- বাংলাদেশ
- অনশনরত ছেলের পাশে বাবা, বললেন-এতোগুলো ছেলে আত্মাহুতি দিবে?
অনশনরত ছেলের পাশে বাবা, বললেন-এতোগুলো ছেলে আত্মাহুতি দিবে?

অনশনরত ছেলেকে দেখতে হাসপাতালে বাবা হাফিজুর রহমান। ছবি: সমকাল
বাবা-মাকে না জানিয়েই অনশনে বসেছেন গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ ইকবাল। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার থেকে অনশন করছেন তিনি। গণমাধ্যমে ছবি দেখে তা জানতে পারেন বাবা। তাই ছেলের খোঁজ-খবর নিতে সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন বাবা হাফিজুর রহমান। এসে দেখেন ছেলে হাসপাতালে। শরীরে স্যালাইন পুশ করা।
সন্তানকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। পাশে বসে শুনছেন ছেলের কথা। কত সময় ধরে কিছু খায়নি আসিফ। তবে ছেলেকে কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করেননি তিনি।
হাফিজুর রহমান সমকালকে বলেন, 'জেনেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন হচ্ছে, সে অনশন করছে এটা জানায়নি। পরে ছবি দেখে জানতে পারি। এখন ছেলের তেমন কোনো খবর পাচ্ছিলাম না৷ এসে দেখি ছেলে বেশ দুর্বল হয়ে গেছে।'
এরপরে বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, 'ঘটনা ঘটার পর থেকে বিষয়টা এখানে গড়ালো। শিক্ষকরা তাদের অভিভাবক, অভিভাবকরা কি ভূমিকা পালন করলো? তাদের দায়িত্ব তারা সঠিকভাবে পালন করেছে? আমার তো মনে হয় না। পরিস্থিতিটা এই পর্যন্ত চলে গেলে, অনশনের প্রায় ছয়দিন পার হচ্ছে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা দায়িত্বরত শিক্ষক আছেন তাদের ভূমিকা দেখছি না।'
তিনি আরও বলেন, 'সারা জাতি এই শিক্ষার্থীদের দিকে তাকিয়ে আছে। কখন তাদের অনশনের অবসান হবে, কিন্তু অবসানের বিষয়ে কারো তরফ থেকে কোনো উদ্যোগ দেখছি না। এটার একটা আশু সমাধান কামনা করছি। এতোগুলো ছেলে আত্মাহুতি দিবে, এটা তো কাম্য নয়।'
ছেলেকে খাওয়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, 'আমি আমার সন্তানকে খাওয়াতে যাইনি। আমি আবেগ দিয়ে হয়তো আমার ছেলেকে খাওয়াতে পারবো। কিন্তু এখানে তো তার মতো আরও অনেক সন্তান আছে।'
এদিকে গত বুধবার দুপুর দুইটা ৫০ মিনিট থেকে অনশনরত থাকায় সকল শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। কেউ হাসপাতালে যাচ্ছেন আবার একটু স্বাভাবিক বোধ করলে আবারও ক্যাম্পাসে ফিরে আসছেন। অনশনরত শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে আনা-নেওয়া করার অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেনে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ যেন ভারী হয়ে উঠেছে।
মন্তব্য করুন