মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের কর্মবিরতির পরিপ্রেক্ষিতে বেতন গ্রেড অপরিবর্তিত রেখে শুধু পদবি পরিবর্তনে চূড়ান্ত সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। একইসঙ্গে ৬টি শর্তও দিয়েছে। 

সোমবার অর্থ বিভাগের সম্মতিপত্র জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি ও প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে শিগগির চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

অর্থ বিভাগের সম্মতি অনুযায়ী ১৩ গ্রেডের কর্মচারীদের নাম হবে উপ প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৪ গ্রেড হবে সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা, ১৫ গ্রেড হবে উপ সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা। আর ১৬ গ্রেডের অফিস সহকারীদের কোনো পরিবর্তন আসছে না। 

এতে কর্মচারীদের আগের মতোই তিনভাগে বিভক্ত করে শুধু কর্মকর্তা যুক্ত করা হবে, বাড়বে না বেতন গ্রেড। ফলে কর্মচারীদের পদের নাম বদলে সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেলেও ক্ষোভ থেকে যাচ্ছে। 

এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ নানাভাবে কর্মচারীরা তাদের দুঃখ কষ্টের কথা তুলে ধরেছেন। এতে সন্তুষ্ট নন কর্মচারীরা। 

গত বছরের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অনুমোদন অনুযায়ী পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন জারি না হলে ফের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন তারা। এজন্য আগামী ১ এপ্রিল থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মহাসমাবেশ করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষাণা করবেন নেতারা। মহাসমাবেশ সফল করতে বাকাসসের সহসভাপতি মকবুলুর রহমান খানকে আহ্বায়ক করে ২২ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের কর্মচারী সমিতির (বাবিককাকস) মহাসচিব কাজী মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অনুমোদন অনুযায়ী পদোন্নতির প্রজ্ঞাপন চায়।

জানা যায়, গত বছরের ২৪ জানুয়ারি মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের পদোন্নতি দেওয়ার ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ১৩, ১৪ ও ১৫ গ্রেডের কর্মচারীদের পদের নাম সহকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তা করে সবাইকে ১৩ গ্রেডে পদোন্নতির সম্মতি দিয়েছিলেন। এরপর এক বছরের বেশি সময় পার হলেও ঝুলছে ওই পদোন্নতি প্রক্রিয়া। অর্থ মন্ত্রণালয়ে আটকে যায় মাঠ প্রশাসনের সংস্কার। 

এর ফলে গত ১ মার্চ থেকে টানা কর্মবিরতি শুরু করেন বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কার্যালয়ের কর্মচারীরা। 

এরপর গত ১২ মার্চ পদবি বদল ও বেতন গ্রেড উন্নীতকরণের দাবিতে মাঠ প্রশাসনের কর্মচারীদের চলমান কর্মবিরতি ৩১ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এসব দিবস যথাযথভাবে পালনের জন্য এ কর্মসূচি স্থগিত করেছেন কর্মচারী নেতারা।

অর্থ বিভাগের শর্ত 

এখন প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদিত প্রস্তাব বাতিল করে নতুন শর্ত দিয়ে পদনাম পরিবর্তনের সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে শর্ত রয়েছে পদনাম পরিবর্তিত হলেও বেতন গ্রেড পরিবর্তন করা যাবে না। 

বিদ্যমান নিয়োগ বিধিতে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়ন করতে হবে। প্রশাসনিক উন্নয়ন সংক্রান্ত সচিব কমিটি ও প্রশাসনিক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। 

পরিবর্তিত পদগুলোর পদসংখ্যা বিদ্যমান পদগুলোর মোট পদসংখ্যার সমান হবে অর্থাৎ মোট পদসংখ্যার কোনো হ্রাসবৃদ্ধি ঘটবে না। সব আনুষ্ঠানিকতার পর পদবী পরিবর্তনের ৪ কপি জিও জারি করে পৃষ্ঠাঙ্কনের জন্য অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।