অনলাইনে দামি মোটরসাইকেল বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখলেই কৌশলী হয়ে উঠতেন নরসিংদীর সামিউল ইসলাম। বাইকটি তার পছন্দ হয়েছে এবং কিনতে চেয়ে টেস্ট ড্রাইভের (যাচাই করতে চালানো) কথা বলে গিয়ে আর ফিরতেন না তিনি। উল্টো নিজের কণ্ঠ নকল করে বাইক ফেরত দেওয়ার কথা বলে হাতিয়ে নিতেন টাকা।

অভিনব এই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছেন কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ই-ফ্রড টিমের সদস্যরা। গত শনিবার তাকে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হলেও কর্মকর্তারা সোমবার এই তথ্য জানান।

সিটিটিসির ই-ফ্রড টিমের সহকারী কমিশনার সুরঞ্জনা সাহা সমকালকে জানান, একজন ভিকটিম তার সাড়ে ৫ লাখ টাকা দামের (ইয়ামাহা আর ১৫ এম মডেল) বাইক বিক্রির জন্য ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেন। বাইকটি কেনার জন্য সামিউল তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে সেটি দেখার জন্য তারা রাজধানীর পল্লবী এলাকায় মিলিত হয় এবং বাইক টেস্ট ড্রাইভ দেওয়ার কথা বলে বাইক নিয়ে পালিয়ে যায় সামিউল।

সাইবার পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বাইক নেওয়ার পরও প্রতারক সামিউল মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমে নিজের কণ্ঠ পরিবর্তন করে বাইকটি তার কাছে রয়েছে বলে জানায়। সেটি ফেরত দিতে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। ভিকটিম তার কথায় বিশ্বাস না করলে অ্যাপসভিত্তিক যোগাযোগ মাধ্যম ইমোতে বাইকের ছবি ও ভিডিও পাঠায়। এতে বিশ্বাস করে ভিকটিম মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তাকে ৭ হাজার টাকা দেয়। এরপরও সেটি ফেরত না পেয়ে পল্লবী থানায় মামলা করেন বাইকের মালিক।

ই-ফ্রড টিমের অপর এক কর্মকর্তা জানান, ই-ফ্রড টিম ওই মামলার তদন্তের দায়িত্ব পায়। এরপরই তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামি সামিউলের অবস্থান শনাক্ত করে তাকে হাজারীবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার কাছ থেকেই সেই বাইকটিও উদ্ধার করা হয়। প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ফেক ফেসবুক আইডিসহ কণ্ঠ পরিবর্তনের ভিভাইসটি জব্দ করা হয়।

অভিনব এই প্রতারক এভাবে আর কারো বাইক হাতিয়ে নিয়েছে কি-না বা এই ধরনের প্রতারণা করেছে কি-না, তা জানতে তাকে অদালত থেকে একদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে বলে জানান ওই কর্মকর্তা।