- বাংলাদেশ
- নির্বাচন কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি চায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ
নির্বাচন কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি চায় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ

দেশের ১২ শতাংশ সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ভোটারের জন্য সার্চ (অনুসন্ধান) কমিটির মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনে একজন প্রতিনিধি চায় বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ।
নেতারা বলেছেন, ধর্মীয় জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে যোগ্য একজন প্রতিনিধি যেন নির্বাচন কমিশনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সার্চ কমিটি ও রাষ্ট্রপতির কাছে তারা এই আবেদন জানিয়েছেন।
গতকাল সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল মানিক মিয়া হলে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।
লিখিত বক্তব্যে রানা দাশগুপ্ত বলেন, বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে যে সার্চ কমিটি গঠিত হয়েছে, তার ওপর আমরা পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাখছি। আমরা মনে করি, আগামী নির্বাচন যেন নিরপেক্ষ ও পক্ষপাতহীন হয়, সেজন্য এই কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনে সর্বজনমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে ১০ সদস্যবিশিষ্ট তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে দেবেন। তবে দেশে ১২ শতাংশ ভোটার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ভুক্ত। এর আগে গঠিত নির্বাচন কমিশনগুলোতে এ সম্প্রদায়ের কোনো প্রতিনিধিত্ব না থাকায় আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।
নির্বাচনের আগে পরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগের সময়কালের পরিস্থিতি নির্বাচন কমিশনের বিবেচনায় আসেনি। আবার অন্তর্বর্তীকালীন পর্যায়েও নির্বাচনের তারিখ-সময়সূচি নির্ধারণে তারা সংখ্যালঘুদের ধর্মীয় অনুভূতিকে বিবেচনায় আনতে ব্যর্থ। যে কারণে অনভিপ্রেত পরিস্থিতিরও মুখোমুখি হতে হয়েছে গোটা দেশ ও জাতিকে, যা কারও কাম্য নয়। আমরা এ অবস্থার অবসান চাই। এসব কারণে নির্বাচন কমিশনে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানান তিনি।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি এ বিষয়ে অনুসন্ধান কমিটির কাছে ঐক্য পরিষদের পক্ষে একটি পত্র দেয়ার কথাও জানান রানা দাশুগুপ্ত।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরের রসরাজ দাসের ফেসবুক, মোবাইল ফোন বা মেমোরি কার্ডে ধর্ম অবমাননার কোনো অস্তিত্ব পিবিআই ও সিআইডির ফরেনসিক বিভাগের অনুসন্ধানে না পাওয়া সত্বেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রধান আসামী করে তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়ার জন্য দায়ী তদন্তকারী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণের জন্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে দাবি জানানো হয়।
এ প্রসঙ্গে রানা দাশগুপ্ত বলেন, একদিকে নিরীহ জনগণের বিরুদ্ধে আইনের অপপ্রয়োগ চলছে। অন্যদিকে পুলিশী কর্তৃপক্ষের অযোগ্যতা, অপদার্থতা দৃশ্যমান হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মহলবিশেষ আইনের শাসন নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে। যা সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের জঘন্য অপপ্রয়াস।
সংবাদ সম্মেলনে দেশজুড়ে ক্রমবর্ধমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।
এ সময় সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে সরকারের জিরো টলারেন্সের ঘোষণাকে ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সহিংসতাকারীদের প্রতিবাদে-প্রতিরোধে সর্বস্তরের দলীয় নেতা ও কর্মীদের যাবতীয় ব্যর্থতা স্বীকার করে নেওয়াকে স্বাগত জানানো হয়। নেতারা বলেন, ভবিষ্যতে শুধু কথাই নয় কাজেও সরকার ও সরকারি দল এ ব্যাপারে দৃঢ় ভূমিকা পালনে আন্তরিকতার সাথে এগিয়ে আসবে।
এ সময় মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের ভিত্তিতে প্রণীত বাহাত্তরের সংবিধানকে ভিত্তি ধরে ১৯৯০ সালের তিন জোট ঘোষিত রূপরেখার আলোকে বিদ্যমান বাস্তবতায় স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার জন্য দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহের কাছে আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঐক্য পরিষদের সভাপতিত্রয় ঊষাতন তালুকদার, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, নির্মল রোজারিও প্রমুখ।
মন্তব্য করুন