ক্ষমতাসীন সরকারের অনুগত না হয়ে নির্বাচন কমিশনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল-টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ইসির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারের অনুগত না থেকে রাষ্ট্রের জন্য কাজ করবেন আপনারা। প্রয়োজনে ইস্তফা দেবেন। সব অংশীজন, ভোটার, আমরা আপনাদের পক্ষে আছি।’

মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন ভবনে বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নির্বাচনী সংলাপে অংশ নেন তিনি। বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।

তিনি জানান, বৈঠকে নির্বাচনকালীন সরকারের চরিত্রের ধরণ, কেমন নির্বাচন হবে- এ নিয়ে বিদ্যমান আইন বিধিতে কি ধরনের পরিবর্তন আনা যায় সেসব বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন।

সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার তাগিদ দিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সমঝোতায় পৌঁছানোর জন্যে আইনে কোনো পরিবর্তন করা যায় কিনা তা চিহ্নিত করুন আপনারা।’

সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী, সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দীন আহমেদ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফরাসউদ্দিন আহমেদ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রুবায়েত ফেরদৌস, আইন বিভাগের অধ্যাপক হাফিজুর রহমান কার্জন, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ ও সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মণ্ডল।

নির্বাচন কমিশনের ধারাবাহিক সংলাপের দ্বিতীয় দফায় ৩৭জন বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানান হয়। তবে সংলাপে অংশ নিয়েছেন মাত্র ১৯ জন। এর আগে ১৩ মার্চ অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপে ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও মাত্র ১৩ জন অংশ নিয়েছেন। 

মঙ্গলবারের সংলাপে অংশ নিয়ে বিশিষ্টজনরা বলেছেন, সংলাপে অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের তেমন আগ্রহ না থাকলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের টেলিফোন পেয়ে তারা অংশ নিয়েছেন।

টানা দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অনুষ্ঠিত এই সংলাপে অংশ নিয়ে বিশিষ্টজনরা নির্বাচন ব্যবস্থার প্রতি আস্থা ফিরিয়ে আনা, ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন-ইভিএমে ব্যবহার না করা, নির্বাচনের সময় মাঠ প্রশাসনকে সরকারের প্রভাবমুক্ত রাখা, নির্বাচনী মাঠে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ এবং সরকারের দিক থেকে প্রতিবন্ধকতা আসলে নির্বাচন কমিশনকে পদত্যাগের পরামর্শ দিয়েছেন।