ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রবাসী সেজে প্রবাসীর সর্বস্বান্ত করে আমীর

প্রবাসী সেজে প্রবাসীর সর্বস্বান্ত করে আমীর

প্রতীকী ছবি

আব্দুল হামিদ

প্রকাশ: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৩:১১

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এলাকায় সক্রিয় একাধিক অজ্ঞান পার্টি। ঢাকার বাসাবো কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আমীর হোসেন (৫০) একটি চক্রের সদস্য। তারা সকাল-সন্ধ্যায় বিমানবন্দর এলাকায় কাঁধে ব্যাগ ও হাতে লাগেজ নিয়ে কাজে নেমে পড়ে। এই সময়ে মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায়ই প্রবাসীরা দেশে আসেন। যাদের কাছে কম জিনিসপত্র থাকে তাদের টার্গেট করে এ চক্রটি। আমীর প্রবাসী সেজে এক যুগে অনেক প্রবাসীকে সর্বস্বান্ত করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত সে সাতবার গ্রেপ্তারও হয়েছে। 

তদন্ত সূত্রে জানা যায়, আমীর বিমানবন্দরের দুই নম্বর গেটের পাশে একটি ফাস্টফুডের দোকান দিয়ে ব্যবসা করত। একপর্যায়ে কয়েকটি চক্রের সঙ্গে তার সখ্য গড়ে ওঠে। প্রাথমিক পর্যায়ে একটি চক্রের সঙ্গে এক মাসেই পাঁচটি কাজ সফলভাবে সম্পন্ন করে সে। এতে ১৫ হাজার টাকা পায় আমীর। এর পর থেকে কখনও একা আবার কখনও একজন সঙ্গী নিয়ে সে প্রতারণা করে আসছে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার ধরা পড়ার আগে ১৫ জুলাই বিমানবন্দরেই এক প্রবাসীকে অজ্ঞান করতে গিয়ে ধরা খায়। চার মাস পর কারাগার থেকে বেরিয়ে একই কাজে ফেরে সে। 

গত মঙ্গলবার এক সৌদি প্রবাসী চাঁদপুর যাবার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়ে সর্বস্ব খোয়ান। এ ঘটনায় আমীরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের একটি টিম।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিমান বন্দরের দুই নম্বর গেটের সামনে শিকারের অপেক্ষায় ছিল আমীর। এক প্রবাসীর কাছে কম জিনিসপত্র দেখে এগিয়ে যায় সে। ‘আমিও সৌদি থেকে আসছি, বাড়ি চাঁদপুর পরিবারের কেউ আসেনি, চলেন এক সঙ্গে যাই’ তাঁর সঙ্গে এমন অভিনয় করে আমীর। সেখান থেকে তারা দু’জন সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালে আসেন। বাস কাউন্টারে আমীর কৌশলে প্রবাসীকে ঘুমের বিস্কুট খাওয়ায়। এরপর বাসেই ঘুমিয়ে পড়েন প্রবাসী। তাঁর জিনিসপত্র  নিয়ে বাস থেকে দাউদকান্দিতে নেমে যায় আমীর। মালপত্র নিয়ে সে ঢাকায় আসার পথে পুলিশের হাতে ধরা খায়। 

জানা যায়, বরিশাল গৌরনদীর ডিমেরপাড় এলাকায় বাড়ি আমীর হোসেনের। তার বড় ছেলে সৌদি আরব থাকে। ছোট ছেলে এবার এইচএসসি পাস করেছে। একমাত্র মেয়ে ঢাকায় একটি কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। তার প্রতারণার নেশায় সুখের পরিবারে অশান্তির ছায়া সরে না। তার পুত্রবধূও একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আমীর পুরো পরিবার নিয়ে থাকে বাসাবো কালিবাড়ি এলাকায়।

ডিবি মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার এরশাদুর রহমান সমকালকে বলেন, বিমানবন্দর এলাকায় সক্রিয় অজ্ঞান পার্টির সদস্যদের আইনের আওতায় আনতে পুলিশ প্রতিনিয়ত সতর্ক থাকে। তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। 

whatsapp follow image

আরও পড়ুন

×