রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শের-ই-বাংলা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থীকে হল থেকে বের করে দিয়েছেন ছাত্রলীগের এক নেতা। সোমবার রাত ১২টার দিকে সিট ছেড়ে দেওয়ার আলটিমেটাম দেওয়ার পর মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে হল থেকে ওই ছাত্রের জিনিসপত্র বের করে দেওয়া হয়।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতার নাম মোস্তাফিজুর রহমান ওরফে রাতুল। তিনি শের-ই-বাংলা হল ছাত্রলীগের সভাপতি।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম আকিব জাভেদ। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী। তিনি শের-ই-বাংলা হলের ১২৯ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। ছাত্রলীগ নেতা মোস্তাফিজুর ওই কক্ষে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের কমল কুমার পাল নামের এক শিক্ষার্থীকে তুলে দিয়েছেন। ওই শিক্ষার্থীর আবাসিকতা নেই।

আকিব বলেন, গতকাল রাত ১২টার দিকে হলের ছাত্রলীগ সভাপতি মোস্তাফিজুর তার কক্ষে আসেন। তাকে বলেন, ‘তোমাকে কে তুলেছে এই বেডে। তোমার সাহস তো কম নয়, তুমি এই বেডে উঠেছ! এই হলে তোমাকে যেন আর না দেখি। কাল সকাল ৯টার মধ্যে এখান থেকে বের হয়ে যাবি।’ এই বলে চলে যান।

পরে সকাল ৯টায় ও সাত থেকে আটজন এসে আমার তারা বইপত্রসহ সব জিনিস বাইরে ফেলে দেন।

আকিব বলেন, ‘আমার আর যাওয়ার জায়গা নেই। কোথায় যাব? হলে এলে ছাত্রলীগ মারতে পারে।’ তবুও তিনি হলেই থাকবেন। প্রাধ্যক্ষও ফোন ধরেননি বলে জানান আকিব।

আকিবের আবাসিকতা থাকার পরও কেন বের করে দেওয়া হলো, এ দায়িত্ব ছাত্রলীগের কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আকিবের আবাসিকতা আছে কি না, এটা আমি জানি না। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা আমাদের কাছে আসেন, হল প্রাধ্যক্ষের কাছে যান। আমরাও হলে তুলে দিই।’

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আকিব জাভেদের বাড়ি কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গোস্বামী দুর্গাপুর গ্রামে। তার বাবার নাম মো. মোক্তার আলী। পাঁচ মাস আগে তিনি মারা যান। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। অন্য ভাইরা কৃষিকাজ করেন। তাদের আলাদা সংসার। ছোট ভাই একটি মাদ্রাসায় পড়ে। লেখাপড়া চলে আত্মীয়স্বজনদের টাকা দিয়ে।

এ বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ মো. হবিবুর রহমান বলেন, আজ সকালে তিনি ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর কাছে সবকিছু শুনেছেন। ওই শিক্ষার্থী হলের এবং ওই কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী। আকিব ওই কক্ষে আজ থেকেই থাকবেন। এ বিষয়ে তারা ব্যবস্থা নিচ্ছেন।