কুয়াকাটা সৈকতে পাওয়া গেছে বিরল প্রজাতির দু’টি মৃত কচ্ছপ। 

মঙ্গলবার দুপুরে কুয়াকাটা সৈকতের পশ্চিমে গঙ্গামতি ফরেস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় এগুলো দেখতে পায় পর্যটকরা। 

দুই থেকে তিনদিন আগে মারা যাওয়া জলপাই রংয়ের  কচ্ছপ দু’টির শরীরে পঁচন ধরেছে। 

বালুচরে আটকা পড়া একটি কচ্ছপের ওজন ২৫ কেজি এবং অপরটির ওজন ২০ কেজি হতে পারে বলে ধারণা করেছেন বনবিভাগের গঙ্গামতি বিটের কর্মকর্তারা।

গঙ্গামতি বিটের কর্মকর্তারা জানান, কচ্ছপ দু’টি বালুচাপা দেওয়া হয়েছে। 

সৈকতের জীববৈচিত্র্য রক্ষার কাজে নিয়েজিত ব্লুগার্ডের সদস্য হানিফ ও মনির হাওলাদার সমকালকে বলেন, সামুদ্রিক কচ্ছপ  সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ডিম দিতে বালিয়াড়িতে আসে। শ্বাস-প্রশ্বাস  নিতে পানির উপরিভাগে উঠলে জেলেদের জালে আটকা পড়ে। এ প্রজাতির কচ্ছপগুলো সমুদ্রের তলদেশে অবস্থান করে। 

ওই টিমের অপর সদস্য ইমরান জানিয়েছেন, ডিম পেড়ে সাগরে ফিরে যাওয়ার সময়ও বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর আক্রমণ কিংবা সৈকতে চলাচল করা বাহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যেতে পারে কচ্ছপগুলো। এর আগে সোমবার বিকেলে গঙ্গামতি সৈকতে ইরাবতী প্রজাতির একটি মৃত ডলফিন দেখা গিয়েছিল। ওই ডলফিনটির পেট কাটা ছিল। 

ইকোফিস-২ প্রকল্পের সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি সমকালকে বলেন, মৃত সামুদ্রিক কচ্ছপ দু’টি অলিভ রিডলে প্রজাতির। সামুদ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এ প্রজাতির কচ্ছপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলজ প্রাণি। সমুদ্রের ক্ষতিকর জেলি ফিশ এ কচ্ছপ খেয়ে ফেলে। যা মাছের বংশ বিস্তারে সহায়ক ভূমিকা রাখে। এ প্রজাতির কচ্ছপ বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী আইনে সংরক্ষিত। 

বর্তমানে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ বা আইইউসিএনের লাল তালিকায় অলিভ রিডলেকে ‘সংকটাপন্ন’, গ্রিণ টার্টলকে ‘বিপন্ন’ এবং হকসবিল টার্টলকে ‘মহাবিপন্ন’ প্রজাতির কাতারে রাখা হয়েছে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক সমকালকে বলেন, কুয়াকাটা সৈকতে বিপন্ন হচ্ছে জলজ বিভিন্ন প্রাণী। সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষায় জেলেদের সচেতনতার পাশাপাশি সুবিধাভোগীদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় সচতন হতে হবে।