- বাংলাদেশ
- চালকদের আন্দোলন: বৈঠকে সমাধান না এলে ট্রেন বন্ধের হুঁশিয়ারি
চালকদের আন্দোলন: বৈঠকে সমাধান না এলে ট্রেন বন্ধের হুঁশিয়ারি

প্রতীকী ছবি
পুরনো নিয়মে ভাতা ও পেনশন সুবিধা বহাল রাখার দাবিতে আন্দোলনে নামা রেলওয়ের চালক তথা রানিং স্টাফরা আগামীকাল রোববার বিকেলে মন্ত্রণালয়ে রেল সচিবের ডাকা আলোচনায় যোগ দেবেন।
শনিবার আন্দোলনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হলে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী রোববার মধ্যরাত থেকে কর্মবিরতিতে যাবেন রানিং স্টাফরা। অর্থাৎ রোববার রাত থেকে বন্ধ হবে ট্রেন চলাচল।
তবে রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ট্রেন বন্ধ রাখার মতো চূড়ান্ত কর্মসূচিতে যাবেন না রানিং স্টাফরা। দাবি পূরণে নতুন সময়সীমা বেধে আল্টিমেটাম দেবেন আন্দোলনকারীরা। বৈঠকের বিষয়ে রেল সচিব ড. হুমায়ুন কবিরের বক্তব্য জানা যায়নি।
পুরনো নিয়মে ভাতা ও পেনশনের দাবিতে, গত মঙ্গলবার থেকেই আট ঘণ্টার বেশি কাজ করছেন না রানিং স্টাফরা। চালক সঙ্কটে ১১টি লোকাল ও ১৬টি মালবাহীসহ মেটি ২৭টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে পাচঁদিনে। বহু ট্রেন সময়সূচি মেনে চলতে পারছে না। তবে আন্তঃনগর ট্রেন সিডিউল অনুযায়ী চলছে। আট ঘণ্টার বেশি কাজ করে হলেও আন্তঃনগর ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছে দিচ্ছেন চালকরা।
ট্রেনের চালক (লোকো মাস্টার), সহকারী চালক, গার্ড ও টিকিট পরিদর্শকদের (টিটি) রানিং স্টাফ বলা হয়। রেলের সংস্থাপন কোড অনুযায়ী, রানিং স্টাফরা দিনে আট ঘণ্টার বেশি দায়িত্ব পালন করলে বা ১০০ মাইলের বেশি ট্রেন চালালে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ টাকা রানিং ভাতা হিসেবে পাবেন। ভাতার ৭৫ শতাংশ টাকা যোগ হতো পেনশনে।
জনবল সঙ্কটের কারণে চালক, গার্ড ও টিটিদের দৈনিক কর্মঘণ্টা ১২ ঘণ্টা। গত ৩ নভেম্বর অর্থ মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপনে জানায়, মাইলেজ ভাতা মূল বেতনের অংশ হিসেবে গণ্য হবে না। তা পেনশনেও যোগ হবে না। ভাতার পরিমাণ মাসিক মূল বেতনের বেশি হতে পারবে না। এর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে রানিং স্টাফরা। রেল মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে চিঠি চালাচালির পর গত ২৪ জানুয়ারি অর্থ মন্ত্রণালয় রানিং ভাতা পুনর্বহাল করে। কিন্তু ভাতা যোগ করে পেনশন হিসাব করতে রাজি হয়নি।
ভাতার দাবি পূরণ হলেও পুরনোর নিয়মে পেনশনের দাবিতে আন্দোলন করছেন রানিং স্টাফ। রেলওয়ে রানিং স্টাফ ও কর্মচারী শ্রমিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান সমকালকে বলেছেন, রেলসচিবের ডাকা সাড়া দিয়ে তারা আলোচনায় যোগ দিতে সম্মত হয়েছেন। বৈঠকে পেনশনের বিষয়ে সুরাহা না হলে রোববার রাত ১২টা থেকে কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য হবেন রানিং স্টাফরা। এতে ট্রেন চলাচল বন্ধ হবে।
সমিতির সভাপতির রফিক চৌধুরী বলেছেন, তারা বাড়তি সুবিধা চান না। ১৮৬২ সাল থেকে যে সুবিধা পেয়ে আসছেন, তা পুনর্বহাল চান।
রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার সাহাদাত আলী সমকালকে বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতার বিষয়টি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপর নির্ভর করে। রেলের রানিং স্টাফদের সদস্যা অর্থ মন্ত্রণালয়ে জানানোর পর, প্রজ্ঞাপন জারি করে রানিং ভাতা পুনর্বহাল করা হয়েছে। তাদের আরেক দাবি নিয়ে রেল মন্ত্রণালয় চেষ্টা করছে।’
রানিং স্টাফদের কর্মসূচিতে ট্রেনের সিডিউল বিপর্যয়ের তথ্য সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন সরদার সাহাদাত আলী। তিনি বলেছেন, কোনো ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়নি। চালক সঙ্কটে কিছু ট্রেন বিলম্বে ছেড়েছে। লোকাল ও মালবাহী ট্রেনের যাত্রাবাতিল নতুন কিছু নয়। এর সঙ্গে কারও কর্মসূচির সম্পর্ক নেই।
তবে রেল সূত্রে জানা গেছে, রানিং স্টাফ সঙ্কটে ঢাকা ও চট্টগ্রামে চলাচলকারি ১০টি ট্রেনসহ বিভিল্ন্ন রুটের ১৬টি মালবাহী ওয়াগন ও তেলবাহী ট্যাংকারের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। ঈশ্বরদী লোকোশেড থেকে মালবাহী ৯টি ও চট্টগ্রাম থেকে কন্টেইনারবাহী ৪টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়।
মন্তব্য করুন