- বাংলাদেশ
- হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় দুপুরে, আসামিরা আদালতে
হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় দুপুরে, আসামিরা আদালতে

হুমায়ুন আজাদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায়ের জন্য বুধবার দিন ধার্য রয়েছে। আসামিদের নেওয়া হয়েছে আদালতে।
রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন শেষে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুন গত ২৭ মার্চ এ দিন ঠিক করেছিলেন। ঘটনার ১৮ বছর পর রায় হচ্ছে বুধবার।
আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছে রাষ্ট্রপক্ষ। তারা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন। অন্যদিকে আসামিপক্ষ বলছেন, আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি, তারা খালাস পাবেন।
মামলার বাদী হুমায়ুন আজাদের ভাই মঞ্জুর কবির বলেন, ‘বড় ভাই হত্যা মামলার রায় হচ্ছে ১৮ বছর পর। কিন্তু এ রায় নিয়ে আমাদের তেমন একটা আগ্রহ নেই। কারণ এ ঘটনা যার কারণে ঘটেছে সেই মূল হোতা জামায়াত নেতা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদীকে মামলায় আসামি করা হয়নি। বড়দা হামলার পর মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছিলেন। তখন তিনি সাঈদীকে হামলার জন্য দায়ী করেছিলেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভিকটিম তো নিজে বলেই গেছেন সাঈদী এ ঘটনার সাথে জড়িত। কিন্তু তাকে তো আসামি করা হয়নি। মামলায় দুই জন আসামি জেলে আছে আর দুইজন পলাতক। আদৌ তারা ঘটনার সাথে জড়িত ছিলো কি না জানি না। তদন্ত সংস্থা জানে। এ কারণে রায় নিয়ে আমাদের তেমন কোনো আগ্রহ নেই।’
২০০৪ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে বইমেলা থেকে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় জখম হন বহুমাত্রিক লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ। হামলার পর তিনি ২২ দিন ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) এবং ৪৮ দিন ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর ২০০৪ সালের আগষ্ট গবেষণার জন্য জার্মানিতে যান এই লেখক। ওই বছরের ১২ আগষ্ট মিউনিখে নিজের ফ্ল্যাট থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়।
হুমায়ুন আজাদের ওপর হামলার পরের দিন তার ছোট ভাই মঞ্জুর কবির রমনা থানায় একটি হত্যাচেষ্টার মামলা করেন। পরে আদালতের আদেশে অধিকতর তদন্তের পর সেটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়।
সিআইডির পরিদর্শক লুৎফর রহমান মামলাটি তদন্তের পর ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। একই বছরের ১০ সেপ্টেম্বর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। নিষিদ্ধ ঘোষিত জেএমবির সদস্যরা হুমায়ুন আজাদের ওপর ওই হামলা চালিয়েছিল বলে পরবর্তীতে পুলিশের তদন্তে উঠে আসে।
আসামিরা হলো- জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন, হাফিজ মাহমুদ ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু। আসামিদের মধ্যে মিনহাজ এবং আনোয়ার কারাগারে আছে। সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ পলাতক। হাফিজ মাহমুদ কথিত বন্দুকযুদ্ধে যান। এ মামলায় মিনহাজ ও আনোয়ার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ৫৮ সাক্ষীর মধ্যে তদন্ত কর্মকর্তাসহ ৪১ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে।
মন্তব্য করুন