বলেন, ‘আমরা তো টেলিভিশন, রেডিও কিংবা পত্রিকায় কাজ করি। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য যে আলাদা কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয় যার মাধ্যমে সহজে মানুষের কাছে পৌঁছানো যায় সে বিষয়গুলো সহজে বোঝা গেছে এ কোর্সের মাধ্যমে। কোর্সটা খুব যে কঠিন তা নয়, যে কেউ মনোযোগ দিয়ে করলেই খুব সহজেই করা যায়। এটা খুবই উপকারী ও দরকারি একটা কোর্স।’
মোবাইল ভিত্তিক এ প্রশিক্ষণ ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষায় দেওয়া হবে। অনলাইন নিরাপত্তা, ফেসবুকে স্টোরিটেলিং এবং সংবাদ সংগ্রহের বিষয়ে ধারণা দেওয়াই ছিল এ কোর্সের লক্ষ্য।
সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশের (সিসিএবি) নির্বাহী পরিচালক জেইন মাহমুদের মতে, এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা দেশের আনাচে কানাচে সাংবাদিক ভাই বোনেদের কাছে পৌঁছাতে পেরেছি। যেটা একটা বড় অর্জন। সামাজিক মাধ্যমে স্টোরি টেলিং ও নিরাপত্তা দুটোই এই মুহূর্তে জরুরি বিষয়।
কোর্সটিতে দেশের জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন ও টেলিভিশনের সাংবাদিকরা অংশ নিয়েছিলেন। তাদেরই একজন দৈনিক সমকাল পত্রিকার যুগ্ম বার্তা সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রঞ্জু। তিনি বলেন, ‘আমরা অনেক কিছুই জানি বা পারি। তবে সেটার ধারাবাহিকতা নেই। এ কোর্সেটি আমাদেরকে ধারবাহিকভাবে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের সেই বিষয়গুলো জানতে সহায়তা করেছে।’
কোর্স সম্পর্কে আরটিভির রিপোর্টার আতিকা রহমান বলেন, ‘আমরা যারা ফেসবুক ব্যবহার করি তারা অনেক কিছুই জানি না। এ ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে জেনেছি। বিশেষ করে নিরাপত্তার বিষয়ে। আর বিপদে পড়লে কী পদক্ষেপ নিতে হবে সেটাও জেনেছি। সেইসঙ্গে একজন সাংবাদিক হিসেবে কী কী সাবধানতা অবলম্বন ও কোন কোন বিষয়ে সচেতন থাকা উচিত তা জেনেছি। সাধারণ মানুষকে তথ্য দেওয়ার জন্য কী কী মাথায় রাখা উচিত সেটাও জেনেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেহেতু কোর্স করার নির্দিষ্ট টাইম মানে এখন ক্লাস এখনই করতে হবে এমন বাধ্য বাধকতা ছিল না সেহেতু সুবিধাজনক সময়ে কোর্সটি করেছি। এটা একজন সাংবাদিকের জন্য খুবই হেল্পফুল হয়েছে।’
হাদি চাকদার নামে প্রশিক্ষণার্থী বলে, ‘কোর্সটি এক কথায় দারুণ ছিল। সোশ্যাল মিডিয়ায় পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে, বিশেষ করে ফেসবুকের হেনস্থা এড়াতে এবং নিরাপদ থাকাতে ফেসবুক ফান্ডামেন্টালস্ ফর নিউজ অবদান রাখতে সক্ষম।’
প্রসঙ্গত, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সেন্টার ফর কমিউনিকেশন অ্যাকশন বাংলাদেশ (https://www.c-cab.org) গণমাধ্যম ও কৌশলগত যোগাযোগ টুলস (সরঞ্জাম) ব্যবহার করে সময়োপযোগী, নির্ভুল এবং কার্যকরী তথ্যের প্রবাহ নিশ্চিত করে। সাংবাদিক ও ডিজিটাল যোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের নেতৃত্বে সিসিএবি সংবাদের ইকোসিস্টেমের সরবরাহ ও চাহিদা উভয় দিক নিশ্চিত করতে কাজ করে। তরুণদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মোবাইল সাংবাদিকতায় সক্ষমতা বাড়ানো থেকে শুরু করে সংঘাত-সংবেদনশীল সাংবাদিকতা এবং তথ্যভিত্তিক সাংবাদিকতা সব বিষয়ে জানানোর কাজ করছে।
মন্তব্য করুন