চলতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান-জেআরপিতে ৮৪১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বরাদ্দ ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

তিনি জানিয়েছেন, ভাসানচরে অবস্থানরত জন্য পৃথকভাবে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ রাখা হয়েছে। 

মঙ্গলবার বিকেলে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য জাতিসংঘ ও দাতা সংস্থাদের প্লাটফরম জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) বৈঠকে শাহরিয়ার আলম এসব কথা বলেন। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ভার্চুয়ালি এই অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।

জেনেভায় জাতিসংঘ শরনার্থী সংস্থার প্রধান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার প্রধান. ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূতসহ নয়টি দেশের রাষ্ট্রদূত এই আলোচনায় অংশ নেন।

এ বছর পঞ্চম জেআরপি বৈঠক অনুষ্ঠিত হল। এ বৈঠকে মূলত রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার বিষয়টিই চূড়ান্ত করা হয়। 

শাহরিয়ার আলম বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে মিয়ানমার এখনো রাজনৈতিক সদিচ্ছা দেখাতে পারেনি। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ বসবাসের অনুকূল পরিবেশ তৈরি না হলে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে রাজী হওয়ার সম্ভাবনা প্রত্যাশা করা যায় না। 

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, ভাসান চরের জন্য পৃথকভাবে আরও ১০০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ ধরা হয়েছে। এ বরাদ্দ প্রস্তাব রোহিঙ্গাদের জন্য এবং তাদের আশ্রয় দিতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য। 

তিনি জানান, গত বছর চতুর্থ জেআরপি বৈঠকে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তার জন্য ৯৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা চাওয়া হয়েছিল। তবে গত বছর শেষ পর্যন্ত সহায়তা আসে ৬৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। প্রতি বছরই মূল বরাদ্দ প্রস্তাবের ৭০ শতাংশ পাওয়া যায়। গত বছর ৭২ শতাংশ পাওয়া গেছে। 

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিশ্ব পরিস্থিতি যাই হোক, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সহায়তার জন্য এখন পর্যন্ত অর্থের পরিমাণ কমেনি। আশা করা যায়, এ ধারা অব্যাহত থাকবে এবং এ নিয়ে সমস্যা হবে না।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানান, বৈঠকটি মানবিক সহায়তার জন্য হলেও সেখানে রেহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তাকে এটাও জানানো হয়েছে যে রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কার্যক্রমে জাতিসংঘের মধ্যস্থতার বিষয়ে চুক্তি নবায়ন করেছে মিয়ানমারের বর্তমান সরকার। এটি একটি ভালো খবর। ভাসানচরে মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে জাতিসংঘ এবং অন্যান্য সংস্থাগুলো খুব ভাল সাড়া দিচ্ছে এবং রোহিঙ্গাদের জন্য জীবিকা নির্বাহ করতে পারে এমন বেশ কিছু প্রশিক্ষণও দিচ্ছে। 

তিনি জানান, কক্সবাজার থেকে আরও ৪ হাজার রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে পাঠানো হচ্ছে।

এর আগে বৈঠকে অংশ নিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী একটি লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন। 

ওই বক্তব্যে তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক বন্ধু ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি মিয়ানমার সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাখাইনে বসবাসের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি না হলে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা সেখানে স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনে আগ্রহী হবে, এটা আশা করা যায় না।