আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব তুলে ধরে এর নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার কোস্টগার্ডের ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেন সরকারপ্রধান।  প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণাঞ্চলে আরেকটি শিপইয়ার্ড নির্মাণের বিষয়টি চিন্তা করছে সরকার। যে পরিকল্পনা ও কাঠামো তৈরি হচ্ছে তার ভিত্তিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম দেশে উন্নয়ন অব্যাহত রাখা সক্ষম হবে। 

 কোস্টগার্ডের জন্য জাহাজ, হোভারক্রাফট, দ্রুতগামী বোটসহ অত্যাধুনিক নৌযানের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুনীল অর্থনীতি ও গভীর সমুদ্রের নিরাপত্তার জন্য এই বাহিনীর জনবল ও জাহাজ বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে। গভীর সমুদ্র নির্ভর অর্থনীতিকে গতিশীল ও নিরাপদ রাখা এবং সুনীল অর্থনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রকল্প ও ব্যক্তিদের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে এই বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।  উপকূলীয় অঞ্চলে চারা রোপণের জন্য কোস্ট গার্ডকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের দেশকে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করতে সহায়তা ও পরিবেশ রক্ষায় সহায়ক হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সমুদ্রসীমা রক্ষা এবং নদীমাতৃক দেশকেও নিরাপদ করার জন্য আমাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একান্তভাবে দরকার। সেই দায়িত্ব কোস্টগার্ড যথাযথভাবে পালন করে যাচ্ছে। কারণ আমাদের এই অঞ্চল (বঙ্গোপসাগর) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলের সব নিরাপত্তা রক্ষা করা প্রয়োজন এবং সেই দিকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। 

তিনি বলেন, ‌প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা জলবায়ুর অভিঘাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষা করে, এই ব-দ্বীপে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন যুগ যুগ ধরে সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে এবং তাদের জীবনমান উন্নত হতে পারে; সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা ডেল্টা প্ল্যান ২০৪১ প্রণয়ন করে বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। শুধু আজকের জন্য আমরা কাজ করছি সেটা না। ভবিষ্যতের বাংলাদেশ কেমন হবে সেটা সামনে রেখেই পরিকল্পনা কাঠামো তৈরি করে যাচ্ছি। যার ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম, তারা এ দেশের উন্নয়নের কার্যধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে। 

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল চার কোস্টগার্ড সদস্যকে তাদের সাহসিকতা ও বিশেষ কৃতিত্বের জন্য পদক তুলে দেন। পরে, কোস্ট গার্ডের কর্মকান্ড নিয়ে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও অনুষ্ঠানে প্রদর্শিত হয়। প্রধানমন্ত্রী কোস্টগার্ড সদস্যদের মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করেন এবং তাঁকে রাষ্ট্রীয় অভিবাদন জানানো হয়।