- বাংলাদেশ
- উপকূলের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
সুন্দরবন দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা
উপকূলের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বক্তারা
সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় বক্তারা দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ঝুঁকিতে থাকা উপকূলের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবন সুরক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলেছেন, দুর্যোগে ও দুষণে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে পড়েছে। এই হুমকি মোকাবিলায় দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
সোমবার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা লিডার্স, ফেইথ ইন অ্যাকশন, স্কাস ও সচেতন সংস্থা এবং নাগরিক সংগঠন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন একাত্তর টিভির যুগ্ম প্রধান বার্তা সম্পাদক পলাশ আহসান। সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সভায় বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার, বাংলদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল ও যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস, নৌ সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, আন্তর্জাতিক সংস্থা কেআইএ প্রতিনিধি মাটিল দ্য টিনা বৈদ্য, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, স্বদেশ-এর নির্বাহী পরিচালক মধাব চন্দ্র দত্ত, স্কাসের চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল, ফেইথ ইন অ্যাকশনের নির্বাহী পরিচালক নৃপেন বৈদ্য, সাংবাদিক নিজামুল হক বিপুল, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন, সিপিডির ইকবাল হোসেন বিপ্লব, ওয়াটার কিপার বাংলাদেশের মো. নূর আলম অধ্যক্ষ জি এম আমিনুল ইসলাম, সাংবাদিক আব্দুল আজিজ, শিক্ষার্থী রিয়াদ হোসেন প্রমুখ।
সংসদ সদস্য সৈয়দা রুবিনা আক্তার বলেন, ‘কাউকে পিছনে ফেলে নয়, সবাইকে সঙ্গে নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে’- প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাস্তবায়ন হলেই উপকূলের উন্নয়ন নিশ্চিত হবে। সেই লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা অনুযায়ী সংকট মোকাবেলায় সরকার ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করবো সরকারিভাবে সুন্দরবন দিবস পালনেরে উদ্যেঠস নেওয়া হবে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও পার্শ্ববর্তী জনগণকে নিয়ে সুন্দরবন রক্ষায় স্বতন্ত্র বাহিনী গঠনের প্রস্তাব করেন তিনি।
বাপা সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল বলেন, নদী মাতৃক বাংলাদেশের মা হচ্ছে নদী। আর উপকূলে মায়ের দায়িত্ব পালন করছে সুন্দরবন। কিন্তু রাষ্ট্র ও সরকারের নীতি-নির্ধারকরা এই মায়ের গুরুত্ব অনুধাবন করছেন না। যে কারণে মারাত্মক ঝুঁকির মুখে সুন্দরবন ও সেখানকার জীববৈচিত্র্য। তাই সরকারকেই সুন্দরবনের গুরুত্ব বুঝতে হবে। তাহলেই রক্ষা পাবে সুন্দরবন।
সভায় বক্তারা সরকারিভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি জানিয়ে বলেন, সুন্দরবন বাঁচলে উপকূল বাঁচবে। উপকূল না বাঁচলে সারাদেশে বিপর্যয় দেখা দিবে। তাই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে দূর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করতে হবে। উপকূলের জীবন-জীবিকা রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের কারণে উপকূলীয় অঞ্চলে জনজীবনে সংকট প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এরপর করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের আঘাত সংকট আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আগে ঝড় ও জলোচ্ছাসে এই সংকট দেখা দিলেও এখন স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ফলে জনগণ ঘরবাড়ি ছেড়ে শহরে আশ্রয় নিচ্ছে। তাই সুন্দরবন সুরক্ষার পাশাপাশি উপকূলের জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সুনির্দ্ধিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
মন্তব্য করুন