- বাংলাদেশ
- ‘২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ’
‘২০৩০ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ’

জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: ফোকাস বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলা করে গত অর্থবছরে দেশের জিডিপি ৫.৪৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, জিডিপির প্রবৃদ্ধির হারে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল এশিয়ার মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২১-এ মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৫৫৪ মার্কিন ডলারে। দ্য ইকোনমিস্ট ২০২০ সালের প্রতিবেদনে বলেছে, ৬৬টি উদীয়মান সবল অর্থনীতির দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান নবম। এছাড়া ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০৩০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ।
শুক্রবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। করোনা সংকট সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতির গতি সচল রাখতে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্ব অর্থনীতিতে এক গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। অনেক দেশের অর্থনীতিতে ধস নেমেছে। বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতির মুখে পড়েছে। নেমে এসেছিল স্থবিরতা। তবে দেশবাসীর সহায়তায় সরকার তা অনেকটা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন নীতি-সহায়তা এবং বিভিন্ন উদার-নৈতিক আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ প্রদানের মাধ্যমে সরকার অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সরকার ২৮টি প্যাকেজের মাধ্যমে এক লাখ ৮৭ হাজার ৬৭৯ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে অক্টোবর পর্যন্ত এক লাখ ছয় হাজার ৫২২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে, যা মোট বরাদ্দের ৫৬.৭৬ শতাংশ। এতে প্রায় ছয় কোটি ৭৪ লাখ মানুষ উপকৃত হয়েছে এবং প্রতিষ্ঠান উপকৃত হয়েছে প্রায় এক লাখ ১৮ হাজার।
টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের বর্তমান মেয়াদের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও চতুর্থবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে এ ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার বাংলাদেশসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও রেডিও স্টেশন প্রধানমন্ত্রীর এই ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার করে।
বৈশ্বিক মহামারি করোভাইরাসের প্রকোপ থেকে সুরক্ষায় সবাইকে সতর্ক থাকার পাশাপাশি টিকা নেওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে এক গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে বিগত ২০২০ ও ২০২১ সাল অতিক্রম করতে হয়েছে। সেই সংকট এখনও কাটেনি। এরমধ্যেই আবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নতুন করে নতুন নতুন ধরন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। আমাদের এখনই সাবধান হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। যারা টিকা নেননি, তাদের দ্রুত টিকা নিতে অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দেশের জনগণের করোনার টিকা প্রাপ্তি নিশ্চিতে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন পুরোদমে কভিড-১৯ টিকাকরণের কাজ চলছে। চলতি মাস থেকে গণটিকা দেওয়ার মাধ্যমে প্রতিমাসে এক কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনার কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১২ কোটি ৯৫ লাখ ৮০ হাজার ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে প্রথম ডোজ পেয়েছেন প্রায় সাত কোটি ৫৮ লাখ মানুষ আর দুই ডোজ পেয়েছেন পাঁচ কোটি ৩৫ লাখ ৮২ হাজার। গত মাস থেকে বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু হয়েছে। এদিকে বর্তমানে আমাদের হাতে সাড়ে নয় কোটিরও বেশি ডোজ টিকা মজুদ আছে।
২৭ মিনিট ৫৭ সেকেন্ডের ভাষণের শুরুতে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে তার সরকার গঠনের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। সেইসঙ্গে তিনি ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়ক বেয়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। এটা অনেকেরই সহ্য হবে না বা হচ্ছে না। দেশ-বিদেশে বসে বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি তাই নানা ষড়যন্ত্র করছে এই অগ্রযাত্রাকে রুখে দেওয়ার জন্য। মিথ্যা-বানোয়াট-কাল্পনিক তথ্য দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। বিদেশে আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের ভুল বোঝানোর চেষ্টা করছে।
মন্তব্য করুন