- বাংলাদেশ
- থানায় ঢুকে ব্যবসায়ী বললেন ‘বাবাকে খুন করেছি, আমাকে শাস্তি দিন’
থানায় ঢুকে ব্যবসায়ী বললেন ‘বাবাকে খুন করেছি, আমাকে শাস্তি দিন’

প্রতীকী ছবি
‘আমি আমার বাবাকে খুন করেছি। আমাকে শাস্তি দিন।’ রাজধানীর ভাটারা থানায় ঢুকে হঠাৎ করেই এমন স্বীকারোক্তি দেন মো. শেখ নাসির নামে এক ব্যবসায়ী। এতে চমকে ওঠেন ওইসময় থানায় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যরা।
বুধবার দুপুরে এমন ঘটনার পর তারা দ্রুত পুরো বিষয়টি জানার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে জানা যায়, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বাসায় ছেলের হাতে খুন হয়েছেন ঠিকাদার মো. শেখ সেলিম (৭০)। পরে থানায় গিয়ে বাবাকে হত্যার দায় স্বীকার করেন তার ছেলে।
ভাটারা থানার ওসি সাজেদুর রহমান সমকালকে বলেন, দুপুর আনুমানিক আড়াইটার দিকে ডিউটি অফিসারের সামনে উপস্থিত হন নাসির। তখন তাকে দেখাচ্ছিল উদভ্রান্তের মতো।
শুরুতে তাকে আর দশজন সেবা প্রত্যাশীর মতোই একজন বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। তবে তার বক্তব্য শুনে সবাই নড়েচড়ে বসে। তাকে বসিয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হয়। শেষে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের ১৮৫ নম্বর বাসার দোতলায় যায় পুলিশ। সেখানে পরিবারের সঙ্গে থাকতেন নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহকারী ঠিকাদার সেলিম। তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়।
পুলিশ ও নিহতের স্বজনের সূত্রে জানা যায়, নাসিরের মা অনেকদিন ধরে ডায়াবেটিস ও হাঁপানিসহ নানারকম অসুখে ভুগছেন। তার যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছিল না। এ নিয়েই বুধবার সকালে বাবা-ছেলের বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এর একপর্যায়ে নাসির ক্ষিপ্ত হয়ে একটি হাতুড়ি দিয়ে তার বাবার মাথায় আঘাত করেন। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। রাগের মাথায় বাবাকে খুন করার পর নাসির অনুশোচনায় ভুগতে থাকেন। একপর্যায়ে তিনি আত্মসমর্পণ করতে থানায় যান। তিনি তার বাবার সঙ্গেই পাথর সরবরাহের ব্যবসা করেন।
পুলিশ জানায়, বাবাকে হত্যার অভিযোগে ৩০ বছর বয়সী নাসিরকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে। বৃহস্পতিবার তাকে আদালতে হাজির করবে পুলিশ।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেছেন, সচ্ছল পরিবার হওয়া সত্বেও তার মায়ের চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে অনীহা দেখাচ্ছিলেন সেলিম। এই বিষয়টি তাকে ক্ষুব্ধ করেছে। তাই তিনি এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। তবে বাবাকে হত্যার কোনো পরিকল্পনা তার ছিল না। প্রকৃতপক্ষে কী কারণে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কেও নিশ্চিত হওয়া যাবে।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত সেলিমের গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে।
মন্তব্য করুন